স্টাফ রিপোর্টার ॥
এবার ফলন ভালো হওয়ায় বাজারে দেশী পেঁয়াজের সরবরাহ বেড়েছে। এছাড়া ভারত, মিসর, মিয়ানমার ও পাকিস্তানি পেঁয়াজ পাওয়া যাচ্ছে বাজারে। কমেছে আলুর দামও। এর ফলে আলু ও পেঁয়াজের বাজারে স্বস্তি ফিরে এসেছে। সপ্তাহের ব্যবধানে ৮০ টাকার পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৫০ টাকায়। দাম আরও কমার কথা জানিয়েছেন বিক্রেতারা। অর্থাৎ প্রায় অর্ধেক দামে বিক্রি হচ্ছে মসলা জাতীয় এই পণ্যটি। এদিকে, পেঁয়াজের বাজারে যখন স্বস্তি, তখন ফের বেড়েছে চাল, মুরগি ও সয়াবিন তেলের দাম। তবে শীতের সবজির দাম কমতির দিকে রয়েছে। এছাড়া আটা, ডাল ও চিনির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।
মঙ্গলবার (৩১ ডিসেম্বর) টাঙ্গাইলের পার্ক বাজার, ছয়আনি বাজার, সিটি মার্কেট, আমিন বাজার থেকে নিত্যপণ্যের দরদামের এসব তথ্য পাওয়া গেছে।
শহরের এসব বাজারের বিক্রেতারা জানান, বর্তমানে বাজারে মুড়িকাটা পেঁয়াজের সরবরাহ বেড়েছে। এর প্রভাবে কমছে সব ধরনের পেঁয়াজের দাম। গত সপ্তাহে প্রতিকেজি মুড়িকাটা পেঁয়াজের দাম ছিল ৮০-৯০ টাকা, যা শুক্রবার ৫০-৫৫ টাকায় বিক্রি হয়। এ ছাড়া সপ্তাহের ব্যবধানে আমদানি করা ও দেশী পুরনো পেঁয়াজেও কেজিতে ৩০ টাকা দাম কমেছে। এক কেজি আমদানি করা পেঁয়াজ ৫০-৫৫ টাকায় ও দেশী পুরনো পেঁয়াজ ৬০-৭০ টাকায় বিক্রি হয়। বাজারে নতুন আলুর সরবরাহ বাড়ায় পণ্যটির দামও কমছে। সপ্তাহের ব্যবধানে নতুন আলুর দাম কেজিতে ১০ টাকা কমেছে। প্রতিকেজি নতুন ও পুরনো আলু ৫০-৬০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। তিন সপ্তাহ আগে এক কেজি আলুর দাম ছিল ৮০ টাকা। আলু ও পেঁয়াজ বিক্রেতা নাজমুল হাসান জানান, সপ্তাহের ব্যবধানে পেঁয়াজের দাম প্রায় অর্ধেকে নেমে এসেছে। প্রতিকেজি পেঁয়াজ ৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। যেভাবে সরবরাহ বাড়ছে তাতে পেঁয়াজের দাম আরও কমবে বলে আশা করা যাচ্ছে। পেঁয়াজের পাশাপাশি আলুর দামও কমেছে। ফলে আলু ও পেঁয়াজে বাজারে ভোক্তাদের স্বস্তি রয়েছে।
এদিকে বাজারে শীতের সবজির সরবরাহ বেড়েছে। এতে প্রায় সব ধরনের সবজির দাম উল্লেখযোগ্য হারে কমেছে। বাজারভেদে প্রতিকেজি শিম ৪০-৫০ টাকা, শালগম ৩০ টাকা, মুলা ২০ টাকা, টমেটো ৭০ থেকে ১০০ টাকা, বেগুন ৪০-৬০ টাকা এবং প্রতিটি ফুলকপি ও বাঁধাকপি ২০-৩০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া এককেজি কাঁচা মরিচের দাম এখন ৬০-৮০ টাকা। এছাড়া লাউ, পেঁপে, পেঁয়াজকলি, বরবটি, মিষ্টিকুমড়া প্রভৃতি সবজির দামও আগের তুলনায় কমেছে।
এছাড়া বাজারে সব ধরনের চালের দাম আরেকদফা বেড়েছে। সরকারি বাজার নিয়ন্ত্রণকারী সংস্থা টিসিবি’র তথ্যমতে প্রতিকেজি মোটা চাল দাম বেড়ে ৫০-৫৫, মাঝারি মানের পাইজাম ও লতা চাল ৫৬-৬৩ এবং সরু চাল ৭০-৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে খুচরা বাজারে। অসাধু ব্যবসায়ীদের কারসাজির কারণে ভরা মৌসুমে চালের দাম কমছে না বলে অভিযোগ রয়েছে। এছাড়া বাজারে চালের সরবরাহ বাড়াতে সরকারি-বেসরকারি পর্যায়ে বিপুল পরিমাণ চাল আমদানি হচ্ছে।
বাজারে হঠাৎ করেই বেড়েছে সব ধরনের মুরগির দাম। দাম বেড়ে প্রতিকেজি ব্রয়লার মুরগি ২০০-২১০, সোনালি মুরগি ৩৩০-৩৫০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। প্রতিকেজিতে ৩০ থেকে ৫০ টাকা দাম বেড়েছে। বিক্রেতারা জানিয়েছেন, শীতকালীন উৎসব বিশেষ করে পিকনিক, বিয়ে-শাদী ও সভা-সেমিনার বেড়ে যাওয়ায় বাজারে মুরগির চাহিদা বেড়েছে। এতে করে দাম বেড়ে যাচ্ছে। এছাড়া হাঁস বিক্রি হচ্ছে বেশি দামে। ৬০০ টাকার নিচে পাতি হাঁস পাওয়া যাচ্ছে না। তবে ফার্মের মুরগির ডিমের দাম কমেছে। এক ডজন ডিম ১৩০-১৩৫ টাকায় বিক্রি হয়েছে। বাজারে দেশী মাছের সরবরাহ বাড়লেও দাম কমেনি। এছাড়া গরু ও খাসির মাংস আগের দামে বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া বোতলজাত সয়াবিন তেলের সরবরাহ সংকট এখনো পুরোপুরি স্বাভাবিক হয়নি। গত (৯ ডিসেম্বর) সয়াবিন তেলের দাম লিটারে আট টাকা বাড়ায় ভোজ্যতেল কোম্পানিগুলো। এরপর দুই সপ্তাহ পার হলেও বাজারে বোতলজাত সয়াবিন তেলের সরবরাহ স্বাভাবিক হয়নি। বিক্রেতারা জানান, কোম্পানিগুলো স্বল্পসংখ্যক বোতলজাত সয়াবিন দিচ্ছে। তবে তা ভোক্তা চাহিদার তুলনায় অনেক কম।
টাঙ্গাইলের বাজারে পেঁয়াজ আলুতে স্বস্তি ॥ বেড়েছে মুরগি সয়াবিনের দাম
৩০ Views