স্টাফ রিপোর্টার ॥
টাঙ্গাইলের মধুপুরে গারো সম্প্রদায়ের অন্যতম উৎসব ওয়ানগালা অনুষ্ঠিত হয়েছে। সমতল এলাকার লাল মাটির বসবাসরত গারো সম্প্রদায়ের লোকেরা এ উৎসব পর্বে অংশ নেয়। খ্রীস্ট ধর্মে দীক্ষিত মান্দিরা জলছত্র কর্পোস ও সেন্ট পৌলস খ্রীস্টি ধর্ম পল্লীতে ওয়ানগালায় নানা পর্বে মেতে ওঠে। সাংসারেক গারোদের রীতি অনুযায়ী নতুন ফসল ঘরে তোলার আগে তাদের শস্য দেবত মিসি শালজং কে উসর্গ থাকে। ফসল ঘরে তোলার আগে কৃষি ফসল তাদের দেবতারকে উৎসর্গ করলে মঙ্গল হবে, সে জন্য তারা প্রতি বছর এ সময়ে ওয়ানগালা উৎসব করে থাকে।
প্রতিবছর অক্টোবর ও নভেম্বর মাসে উৎসবটি নানা আয়োজনের মধ্য দিয়ে আয়োজন করে থাকে। রবিবার (২৪ নভেম্বর) দিনব্যাপী ওয়ানগালা উৎসবের আয়োজন করে মধুপুর জলছত্র কর্পোস খ্রীষ্টি মিশন ও পীরগাছা সেন্ট পৌলস ধর্ম পল্লী। সকালে তাদের পুরোহিতের মাধ্যমে ওয়ানগালার পর্ব শুরু হয়। পরে তাদের আবিমা অঞ্চল মধুপুর লাল মাটি এলাকার উৎপাদিত কৃষি ফসল কুমড়া, লাউ, ধান, আলুসহ নানা ফসল তাদের শস্য মন্ত্র পড়ে উৎসর্গ করে। পরে বিভিন্ন গ্রামের নারী শিশু দল তাদের বৈচিত্র্যময় পোষাক পড়ে সাংস্কৃতিক পর্বে মান্দি গারো নৃত্য পরিবেশন করে। এর আগে সকালে মিশন দুটির গির্জায় মিশা ও গির্জা অনুষ্ঠিত হয়। এ সময় তাদের ছোট-বড় নারী-পুরুষ, শিশু-কিশোরসহ বিভিন্ন বয়সীরা অংশ নেয়।
বেরিবাইদ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সমরেন চিসিম বলেন, তাদের মান্দি ঐতিহ্য অনুসারে ওয়ানগালা হতো এখন খ্রিষ্ট ধর্মে দীক্ষিত হবার পরে তাদের যিশু কে নতুন ফসল উৎসর্গ করার মধ্যে দিয়ে ওয়ানগালা পালন করে থাকে। গায়ড়া গ্রামের তন্দ্রা দালবত বলেন, তার পরিবারের সবাইকে নিয়ে ওয়ানগালায় এসেছে। এটি তাদের আদি ঐতিহ্য। এ অনুষ্ঠানে তাদের নতুন ফসল ঘরে তোলে খাওয়ার আগে তাদের বিশ্বাস মতে উৎসর্গ করলে মঙ্গল হবে। জলছত্র ধর্মপল্লীতে ওয়ানগালায় প্রধান থামাল ছিলেন ফাদার রর্বাট মানখিন।
এ সময় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন জলছত্র কর্পোস সেমিনারের পরিচালক ফাদার সুস্ময় চিসিম, জলছত্র কর্পোস খ্রীস্টি মিশনের পাল পুরোহিত সুভাস কস্তা, কেন্দ্রীয় প্যারিসের ভাইস চেয়ারম্যান সমরেন চিসিম প্রমুখ। প্রাণবন্ত উৎসবমুখর পরিবেশের ওয়ানগালায় বিভিন্ন অঞ্চলের সামাজিক সাংস্কৃতিক সংগঠনের গারো নারী পুরুষ ও শিক্ষার্থীরা অংশ নেয়