সাদ্দাম ইমন ॥
শৈতপ্রবাহের কারণে আবহাওয়া পরিস্থিতির অবনতি হচ্ছে। এতে কয়েক দিন ধরেই বেড়েছে শীতের তীব্রতা। কাঠখড়ে আগুন ধরিয়ে শীত নিবারণের চেষ্টা করছেন ছিন্নমূল মানুষজন। এদিকে শীত বাড়ায় টাঙ্গাইলে বিক্রি বেড়েছে গরম পোশাকের। সামর্থ্য ও পছন্দ অনুযায়ী শীতের কাপড় কিনতে তাই দোকানগুলোতে ভিড় করছেন বিভিন্ন শ্রেণিপেশার ক্রেতারা।
সরেজমিনে টাঙ্গাইল আদালত প্রাঙ্গনসহ আশপাশের এলাকায় গিয়ে দেখা গেছে, খোলা আকাশের নিচে বসা শীতের পোশাকের দোকানে উপচেপড়া ক্রেতাদের ভিড়। বিভিন্ন এলাকা থেকে আসা ক্রেতারা তাদের চাহিদা, পছন্দ ও সামর্থ্য অনুযায়ী শীতের পোশাক কিনছেন।
সদর উপজেলার ছোট বাসালিয়া গ্রামের বাসিন্দা ফজল হক (৬০) বলেন, কয়েক দিন ধরে খুব ঠান্ডা পড়ছে। সকাল-বিকেল আগুন জ্বালিয়ে পাশে বসে থাকি। পুরোনো যে কাপড় ছিলো তা দিয়ে আর শীত মানে না। সকালে গরম পোশাক কিনতে ডিস্টিকে (জেলা সদর এলাকা) এসেছি। তিন দোকান ঘুরে ৭০০ টাকা দিয়ে একটি জ্যাকেট কিনেছি। আগের তুলনায় দাম একটু বেশি। ঘারিন্দা ইউনিয়নের নওগাঁ গ্রাম থেকে আসা সুফিয়া নামের এক গৃহবধূ বলেন, ঠান্ডা লেগেছে। তাই সদর হাসপাতালে ডাক্তার দেখিয়ে গরম পোশাক কিনতে এসেছি। আমার জন্য সাড়ে ৮০০ টাকা দিয়ে হুডি ও ছেলে মেয়েদের জন্য জ্যাকেট এবং মুজা কিনেছি। শহরের সাবালিয়া এলাকার ওবায়দুল্লাহ বলেন, তীব্র শীতে গত দুইদিন ধরে গোসল করি না। এতে করে শরীর চুলকায়। শীত নিবারণ করার জন্য মোটা ট্রাউজার ও সোইটার কিনছি। বলতে গেলে এই শীতে আমার মতো অনেকের জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে।
টাঙ্গাইল জেলা সদর এলাকার খোলা আকাশের নিচের গরম কাপড়ের ব্যবসায়ী রাশেদ মিয়া বলেন, সাত বছর বিদেশে থেকে দেশে এসেছি। দুই বছর হয়ে গেলো দেশে এসেছি। গত বছর শীতের পোশাকের ব্যবসা করে ভালোই লাভ হয়েছে। গত এক সপ্তাহ ধরে গরম পোশাকের বিক্রি ভালোই হচ্ছে। তবে শীতে নিজেদেরও খুব কষ্ট হচ্ছে। অপর ব্যবসায়ী হুমায়ন শেখ বলেন, আমরা চিটাগাং থেকে গরম কাপড়ের লট এনে বিক্রি করি। আগে যে লট তিন হাজার টাকা দিয়ে কিনতাম, সেটির দাম এখন ১২ হাজার টাকার বেশি। তাই আগের তুলনায় লাভ অনেক কম হয়। এই শীতে কয়েক দিন যাবত আমাদের বিক্রি বেড়েছে প্রায় কয়েক গুণ। ব্যবসায়ী মুছা মিয়া বলেন, সদর এলাকার জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের পাশে ও হ্যালিপ্যাডের সামনে ২০০ ব্যবসায়ী খোলা আকাশের নিচে জ্যাকেট, হুডি, সোয়েটার, মুজা, কম্বলসহ বিভিন্ন গরম কাপড় বিক্রি করেন। অন্যান্য বছরের চেয়ে দাম একটু বেশি হওয়ায় চাহিদা থাকলেও বিক্রি কম হয়। গত কয়েক দিন ধরে বিক্রি কিছুটা বেড়েছে। প্রতিদিন ৩০/৩৫ লাখ টাকার মালামাল বিক্রি হয়ে থাকে।