জাহিদ হাসান, সখীপুর ॥
টাঙ্গাইলের সখীপুরে মাদ্রাসা শিক্ষককে মারধর ও তার দাড়ি ছিঁড়ে ফেলায়, গ্রাম্য শালিসে দুই ব্যক্তিকে জুতা পেটা এবং আরো দুইজনকে ওই শিক্ষকের কাছে ক্ষমা চাইয়ে তওবা পড়ানো হয়েছে। মঙ্গলবার (৮ অক্টোবর) সকাল ১০টার দিকে উপজেলার কালিয়া ইউনিয়নের কচুয়া ফোরকানিয়া হাফেজিয়া মাদ্রাসা মাঠে এ ঘটনা ঘটে।
জানা যায়, গত শনিবার (৫ অক্টোবর) কচুয়া ফোরকানিয়া হাফেজিয়া মাদ্রাসার শিক্ষক মাওলানা আব্দুল আজিজ ওই মাদ্রাসার দ্বিতীয় শ্রেণির ছাত্রী আফরীনকে দুষ্টুমি করায় দুইটি বেত্রাঘাত করেন। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে আফরীনের চাচা রাসেল, দাদা তারা মিয়া, রফিক এবং হবি মিয়া নামের চার ব্যক্তি শিক্ষক আব্দুল আজিজকে মাদ্রাসার পাশেই আঞ্চলিক একটি সড়কে দাঁড় করিয়ে মারধর করেন। বিষয়টি জানাজানি হলে সখীপুরসহ আশপাশের বেশকয়েকটি থানায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়। এছাড়াও স্থানীয় লোকজন এবং টাঙ্গাইলের আলেম-উলামাদের অধিকার সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন সংগঠন মারধরকারীদের দৃষ্টান্তমূলক বিচারের দাবি তোলেন।
পরে মঙ্গলবার (৮ অক্টোবর) সকাল ১০টার দিকে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান এবং ওই ইউনিয়নের সব সদস্য, সখীপুর, ঘাটাইল ও ভালুকার নেতৃস্থানীয় আলেম, সখীপুর কওমি উলামা পরিষদ ও শানে সাহাবা খতিব ফাউন্ডেশনের নেতৃবৃন্দ ও স্থানীয় কয়েকশ’ লোকের উপস্থিতিতে ওই চার ব্যক্তিদের মধ্যে রাসেল এবং রফিককে জুতা পেটা এবং তারা মিয়া ও হবি মিয়াকে বয়সের বিবেচনা করে ওই শিক্ষকের কাছে ক্ষমা চাওয়ানো হয়।
উল্লেখ্য, ওই শিক্ষক মাওলানা আব্দুল আজিজ জানান, মাদ্রাসায় ক্লাস ছুটি হওয়ার আগে আমি প্রত্যেক শিক্ষার্থীদেরকে বলে দেই, তারা যেন ছুটি হওয়ার পরে কোথাও দাঁড়িয়ে না থেকে সরাসরি নিজেদের বাড়িতে চলে যায়। ছাত্রী আফরীনকেও একই কথা বলে দেই। কিন্তু, সে গত কয়েকদিন ধরে ছুটি হলে অন্য ক্লাসরুমের সামনে দাঁড়িয়ে থাকে। এতে ওই ক্লাসের শিক্ষার্থীদের পড়াশোনায় সমস্যা হয়। এ কারণে আজকে তাকে ডেকে সতর্ক করে দিয়ে দুটি বেত্রাঘাত করি। এটাই আমার অপরাধ।
ওই মাদ্রাসার প্রধান শিক্ষক হাফেজ আনোয়ার জানান, ছাত্রীর মা তার মেয়েকে মারধরের বিষয়ে আমার কাছে এবং কমিটির সদস্যদের কাছে অভিযোগ দিয়েছিল। আমরা জানিয়েছি বিষয়টি তদন্ত করে ওই শিক্ষক অপরাধী হলে তার বিচার হবে। কিন্তু, তারা আমাদেরকে সেই সময় দেননি। তারা নিজেরাই শিক্ষককে সঙ্গবদ্ধভাবে মারধর করেছেন। তার দাঁড়ি ছিঁড়ে ফেলেন। পরে এই ঘটনা জানাজানি হলে মারধরকারীদের বিচারের দাবি উঠে।