স্টাফ রিপোর্টার, মির্জাপুর ॥
টাঙ্গাইলের মির্জাপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের বারান্দার কার্নিসের রেলিং না থাকায় পা ফসকে পড়ে খোরশেদ মিয়া (৮০) নামে এক রোগীর মৃত্যু হয়েছে। সোমবার (১০ জুন) ভোরে জামুর্কীস্থ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এই দুর্ঘটনা ঘটে। নিহত খোরশেদ মিয়া পাশ্ববর্তী দেলুয়ার উপজেলার ছানবাড়ী গ্রামের বাসিন্দা।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. ফরিদুল ইসলাম টাঙ্গাইল নিউজবিডিকে জানান, খোরশেদ মিয়া নামে ওই ব্যক্তি শ্বাসকষ্ট জনিত রোগ নিয়ে গত (৮ জুন) স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি হয়ে চিকিৎসাধীন ছিলেন। সোমবার (১০ জুন) ভোরে তিনি কমপ্লেক্সের দ্বিতীয় তলার বারান্দার কার্নিসের কাছে গেলে রেলিং না থাকায় পা ফসকে নীচে পড়ে ঘটনাস্থলেই মারা যান।
জানা গেছে, ২৩ লাখ টাকা ব্যয়ে মির্জাপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সংস্কার কাজ চলামান রয়েছে। ময়মনসিংহ জেলার মিলিনিয়াম কনস্ট্রাকশন নামে একটি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান এই সংস্কার কাজ বাস্তবায়ন করছে। মিলিনিয়াম কনস্ট্রাকশনের পার্টনার সোহেল চৌধুরীর ভাই ময়মনসিংহ জেলা নিরাপদ সড়ক চাই আন্দোলনের সভাপতি ও জনতার আদালত ডটকম নিউজ পোর্টালের সম্পাদক আব্দুল কাদের চৌধুরী মুন্না অভিযোগ করে বলেন, গত (২০ মে) স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের বারান্দার রেলিং ভেঙে পুণরায় কাজ করতে গেলে স্থানীয় রিফাত নামের এক যুবক চাঁদা দাবি করে কাজ বন্ধ করে দেয়। এরপর থেকে হাসপাতালের বারান্দার রেলিং অরক্ষিত হয়ে পড়ে। সোমবার (১০ জুন) ভোরে খোরশেদ আলম নামের এক রোগী ফজরের নামাজ শেষে বারান্দার রেলিংয়ের কাছে হাঁটতে গিয়ে পা ফসকে নীচে পড়ে ঘটনাস্থলেই মারা যান।
তিনি অভিযোগ করে আরও বলেন, চাঁদা বা কাজের অর্ধেক শেয়ার না দিলে রিফাত তাদের কাজ করতে দিবে না বলে হুমকি দিয়ে কাজ বন্ধ করে দেয়। বিষয়টি উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. ফরিদুল ইসলামসহ ডিপার্টমেন্টকে তারা মৌখিকভাবে জানিয়েছেন। কিন্তু তারপরও রিফাত তাদের কাজ করতে দেয়নি।
এ ব্যাপারে অভিযুক্ত রিফাতের মোবাইল ফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি।
এ বিষয়ে মির্জাপুর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. ফরিদুল ইসলাম বিষয়টি স্বীকার করে বলেন, আমি ঢাকায় ট্রেনিংয়ে ছিলাম। তাদের বলেছিলাম কমপ্লেক্সের ভিতরে কোন সমস্যা হলে আমি দেখবো। কমপ্লেক্সের বাইরে হলে তো আমি কোন ব্যবস্থা নিতে পারবো না।
মির্জাপুর থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রেজাউল করিম জানান, চাঁদাবাজি বা কাজ বন্ধ থাকার বিষয়ে কোন অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে তিনি জানিয়েছেন।