কালিহাতী প্রতিনিধি ॥
টাঙ্গাইলের কালিহাতীতে বিয়ের দাবিতে প্রেমিকের বাড়িতে ৪ দিন ধরে অবস্থান নেওয়া সেই প্রেমিকা শান্তা আক্তার (২৩) আত্মহত্যা করেছেন। এক সন্তানের জননী শান্তা প্রেমিকের ঘরে ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছে। এ ঘটনার পর থেকে নিহতের প্রেমিক সোহাগ পলাতক রয়েছে। শনিবার (২২ জুন) সন্ধ্যা সাড়ে ৭ টার দিকে উপজেলার নাগবাড়ী ইউনিয়নের খালুয়াবাড়ী গ্রামে প্রেমিক সোহাগের নিজ ঘরে এ ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় প্রেমিক সোহাগের মা ছোবুরা বেগম ও বাবা নুরুল ইসলামকে আটক করে থানায় নেয়া হয়েছে বলে কালিহাতী থানার এসআই মিন্টু চন্দ্র ঘোষ জানিয়েছেন।
নিহত প্রেমিকা শান্তা আক্তার কুমিল্লা জেলার ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলার অলুয়া গ্রামের মোখলেছুর রহমানের মেয়ে। শান্তার চার বছরের একটি ছেলে সন্তান রয়েছে। প্রেমিক সোহাগ (২৪) কালিহাতী উপজেলার নাগবাড়ী ইউনিয়নের খালুয়াবাড়ী গ্রামের নুরুল ইসলামের ছেলে। গত বুধবার (১৯ জুন) প্রেমিকের বাড়িতে এসে অবস্থান নেয় প্রেমিকা শান্তা। ঘটনাটি জানাজানি হলে এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্যকর পরিবেশের সৃষ্টি হয়।
জানা গেছে, এক বছর আগে টিকটকের মাধ্যমে পরিচয় হয়ে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে সোহাগের সাথে শান্তার। এরপর বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে কুমিল্লায় গিয়ে শান্তার সাথে একাধিক বার শারিরীক সম্পর্ক গড়ে তোলে। স্বামী-স্ত্রী পরিচয়ে বিভিন্ন স্থানে ঘুরতে যান তারা। এক সময় বিয়ের জন্য ওই নারী প্রেমিক সোহাগকে চাপ দিতে থাকেন। তখন নানা তালবাহানা শুরু করেন সোহাগ। বিভিন্ন সময়ে সোহাগ শান্তার কাছ থেকে দুই লাখ টাকা, তিন ভরি স্বর্ণ নেয়। সোহাগ ফোন করে বাড়িতে আসতে বললে শান্তা কুমিল্লা থেকে চলে আসে। নিজ বাড়িতে শান্তার উপস্থিতি টের পেয়ে সোহাগের মা বাড়ি থেকে সোহাগকে ভাগিয়ে দেয়। শান্তার স্বামী একটি বেসরকারি কোম্পানির ম্যানেজার হিসেবে চাকরি করেন। বিষয়টি স্থানীয় মাতাব্বর ও গণ্যমান্য ব্যক্তিদের জানালেও কোনো প্রতিকার পাননি শান্তা আক্তার। এতে মানসিকভাবে ভেঙে পড়েন তিনি। একপর্যায়ে দু:খ ও ক্ষোভে শনিবার (২২ জুন) সন্ধ্যা সাড়ে ৭ টার দিকে প্রেমিক সোহাগের টিনেসড বাড়ির একটি ঘরে প্রবেশ করেন শান্তা। পরে অভিমানী শান্তা ওই ঘরের ফ্যানের সঙ্গে গলায় ওড়না পেঁচিয়ে ফাঁসিতে ঝুলে আত্মহত্যা করেন।
এ বিষয়ে কালিহাতী থানার এসআই মিন্টু চন্দ্র ঘোষ বলেন, খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালে মর্গে পাঠানো হয়েছে। নিহতের স্বজনদের জানানো হয়েছে। পরবর্তীতে আইনগত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।