স্টাফ রিপোর্টার ॥
টাঙ্গাইলের মির্জাপুরের গোড়াই-সখিপুর সড়কের বংশাই নদীর ওপর নির্মিত হাটুভাঙ্গা ব্রিজের টোল আদায় বন্ধের দাবি জানিয়ে টোল প্লাজায় দু’দফা হামলার ঘটনা ঘটেছে। এ সময় টোল অফিসে হামলা চালিয়ে ব্যাপক ভাংচুর করা হয়। হামলাকারীদের দাবি অবৈধভাবে দীর্ঘদিন ব্রিজের উপর দিয়ে চলাচলকারী যানবাহন থেকে চাঁদা তোলা হচ্ছে। তবে এ দাবি অস্বীকার করেছেন টাঙ্গাইল সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী সিনথিয়া আজমিরী খান। তিনি বলেন, সরকারি নিয়ম মেনে ৩ বছরের জন্য টোল আদায়ে জন্য ব্রিজের ইজারাদার নিয়োগ দেয়া হয়েছে। সর্বোচ্চ দর দাতা হিসেবে এস কে ইন্টারন্যাশনাল নামে একটি প্রতিষ্ঠান টোল আদায় করে থাকেন। তিনি দেশের স্বার্থে টোল আদায়ে দেশ প্রেমিক প্রতিটি নাগরিককে সহযোগিতার আহবান জানান।
জানা গেছে, ১৯৯৬ সালে মির্জাপুর ও সখিপুর উপজেলাবাসীর দাবির প্রেক্ষিতে আওয়ামী লীগ সরকার গোড়াই-সখিপুর সড়কের বংশাই নদীর হাটুভাঙা এলাকায় সাড়ে ৬ কোটি টাকা ব্যায়ে ব্রিজ নির্মাণের কাজ শুরু করে। ২০০১ সালে ব্রিজটির নির্মাণ কাজ শেষ হলে যানবাহন চলাচলের জন্য খুলে দেয়া হয়। মির্জাপুর উপজেলার পাহাড়ি অঞ্চল ও সখিপুর উপজেলার বাসিন্দা ছাড়াও দেশের উত্তরাঞ্চলের ময়মনসিংহ, শেরপুর, জামালপুর ও নেত্রোকোনাসহ কয়েকটি জেলার যানবাহন এই ব্রিজের উপর দিয়ে চলাচল করে থাকে। ব্রিজটি চালুর পর থেকেই সরকার টাঙ্গাইল সড়ক ও জনপথ বিভাগের মাধ্যমে টোল আদায়ের জন্য ইজারা পদ্ধতি চালু করেন। এরপর থেকে ওপেন টেন্টারের মাধ্যমে প্রতি বছর সর্বোচ্চ দর দাতাকে ইজারাদার নিয়োগ দেয়া হয়ে থাকে।
সিনথিয়া আজমিরী খান জানান, ২০২২-২০২৩ সালে ওপেন টে›ডারে আগামী তিন বছরের (১০৯৬ দিন) জন্য সর্বোচ্চ দর দাতা হিসেবে এস কে ইন্টারন্যাশনাল নামের ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের মালিক কবির হোসেন ব্রিজের ইজারাদার নির্বাচিত হয়েছেন। তিনি যানবাহনের ধরন বেধে সরকার সরকার নির্ধারিত হারে যানবাহন থেকে টোল আদায় করে থাকেন।
বিজ্রের ইজারাদার এস কে ইন্টারন্যাশনালের মালিক কবির হোসেন বলেন, সরকারি নিয়ম মেনে সর্বোচ্চ দর দাতা হিসেবে ৩ বছরের জন্য ব্রিজের ইজারা পেয়েছি। সরকার নির্ধারিত হারে যানবাহন থেকে টোল আদায় করা হয়ে থাকে। তিনি বলেন, ট্রেইলারে ১২৫ টাকা, হেভী ট্রাক ১০০ টাকা, মিডিয়াম ট্রাক ৫০ টাকা, বড় বাস ৪৫ টাকা, মিনি ট্রাক ৪০ টাকা, কৃষি কাজে ব্যবহৃত যান প্রতি পাড় ৩০ টাকা, মিনি বাস ২৫ টাকা, মাইক্রো/ ফোর হুইল চলিত যান ২০ টাকা, সিডান কার ১৫ টাকা ও ৩ চাকার যান/মোটরসাইকেল ৫ টাকা করে টোল আদায় করা হয়। কিন্ত গত ৫ দিনে কিছু অপরিচিত লোকজন দু’দফায় দল বেধে ব্রিজে এসে টোল অফিসে হামলা চালিয়ে ভাংচুর করে। তিনি বিষয়টি টাঙ্গাইল জেলা সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী ও মির্জাপুরের দায়িত্বে থাকা সেনাবাহিনীর মেজর সাহেবকেও অবহিত করেছেন।
সড়ক ও জনপথ বিভাগ টাঙ্গাইলের নির্বাহী প্রকৌশলী সিনথিয়া আজমিরী খান জানান, সরকার ব্রিজের টোল আদায়কে দেশের আয়ের পথ হিসেবে নিয়েছে। এ কাজে দেশ প্রেমিক প্রতিটি নাগরিককে টোল আদায়ে সহযোগিতার করার আহবান জানান।
মির্জাপুরের হাটুভাঙা ব্রিজের টোল বন্ধের দাবিতে হামলা ও ভাংচুর
১৩৪ Views