টাঙ্গাইলে নিত্যপণ্যের বাজারে দামের উত্তাপে ক্রেতাদের মাথা ঘুরায়

টাঙ্গাইল টাঙ্গাইল সদর লিড নিউজ

সাদ্দাম ইমন ॥
টাঙ্গাইলে নিত্যপণ্যের বাজারে দামের উত্তাপে ক্রেতা সাধারণ পুড়ে ছাড়খার হচ্ছে। এতে নিম্ন ও মধ্যবিত্ত আয়ের মানুষের মধ্যে নাভিশ্বাস দেখা দিয়েছে। অধিকাংশ পরিবারে একবেলা আমিষ জুটছে না। শুক্রবার (১৮ অক্টোবর) সরেজমিনে টাঙ্গাইলের পাইকারির বড় বাজার পার্ক বাজার, সিটি বাজার, ছয়আনী বাজার, আমিন বাজার, সাবালিয়া বাজার, সাবালিয়া চার রাস্তার মোড় বাজার, বাসস্ট্যান্ড বাজার, বৈল্যা বাজার, বেবীস্ট্যান্ড বাজার, কলেজগেট বাজার ঘুরে দেখা যায় ও শুনা যায় ক্রেতাদের নাভিশ^াস অবস্থা।
সপ্তাহের ব্যবধানে সবজির দাম কিছুটা কমলেও নিম্ন ও নিম্ন মধ্যবিত্তের ক্রেতাদের নাগালের বাইরে। গরিবের প্রোটিন হিসেবে পরিচিত ডিম সরকারের বেঁধে দেয়া প্রতিপিস ১১ টাকা ৮৭ পয়সার স্থলে ১৩ টাকা ৭৫ পয়সা দরে বিক্রি হচ্ছে। শাক-সবজি গত সপ্তাহের চেয়ে কেজিতে ২-৩ টাকা কমে বিক্রি হলেও তা সাধারণের নাগালের বাইরে। চলতি সপ্তায় বাজারগুলোতে প্রতিকেজি করলা ১২৫-১৩০, ধুন্দল ১০০-১১০, ঢেড়স ১২০-১৩০, ঝিঙা ৮০-৯০, টাকা, পেঁপে ৩০-৩৫, পটল ৯৫-১০০, বরবটি ৭৫-৮০, কচুর লতি ৮০-৯০, কাঁচকলা হালি (৪টি) ৩০- ৪০, কাঁকরোল ৭০-৮০, মিষ্টি কুমড়া ফালি (আধাকেজি) ৬০-৭০, বেগুন ১০০-১১০, খিরা ১০০-১২০, শশা ১২০- ১৪০, মূলা (সাদা) ৬-৭০, শাকের আটি ২০ থেকে ৩০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।
মাঝারি সাইজের একটি লাউ বিক্রি হচ্ছে ৮০-১০০ টাকায়। শীতের সবজি টমেটো প্রতিকেজি ২৫০-৩০০ টাকা, গাজর ২০০-২৫০, ধনেপাতা ৪০০- ৪৫০, শিম ২৮০-৩২০, ফুলকপি ১২০-১৩০, বাধাকপি ৭০-৮০ টাকায় বিক্রি-হচ্ছে। বাজারে কাঁচামরিচ প্রতিকেজি ৪০০-৪৮০টাকা, পেঁয়াজ ১২০-১৩০, মাঝারি সাইজের গোলআলু ৭০-৮০ টাকা, আদা ২০০-২২০, রসুন ২৪০-২৫০ টাকা। মসারীর ডাল (মোটা) ১১০, মসারীর ডাল (ক্যাঙ্গারু) ১৫০, মুগ ডাল ২০০, ডাল (ছোলা) ১৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। বাজারে পাঙ্গাশ ও তেলাপিয়া (ছোট) মাছ ২০০-২৩০ টাকা কেজির নিচে বিক্রি হচ্ছে না। চাষের ছোট আকারের পাঙ্গাশ প্রতিকেজি ২০০-২৪০, বড় আকারের পাঙ্গাশ ২৫০-৩০০, বড় তেলাপিয়া ২৪০-৩০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। ছোট আকারের রুই ২৮০-৩০০, মাঝারি আকারের রুই কেজি ৩২০-৪০০ এবং বড় আকারের রুই ৪৫০- ৫০০ টাকা দরে প্রতিকেজি বিক্রি হচ্ছে। কাতল ৪৫০- ৫০০ ও সরপুঁটি ২৫০-৩০০ টাকা কেজিদরে বিক্রি হচ্ছে। নদীর টেংরা, বোয়াল (ছোট), বাইম, চেলা ইত্যাদি মিশাল (মিশ্র) মাছ প্রতিকেজি ৩০০-৪০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
প্রতিকেজি ব্রয়লার মুরগি ২১০-২২০ টাকা, সোনালি মুরগি ৩১০-৩৩০ টাকা। দেশি মুরগি প্রতিপিস ৭০০-১০০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এ ছাড়া গরুর মাংস প্রতিকেজি ৭০০-৭৫০ এবং খাসির মাংস এক হাজার ১০০ থেকে এক হাজার ২০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। ক্রেতা তানজিম আহমেদ, জাহাঙ্গীর আলম, আলিফ, সাব্বিরসহ অনেকেই জানান, সাধ্যের মধ্যে মাছ না পেয়ে মুরগির দাম চড়া দেখে ডিম কিনতে গিয়ে সরকার নির্ধারিত দামের চেয়ে অনেক বেশি হওয়ায় কেউ কিনেছেন। আবার কেউ খালি হাতে ফিরছেন। মাছ-গোশত, সবজি সবকিছুর দামই তাদের ক্রয়সীমার বাইরে। বেশিরভাগ সবজির দাম শতকের উপরে, আবার কোনটি শতকের ঘর ছুঁইছুঁই।
পার্কের বাজারের পাইকারি সবজি ব্যবসায়ী ফজল আলী জানান, দেশের বিভিন্ন স্থানে আকস্মিক বন্যায় শাক-সবজির আবাদ নষ্ট হওয়ায় কৃষক ঠিকমতো যোগান দিতে পারছে না। শাক-সবজি যা পাওয়া যাচ্ছে তা অনেক বেশি দামে কিনতে হচ্ছে। শীত মৌসুমে সবজির দাম কিছুটা কম থাকবে বলে তিনি আশা করছেন। বেসরকারী চাকুরিজীবী আনিস আহমেদ বলেন, এই মুর্হুতে সরকারের উচিত প্রতিদিন বাজার মনিটরিং করা। নামেমাত্র একদিন বাজার মনিটরিং করলে হবে না।

 

 

৪২ Views

শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *