গোপালপুরে পুলিশের শিশুপুত্রকে হত্যা ॥ টাঙ্গাইল লেকে যুবকের মরদেহ উদ্ধার

অপরাধ গোপালপুর টাঙ্গাইল লিড নিউজ

স্টাফ রিপোর্টার ॥
টাঙ্গাইলের গোপালপুর উপজেলার গাঙ্গাপাড়া গ্রামের এক পুলিশ অফিসারের শিশু পুত্রকে মুক্তিপনের দাবিতে অপহরণ করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় শুক্রবার (১১ অক্টোবর) গোপালপুর থানায় একটি অপহরণ মামলা দায়ের করা হয়। পুলিশ এ ঘটনার সাথে জড়িত থাকার অভিযোগে ২ জনকে গ্রেফতার করেছে। গ্রেফতারা হলো- গোপালপুর উপজেলার নবধুলটিয়া গ্রামের আতাউর রহমানের ছেলে নুরনবী এবং ব্রাহ্মনবাড়ীয়া সদর উপজেলার শরীফপুর গ্রামের আব্দুর কাদিরের ছেলে মোকাব্বির হোসেন। রিমান্ডে আনা আসামীরা শনিবার (১২ অক্টোবর) অবহৃত শিশুকে হত্যার কথা স্বীকার করেছে।
এদিকে টাঙ্গাইল পৌর শহরের জেলা সদর লেক থেকে শনিবার (১২ অক্টোবর) সকালে মিজানুর রহমান (৩৪) নামে এক যুবকের ভাসমান মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। নিহত মিজানুর রহমান টাঙ্গাইল পৌরসভার কাগমারা এলাকার বাহেজ উদ্দিনের ছেলে।
গোপালপুর থানার (এসআই) তদন্তকারি অফিসার শফিকুল ইসলাম জানান, গোপালপুর উপজেলার গাঙ্গাপাড়া গ্রামের বাসিন্দা এবং কিশোরগঞ্জ জেলার পাকুন্দিয়া থানায় কর্মরত উপ-পরিদর্শক খন্দকার রাসেলের একমাত্র সন্তান রাহেনুল ইসলাম আরাফ (৬) গত (৮ অক্টোবর) বাড়ি থেকে পরিকল্পিতভাবে অপহৃত হন। ঘটনার সাথে জড়িত থাকার অভিযোগে পুলিশ নুরনবীকে প্রথম আটক করে। তার স্বীকারোক্তি মোতাবেক ব্রাহ্মনবাড়ীয়া সদর উপজলার শরীফপুর গ্রামে অভিযান চালিয়ে অপর আসামী মোকাব্বির হোসেনকে আটক করা হয়। তবে অপহৃত শিশুটিকে এখনো উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি। শুক্রবার (১১ অক্টোবর) সন্ধ্যায় টাঙ্গাইল আদালতে হাজির করে আসামীদের চার দিনের রিমান্ড দেয়া হয়।
মামলার বাদি এবং অপহৃত আরাফের দাদা নাসির উদ্দীন জানান, তার পুত্র খন্দকার রাসেল পাকুন্দিয়া থানায় চাকরি করলেও তার স্ত্রী ও সন্তান গ্রামের বাড়িতে থাকেন। ঘটনার দিন চকলেট এবং চিপ্সের লোভ দেখিয়ে আরাফকে কৌশলে অপহরণ করা হয়। অপহরণের পর দুবর্ত্তরা পরিবারের নিকট ১০ লক্ষ টাকা মুক্তিপন দাবি করে। আন্তঃ জেলা সংঘবদ্ধ চক্র অপহরণের সাথে জড়িত বলে তার ধারণা।
এ বিষয়ে গোপালপুর থানার (ওসি) গোলাম মুক্তার আশরাফ উদ্দীন বলেন, থানায় রিমান্ডে আনা আসামীরা শনিবার (১২ অক্টোবর) গাজীপুরের কালিয়াকৈর রেলস্টেশনের কাছে শিশুকে হত্যার কথা স্বীকার করে। পরে আসামীদের নিয়ে কালিয়াকৈরে এক ডোবা থেকে শিশুর গলিত লাশ উদ্ধার করে। পরিবারের লোকজন লাশ সনাক্ত না করতে পারায় ডিএনএ পরীক্ষা করার সিদ্ধান্ত নেয়। লাশটি গাজীপুরের তাজউদ্দিন মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে ময়নাতদন্ত শেষ করে শিশুর বাড়িতে নিয়ে আসার প্রক্রিয়া চলছে।
টাঙ্গাইল সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) তানভীর আহম্মেদ জানায়, শনিবার (১২ অক্টোবর) সকালে টাঙ্গাইল জেলা সৌখিন মৎস শিকারী সমিতির পাশে জেলা সদর লেকে ভাসমান মরদেহ দেখে প্রত্যক্ষদর্শীরা পুলিশে খবর দেয়। পরে মাছ শিকারের জন্য ব্যবহৃত কাঠের পাটাতনের গামছা দিয়ে বাঁধা অবস্থায় থাকা মরদেহটি পুলিশ উদ্ধার করে। এ সময় মরদেহের সাথে থাকা একটি ব্যাগে আনুষঙ্গিক জিনিসপত্রের সঙ্গে যুবকের জাতীয় পরিচয়পত্র পাওয়া যায়।
খবর পেয়ে টাঙ্গাইলের পুলিশ সুপার সাইফুল ইসলাম সানতু, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (টাঙ্গাইল সদর সার্কেল) সোহেল রানা ও জেলা গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি-দক্ষিণ) ওসি মোশারফ হোসেন পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকতারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন কজরেছেন।
টাঙ্গাইল সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) তানবীর আহম্মেদ আরও জানান, মিজানুর রহমান (৩৪) নামের ওই যুবকের ভাসমান মরদেহ উদ্ধার করে সুরতহাল শেষে ময়নাতদন্তের জন্য টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। নিহত মিজানুর রহমান টাঙ্গাইল পৌরসভার কাগমারা এলাকার বাহেজ উদ্দিনের ছেলে। নিহতের পরিবারের পক্ষ থেকে অভিযোগ পেলে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

৫২ Views

শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *