স্টাফ রিপোর্টার, মির্জাপুর ॥
টাঙ্গাইলের মির্জাপুরে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের শিক্ষার্থী ও ছাত্রলীগের কতিপয় নেতাকর্মীর মধ্যে হামলার ঘটনা ঘটেছে। এই হামলায় তিন সমন্বয়ক আহত হয়েছেন। বৃহস্পতিবার (১৫ আগস্ট) দুপুর পৌনে বারোটার দিকে মির্জাপুর শহীদ ভবানী প্রসাদ সাহা সরকারি কলেজে এ হামলার ঘটনা ঘটে।
প্রত্যক্ষদর্শী শিক্ষার্থীরা জানান, বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা পূূর্বনির্ধারিত কর্মসূচী হিসেবে সকাল ১০টা থেকে কলেজের ক্যাম্পাসে অবস্থান করছিল। দুপুর পৌনে বারোটার সময় উপজেলা ছাত্রলীগের সদস্য সীমান্ত শিকদার ও ছাত্রলীগ কর্মী আপনের নেতৃত্বে দেশীয় দাড়ালো অস্ত্রসহ ১৫-২০ জনের একটি দল বৈষম্যবিরোধী শিক্ষার্থীদের ওপর অতর্কিত হামলা চালায়। এতে তিন সমন্বয়ক আহত হয়। আহতরা হলেন- সমন্বয়ক মোজাহিদ (১৮), ইমন সিদ্দিকী (২৩) ও জাকির হোসেন (২৪)। শিক্ষার্থীরা আহতদের উদ্ধার করে মির্জাপুর কুমুদিনী হাসপাতালে ভর্তি করে। তাদের মধ্যে সমন্বয়ক মোজাহিদের অবস্থার অবনতি হলে তাকে ঢাকায় রেফার্ড করা হয়েছে। অবস্থার অবনতি হলে জাকির হোসেনকে ঘাটাইল সিএমএইচ এ রেফার্ড করা হয়েছে।
চিকিৎসক জানিয়েছেন, তার গাড়ে দাড়ালো অস্ত্রের আঘাতে গভীর খত হয়েছে। হামলার সময় শিক্ষার্থীরা আপন নামে এক ছাত্রলীগ কর্মীকে আটক করে মির্জাপুর থানায় সোপর্দ করে। আপন মির্জাপুর পৌর এলাকার পোষ্টকামুরী গ্রামের উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাবেক নেতা মাহফুজের ছেলে। এদিকে সমন্বয়করা হামলাকারী সিয়াম ও আবিদুর রহমান নামে দুই ছাত্রলীগ কর্মীকে পুলিশে ধরিয়ে দেন।
মির্জাপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার দায়িত্বে থাকা পরিদর্শক (তদন্ত) সালাহ উদ্দিন জানান, ছাত্রলীগ নেতা সিমান্তের নেতৃত্বে বৈষম্যবিরোধী শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা করেছে। পুলিশ তাদের আইনের আওতায় আনার চেষ্টা করছে।
এদিকে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার ঘটনায় নিন্দা জানিয়েছেন বিএনপি’র জাতীয় নির্বাহী কমিটির শিশু বিষয়ক সম্পাদক ও সাবেক এমপি আবুল কালাম আজাদ সিদ্দিকী এবং জামায়াতের উপজেলা আমীর ইয়াহ ইয়াহ খান মারুফ। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আরেক সমন্বয়ক জুবায়েদ ইসলাম নিঝুম জানান, ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা পূর্বপরিকল্পিত ভাবে কলেজ থেকে বের হওয়ার আগ মূহুুর্তে অতর্কিত হামলা চালিয়ে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের আহত করেছে। হামলার ঘটনায় জরিত ছাত্রলীগের সন্ত্রাসীদের নামে মামলার প্রস্তুতি চলছে। তারা বলেন, শিক্ষার্থীদের ওপর ছাত্রলীগের হামলায় যারা জরিত অনতিবিলম্বে তাদের আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান।
মির্জাপুর শহীদ ভবানী প্রসাদ সাহা সরকারি কলেজের প্রিন্সিপাল আব্দুল মান্নানের সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগ করেও সম্ভব হয়নি।
মির্জাপুর শহীদ ভবানী প্রসাদ সাহা সরকারি কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি শাহরিয়ার নাহিদ বলেন, যাদের বিরুদ্ধে হামলার অভিযোগ উঠেছে তারা কলেজ শাখা ছাত্রলীগের রাজনীতির সাথে জড়িত না।
