স্টাফ রিপোর্টার ॥
এক পাশে রাবার বাগান। আরেক পাশে ক্ষীর নদী। পাশেই শালবন। রাবার বাগান থেকে একটি খাল হাওলার বিলের উত্তরের শেষ মাথায় গিয়ে নিজেকে বিলিয়েছে। মাটির রং লাল। কোথাও পলি। কোথাও একটু হালকা কালচে। বাইদ খালে ধান। উচুতে আনারস কলা পেঁপে হলুন ড্রাগনসহ নানা দেশি-বিদেশি ফল ফসলের বৈচিত্রা। বসতির প্রায় ১৫ আনাই গারো সম্প্রদায়। কয়েক খর কোচ রয়েছে। সামান্য কয়েক পরিবার মুসলিম। বলছিলাম টাঙ্গাইলের মধুপুর উপজেলার সাইনামারি গ্রামের কথা। এটি মূলত মান্দি গ্রাম হিসেবে পরিচিত। উপজেলার এটি। কৃষি এলাকা হিসেবে সাইনামারি একটি উর্বর গ্রাম হিসবে খ্যাত। কুড়াপাড়া ইউনিয়নের সর্ব উত্তরের গ্রাম
সরজমিনে মধুপুর শহর থেকে ১০ কিলোমিটার দূরে সাইনামাতিতে গিয়ে জানা যায়, এ গ্রাম মান্দিদের জীবন-জীবিকা ও কৃষির নানা কথা। ভুটিয়া কাদা আর শুকনো মৌসুমে খুলিবালি। পথচারীদের নিত্যসঙ্গী। শহর থেকে বাইকে আধঘন্টার রাস্তা। প্রথমে কাঁচা সড়ক নিয়ে সাইনমোরি মিশনারি স্কুলে সামনেই কয়েক দোকানের সামনে গিয়ে দেখা। প্রতিটি দোকানের কাস্টমার থেকে সাহনামারি সড়কটি কাঁচা। বর্ষায় বেশির ভাগই গারো মান্দি নারী আর কিছু কৃষক চাষি দেখা যায়। মান্দিয়া ভারা সবাই চাখি। এ গ্রামেই চাষাবাদ করেন। একেক জনের বাড়ি গ্রামে। জমি লিজ নিয়ে আনারস, কলা চাষ করে। তবে চাষিদের নিজস্ব কোনো জমি জিয়াত নেই। আবাদি সবই লিজ বা মেয়াদি হিসেবে চুক্তি নেয়া। কেউ দশ পর্যন্তও নিয়ে থাকে। চাষিরা ৩০ শতক জমি এক বছর চাষের জন্য লিজ নিম্নে দশ থেকে পনের হাজার টাকা পর্যন্ত। জমির মালিক বময়ে চুক্তির টাকা নিয়ে নিচ্ছে শুরুতেই। আর চাষিরা জমি নিয়ে সোনা ফলাচ্ছে।
এমন তথ্য স্থানীয় আর অন্য যাদের দেখা গেল দুই বছর। কেউ তিন, চার এবাবে আট, ফসল। কেউ কেউ কনা পেয়ারা পেঁপে আদা হলুদসহ নানা ফসল। বছরে কোটি কোটি টাকার কৃষি ফসল চাষ হয় এ গ্রামে। যাচ্ছে দেশের বিভিন্ন জেলায়। অর্থনীতির গতি বাড়ছে চাষিদের। খ্যাতি বৈচিত্র্যময় ফসলের চাখে এগিয়ে যাচ্ছে উর্বর কৃষি গ্রাম। প্রতি বছর কোটি কোটি টাকার ফসল বিক্রি হয় এ গ্রামের উৎপাদিত কৃষিপণ্যের। কর্মসংস্থান ও কাজের ক্ষেত্র তৈরি হয়েছে এ গ্রামের নারী-পুরুষের। কৃষি ফসলকে কেন্দ্র করে গড়ে উঠে কুলি-শ্রমিক ও বাইং সমিতিসহ নানা শ্রমজীবী সংগঠন। তাদের রুটিরুজি হচ্ছে কৃষি ফসলকে কেন্দ্র করে। ট্রাকে করে বিভিন্ন জেলায় যাচ্ছে এ গ্রামের কৃষি ফল ফসল জানালেন স্থানীয়রা। সামনে একটু এগিয়ে গেলেই দেখা যায়, কলা আনারসের বামনে। মায়ে গাছে আনারস কলা। মাঝে মাঝে ঘরবাড়ি। বসতিদের প্রায় সবাই গারো মান্দি। তবে বসতি তেমন ঘন নয়। মান্দি গারোদের মধ্যপাড়ার এক বাড়িতে বসে কথা হয় এক চাষি জানান, তিনি স্থানীয় মান্দিদের কাছ চাষ করছে। এ বছর তার প্রায় দুই লাখ আনারস হয়েছে। আনারসগুলো জলডুগি জাতের। তিনি জানান, লিজের টাকা উঠানোর পর তার লাভ ভালো হচ্ছে। এভাবে বিভিন্ন এলাকা থেকে এসে চাষিরা জমি নিয়ে চাষ করছে কৃষি থেকে জমি লিজ নিয়ে কলা আনারস।
এ গ্রামের গারো মান্দি সম্প্রদায়ের নির্বাচিত ইউপি সদস্য লেমন জানালেন, তাদের এলকায় ট্রাক অফিস, কুলি-শ্রমিক ইড়নিয়ন ও বাইং সমিতি গড়ে উঠেছে এ কৃষি। তারমতে, পুরো উৎপাদনকে কেন্দ্র করে। সাইনামারি একটি উর্বর দামও বেড়েছে। বন্যার পানি উঠে না। ফললের তেমন ক্ষতি নেই। বড় ধরণের কোনো ঝড় প্রকৃতিক দুর্যোগ। না হলে কারণে চাষিরা জমি নিয়ে ফসল চাষ করে থাকে।