
স্টাফ রিপোর্টার, মির্জাপুর ॥
আসন্ন উপজেলা পরিষদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে টানা চারবারের সাংসদ প্রয়াত একাব্বর হোসেনের বাসায় নেতাকমীদের যাতায়াত বেড়েছে। একাব্বর হোসেনের ছেলে ব্যারিস্টার তাহরীম হোসেন সীমান্ত উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে আনারস প্রতীকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এ জন্য উপজেলা, পৌরসভা, ইউনিয়ন ও ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা ছাড়াও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা আসছেন। নির্বাচনে সীমান্তকে বিজয়ী করতে তারা নানা ধরনের পরামর্শও দিচ্ছেন।
২০২১ সালের ১৬ নভেম্বর একাব্বর হোসেনের মৃত্যুর পর তার বাসায় নেতাকর্মীদের যাতায়াত কমে যায়। ২০২২ সালের ১৬ জানুয়ারি উপনির্বাচনে খান আহমেদ শুভ এনপি নির্বাচিত হন। ২০২৪ সালের ৭ জানুয়ারি খান আহমেদ শুভ পুণরায় এমপি নির্বাচিত হন।
আসন্ন উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে একাব্বর হোসেনের ছেলে সীমান্ত প্রার্থী হওয়ায় আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা যাতায়াত এবং যোগাযোগ বাড়িয়ে দিয়েছেন।
নেতাকর্মীরা ভোর থেকে গভীর রাত পর্যন্ত সভা সমাবেশের পাশাপাশি ভোটারদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে লিফলেট তুলে দিয়ে এ উপজেলার উন্নয়নের রুপকার প্রয়াত একাব্বর হোসেনের ছেলে সীমান্তকে পরিচয় করিয়ে দিচ্ছেন এবং তার আনারস মার্কায় ভোট প্রার্থনা করছেন।
মির্জাপুর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে আরও দুইজন চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। তারা হলেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি এস এম মুজাহিদুল ইসলাম মনির (কাপ-পিরিচ) ও টাঙ্গাইল জেলা বিএনপির সাবেক সদস্য বাংলাদেশ ইট প্রস্তুতকারী মালিক সমিতির সভাপতি ফিরোজ হায়দার খান (মোটরসাইকেল)। আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থীরা দুুটি প্যানেলে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ব্যারিস্টার তাহরীম হোসেন সীমান্ত চেয়ারম্যান পদে (আনারস), তার প্যানেলে ভাইস চেয়ারম্যান পদে বর্তমান ভাইস চেয়ারম্যান উপজেলা যুবলীগের যুগ্ম আহবায়ক আজহারুল ইসলাম (তালা) ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে বর্তমান ভারপ্রাপ্ত উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান শামীমা আক্তার শিফা (ফুটবল)। উপজেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি এস এম মুজাহিদুল ইসলাম মনির চেয়ারম্যান পদে (কাপ-পিরিচ), তার প্যানেলে ভাইস চেয়ারম্যান পদে শওকত হোসেন (টিউবওয়েল), মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে বাংলাদেশ মহিলা আওয়ামী লীগের সদস্য মাহবুবা শাহরীন (কলস)।
এছাড়া চেয়ারম্যান পদে টাঙ্গাইল জেলা বিএনপির সাবেক সদস্য বাংলাদেশ ইট প্রস্তুতকারী মালিক সমিতির সভাপতি ফিরোজ হায়দার খান (মোটরসাইকেল) ও টাঙ্গাইল জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সাংস্কৃতিক বিষয়ক সম্পাদক চাঁদ সুলতানা (হাঁস) প্রতীকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
মির্জাপুর উপজেলার আজগানা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শহিদুল ইসলাম মল্লিক জানান, মির্জাপুরবাসী একাব্বর হোসেনকে টানা চারবার এমপি নির্বাচিত করেছিলেন। তিনি অনেক উন্নয়ন কাজ করেছেন। তার ছেলেকেই জয়ী করতে কাজ করছি।
বাঁশতৈল ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মোখলেছুর রহমান জানান, পাহাড়ি এলাকার অর্থকারী ফসল বেগুন, ধান ও কাঠাল। কাচা রাস্তার কারণে এ এলাকার মানুষ তাদের ফসল বিক্রি করে নায্য মূল্য পেতো না। একাব্বর হোসেন পাহাড়ি এলাকার রাস্তা পাকা করায় ব্যবসায়ীরা এখন গ্রামে আসছে। এজন্য এ এলাকার মানুষ তাদের ফসল বিক্রি করে নায্য মূল্য পাচ্ছে। আগামী নির্বাচনে এ এলাকার মানুষ একাব্বর হোসেনের ছেলে সীমান্তকেই ভোট দিবেন বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।
তরফপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম জানান, প্রয়াত একাব্বর হোসেন এ উপজেলায় ব্যাপক উন্নয়ন কাজ করেছেন। আগামী উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে তার ছেলেকেই উপজেলার ভোটাররা ভোট দিবেন বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।
আসন্ন ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের চতুর্থধাপে আগামী ৫ জুন মির্জাপুর উপজেলা পরিষদের ভোট অনুষ্ঠিত হবে। এ উপজেলাটি একটি পৌরসভা ও ১৪ ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত। ৩ লাখ ৬২ হাজার ৮৫১ জন ভোটারের মধ্যে পুরুষ ১ লাখ ৮৩ হাজার ১১৩ জন, ১ লাখ ৭৯ হাজার ৭৩২ জন নারী এবং তৃতীয় লিঙ্গের ৬ জন ভোটার রয়েছেন।