সখীপুরের দাড়িয়াপুরে ৭৬তম আসর জমে উঠেছে ফাইল্যা পাগলা মেলা

টাঙ্গাইল টাঙ্গাইল স্পেশাল লিড নিউজ সখিপুর

স্টাফ রিপোর্টার ॥
টাঙ্গাইলের সখীপুর উপজেলার দাড়িয়াপুর গ্রামে এতিহ্যবাহী শাহসুফী হযরত ফাঁলুচান চিশতী ওরফে ফাইল্যা পাগলার মেলা জমে উঠেছে। প্রতিবছর বাংলা সনের পৌষ পূর্ণিমা অনুসারে দাড়িয়াপুর গ্রামে এ মেলার আয়োজন করা হয়। এ বছর মেলাটির ৭৬তম আসর শুরু হয়েছে।
গত বুধবার (৮ জানুয়ারি) দিবাগত রাত থেকেই গ্রামীণ ঐতিহ্যবাহী ফাইল্যা পাগলার মেলার কার্যক্রম শুরু হয়। এলাকাবাসীর দাবি, সব শ্রেণি-পেশার মানুষের জন্য এ মেলা মানেই আনন্দ-উল্লাস ও আনন্দে মেতে উঠার দিন। ১৫ দিনব্যাপী আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা থাকলেও এটি চলে মাসব্যাপী। এ মেলার দিনক্ষণ ঠিক হওয়ার আগেই গ্রামের প্রায় সবার বাড়িতে আত্মীয়-স্বজনের উপস্থিতিতে উৎসবমুখর হয়ে উঠে।

 

 

এ মেলার মাধ্যমে বাঙালির পুরোনো সংস্কৃতির ইতিহাস ও ঐতিহ্যের দেখা মিলে। এলাকার প্রবীণ ব্যক্তি জোয়াহেরুল ইসলাম মিয়াচাঁন জানান, শত বছর পূর্বে বাসাইল উপজেলার দেউলি গ্রাম থেকে হযরত ইয়াসিন আলীর অনুসারী ফাঁলু চান নামে এক ব্যক্তি বর্তমান মাজার স্থলে এসে বসবাস শুরু করেন। মৃত্যুর পর তাকে এখানেই সমাহিত করা হয়। এটি মানুষের কাছে ফাইল্যা পাগলার মেলা নামে সর্বাধিক পরিচিত। দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের হাজার হাজার মানুষ ‘মানত’ নিয়ে আসে। মোট কথা এটি সবধর্মের মানুষের মিলনমেলার স্থানে পরিণত হয়।
মেলা উপলক্ষে শিশু-কিশোরদের জন্য হরেক আয়োজন করা হয়। নানা রকমের দোকানের পসরা সাজানো থাকে। এ মেলার বিশেষ আয়োজন বিভিন্ন চিনির তৈরি (কদমা) বাতাসা, জিলাপি ইত্যাদি। এছাড়া উপজেলার বিভিন্ন এলাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে মানতকারী তাদের মানতকৃত মোরগ, খাঁসি, গরু ও সিরনিসহ বিভিন্নরকম পণ্য সামগ্রী নিয়ে নেচে নেচে ঢোল পিটিয়ে “হেল ফাইলা হেল ফাইলা, ফাইলা নাচে না আমি নাচি” এই শব্দে মুখর করে তোলেন। মাঘ মাসের পুরো মাসব্যাপী এ মেলা চললেও মাঘী পুর্নিমার দিন ও এর আগে ও পরের দিন দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে কয়েক লক্ষাধিক ভক্ত ও দর্শকের সমাগম হয়।

 

জানা যায়, বিগত ২০০৩ সালের (১৭ জানুয়ারি) আকস্মিক বোমা হামলার কারণে কয়েক বছর মেলাটির অচলবস্থার পর ফের অসংখ্য ভক্ত, মানতকারী ও দর্শকদের আনাগোনায় পুণরায় প্রাণ ফিরে পেয়েছে মেলাটি। দুটি বোমা বিস্ফোরণে ৮জন নিহত হয়। এছাড়া ১০ জন চোখ, হাত ও পা হারিয়ে গুরুতর আহত হয়েছিলো।
মেলা বাস্তবায়ন কমিটির সভাপতি স্থানীয় বাসিন্দা কবির হোসেন জানান, প্রশাসনের অনুমতিক্রমে মেলা উদযাপনের উদ্দ্যোগ নেওয়া হয়েছে। ঐতিহ্য ধরে রাখতে আমরা এ মেলার আয়োজন করেছি। অনাকাঙ্খিত ঘটনা এড়াতে কমিটির স্বেচ্ছাসেবক ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কাজ করছে। মেলা সম্পূর্ণ সিসি টিভির আওতায় নেয়া হয়েছে।

 

 

 

 

 

 

১৪ Views

শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *