স্টাফ রিপোর্টার ॥
টাঙ্গাইলে কোটা বিরোধী আন্দোলনে পিছু হটতে বাধ্য হয়েছে জেলা ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। যদিও প্রথম দিকে শহরের নিরালা মোড় এলাকা ছাত্রলীগের দখলে ছিল। পরবর্তীতে সাধারণ শিক্ষার্থীদের একত্রিত হয়ে শহরে আসার খবরে জেলা ছাত্রলীগ স্থান ত্যাগ করে।
মঙ্গলবার (১৬ জুলাই) বেলা ১১টার দিকে জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি ও সম্পাদকের নেতৃত্বে কয়েকজন নেতাকর্মী টাঙ্গাইল শহরের নিরালা মোড় ও শহীদ মিনারে অবস্থান নেয়। এ সময় কোটা বিরোধী কয়েকজন সাধারণ শিক্ষার্থীরা মিছিল নিয়ে নিরালা মোড়ের দিকে যাওয়ার সময় ধাওয়া করে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। এতে নেতৃত্ব দেন জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি সোহানুর রহমান সোহান। এ সময় ছাত্রলীগের হামলায় তিনজন শিক্ষার্থী আহত হন। পরে সাধারণ শিক্ষার্থীর একটি গ্রুপ টাঙ্গাইল উদ্যানে একত্রিত হন। পরে তারা টাঙ্গাইল প্রেসক্লাবে গিয়ে সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন। পরে মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় ও এমএম আলী সরকারি কলেজের কয়েকশ’ শিক্ষার্থী মিছিল নিয়ে শহরে প্রবেশ করেন। এই ঘটনায় শহরে থমথম অবস্থান বিরাজ করছে।
এদিকে কোটা বিরোধী কয়েকশ’ শিক্ষার্থী মিছিল নিয়ে শহরে প্রবেশ করছে এমন খবরে নিরালা মোড়ে অবস্থান করা ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা ভয়ে সেখান থেকে চলে যায়। পরে সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা একত্রিত হয়ে বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে ঢাকা-টাঙ্গাইল ও বঙ্গবন্ধু সেতু মহাসড়কের আশেকপুর বাইপাসে গিয়ে অবস্থান নেয়।
সাধারণ শিক্ষার্থীরা টাঙ্গাইল নিউজবিডিকে জানান, শান্তিপূর্ণ কোটা বিরোধী কর্মসূচিতে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা অতর্কিতভাবে লাঠিসোঁটা নিয়ে হামলা চালায়। হামলায় তিনজন শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন। এদের মধ্যে গুরুতর আহত একজনকে শেখ হাসিনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে টাঙ্গাইল জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি সোহানুর রহমান সোহান বলেন, শহরে যাতে কোনো বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি না হয় এজন্য নিরালা মোড়ে শান্তিপূর্ণ অবস্থান কর্মসূচি পালন করে ছাত্রলীগ। এ সময় সাধারণ শিক্ষার্থীরা ‘তুমি কে, আমি কে, রাজাকার রাজাকার’ স্লোগান দিলে ছাত্রলীগের পক্ষ থেকে প্রতিবাদ করা হয়। তবে কারও ওপর হামলা করা হয়নি। পরে দুপুর ১২টার দিকে স্থান ত্যাগ করা হয়।
এ বিষয়ে টাঙ্গাইলের পুলিশ সুপার গোলাম সবুর বলেন, বিভিন্ন কলেজের শিক্ষার্থীরা কোটা বিরোধী আন্দোলন করছে। ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরাও অবস্থান নিয়েছিল। তাদের সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। শান্তিপূর্ণ আন্দোলনে কোনো সমস্যা নেই, এটা তাদের গণতান্ত্রিক অধিকার। তবে জনগণের ক্ষতির কারণ বা আইনশৃঙ্খলার অবনতি এবং বিশৃঙ্খলা করে জনমনে আতঙ্ক সৃষ্টি করলে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।