মাভাবিপ্রবি প্রতিনিধি ॥
টাঙ্গাইল মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (মাভাবিপ্রবি) কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীদের নেতৃত্বে থাকা শিক্ষার্থীরা কোটা আন্দোলন প্রত্যাহার করেছেন। মঙ্গলবার (৩০ জুলাই) সকালে একটি প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানান তারা। এর পূর্বে কোটা সংষ্কার আন্দোলনের নেতৃত্বে থাকা শিক্ষার্থীরা একটি জুম মিটিং থেকে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বলে একটি ভিডিও থেকে নিশ্চিত হওয়া গেছে।
প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে আন্দোলনের নেতৃত্ব দেওয়া শিক্ষার্থীরা জানান, দেশে কোটা সংস্কার আন্দোলন শুরু হওয়ায় মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল সাধারণ শিক্ষার্থী এই আন্দোলনে স্বতঃস্ফূর্তভাবে অংশগ্রহণ করেছিলেন এবং শান্তিপূর্ণভাবে আন্দোলন করেছিলেন। দাবি আদায়ের লক্ষ্যে সাধারণ শিক্ষার্থীবৃন্দ টানা কয়েক দিন শান্তিপূর্ণ আন্দোলন করেছেন। গত ১৭ জুলাই হল বন্ধ করে দেওয়ার পরে সকল সাধারণ শিক্ষার্থী তাদের বাসায় চলে যায় এবং কোনো প্রকার আন্দোলন, বিভিন্ন সরকারি স্থাপনায় হামলা বা কোনো প্রকার সহিংসতার সাথে তারা কোনোভাবেই সম্পৃক্ত হয়নি। সংগঠিত সহিংসতার সাথে মাভাবিপ্রবি'ও ছাত্রছাত্রীদের কোন প্রকার সম্পর্কও নেই। গত ২১ জুলাই মহামান্য আদালত কোটা সংস্কারের পক্ষে রায় প্রদান করেছেন এবং সরকারের নির্বাহী বিভাগ তা অনুসরণ কওে প্রজ্ঞাপন জারি করেছেন। নির্বাহী বিভাগ আমাদের কোটা সংস্কারের দাবির প্রেক্ষিতে যে সমাধান করেছেন। আমরা মনে করি তাতে সাধারণ শিক্ষার্থীদের দাবির প্রতিফলন ঘটেছে। এছাড়া আমাদের মাভাবিপ্রবি ক্যাম্পাসে কোন সমন্বয়ক কমিটি ছিলো না। কেউ সমন্বয়কও হয়নি এবং অন্যান্য কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনো সমন্বয়ক এর সাথে যোগাযোগ করেও কোন প্রকার আন্দোলন কর্মসূচি দেয়নি। কিন্তু প্রত্যেকে যার যার অবস্থান থেকে, নৈতিকতার জায়গা থেকেই শান্তিপূর্ণভাবে কোটা সংস্কারের জন্য আন্দোলন চালিয়ে গিয়েছে। এ অবস্থায় কোটা সংস্কার হওয়ায় মহামান্য আদালতের রায়ের প্রতি সন্তুষ্টি প্রকাশ করে আমরা মাভাবিপ্রবি'র সাধারণ শিক্ষার্থীবৃন্দ আন্দোলন প্রত্যাহার করছি।
কোটা সংস্কারের দাবিতে যে সকল সাধারণ শিক্ষার্থী শহীদ হয়েছেন। দাবি আদায়ের জন্য যারা রক্ত দিয়ে গেলেন। তাদের যেন সরকারের পক্ষ থেকে পূর্ণ সহায়তা এবং সঠিক তদন্ত কওে ন্যায়বিচার দেওয়া হয়, সেজন্য অনুরোধ জানাচ্ছি। এই আন্দোলনে যে সকল সাধারণ শিক্ষার্থী শহীদ হয়েছেন, তাদের আত্নার মাগফিরাত কামনা করছি এবং শোকাহত পরিবারের প্রতি সহমর্মিতা জানাচ্ছি। যে সকল সাধারণ শিক্ষার্থীবৃন্দ কোটা সংষ্কারের জন্য শান্তিপূর্ণভাবে আন্দোলন করেছিলেন তাদের যেন কেউ অযথা কোন হয়রানি বা মিথ্যা মামলায় জড়িত না করেন তার জন্য বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সহায়তা একান্তভাবে কামনা করছি।
অর্থনীতি বিভাগের শিক্ষার্থী তৌফিক আহমেদ বলেন, আমরা চাকুরি প্রত্যাশি শিক্ষার্থীরা লাইব্রেরি থেকে নৈতিকতার জায়গা থেকে কোটা সংস্কারের দাবিতে শান্তিপূর্ণভাবে অংশগ্রহণ করেছি। ক্যাম্পাস বন্ধ হওয়ায় ১৭ জুলাই আমরা বাসায় চলে আসি। মহামান্য আদালত কোটা সংস্কারের পক্ষে রায় প্রদান করেছেন এবং সরকারের নির্বাহী বিভাগ তা অনুসরণ করে প্রজ্ঞাপন জারি করেন। আমরা মনে করছি এখন আর কোন আন্দোলন করার আর কোন প্রয়োজন নেই। আমি আন্দোলন প্রত্যাহার করার ঘোষণা করছি। আমাদের ক্যাম্পাসের হলগুলো অতি দ্রুত খুলে দেওয়া হোক এবং সাধারণ শিক্ষার্থীরা দ্রুত নির্বিঘ্নে চলাফেরা করতে পারে এই পরিবেশ তৈরী করতে ক্যাম্পাস প্রশাসনের কাছে সহযোগীতা কামনা করছি। পদার্থ বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী সুখি আক্তার বলেন, আমরা শান্তিপূর্ণভাবে কোটা সংষ্কারের দাবি জানিয়েছিলাম। সেখানে কোন সহিংসতা ছিল না। আমরা আন্দোলন স্থগিত ঘোষণা করছি।
আন্দোলন প্রত্যাহারের জন্য অনুষ্ঠিত জুম মিটিং এ উপস্থিত ছিলেন কোটা সংস্কারের দাবিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের নেতৃত্বে থাকা অর্থনীতি বিভাগের শিক্ষার্থী তৌকির আহমেদ, পদার্থ বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী ফিহাদ হোসেন, বিএমবি বিভাগের শিক্ষার্থী আরিফুল ইসলাম, পদার্থ বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী সুখি আক্তার, জুনায়েদ, মোহাম্মদ আলী প্রমুখ।