নুর আলম, গোপালপুর ॥
বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদ দেখে, টাঙ্গাইলের গোপালপুর উপজেলার ভুটিয়া গ্রামে বিরল রোগে আক্রান্ত পরিবারের সদস্যরা চিকিৎসার আশ্বাস পেয়েছেন। ঢাকা বিএসএমএমইউ (সাবেক পিজি হাসপাতাল) এর সহযোগী অধ্যাপক (সার্জারি বিভাগ) ডা. বিদ্যুৎ চন্দ্র দেবনাথ বিরল রোগে আক্রান্ত এই পরিবারের সদস্যদের চিকিৎসার দায়িত্ব নেওয়ার আগ্রহ প্রকাশ করেছেন। ডা. বিদ্যুৎ চন্দ্র দেবনাথ মানবিক ডাক্তার হিসাবে পরিচিত।
শনিবার (১১ জানুয়ারি) সকালে ডা. বিদ্যুৎ চন্দ্র দেবনাথে নেতৃত্বে কয়েকজন চিকিৎসক ও মেডিকেল এসিস্ট্যান্টদেররা উপজেলার ভুটিয়া গ্রামের অসুস্থ সেই বাড়িতে যান। সেখানে ওই পরিবারের সদস্যদের খোঁজখবর নেন। বিরল রোগে আক্রান্ত সকলের সাথে আলাদা আলাদা কথা বলেন এবং আর্থিক সহায়তা প্রদান করেন। এ সময় তার সাথে ছিলেন ডা. আনিসুর রহমান, উপজেলা জাসাসের সভাপতি শাহনূর আহমেদ সোহাগ, গণমাধ্যমকর্মী ও স্থানীয় বাসিন্দারা।
এ সময় ডা. বিদ্যুৎ চন্দ্র দেবনাথ বলেন, প্রাথমিকভাবে অল্প বয়সেই রোগাক্রান্ত হতে শুরু করা আমিনুল ইসলাম (১৪), সুমাইয়া খাতুন (১৬) এবং সিফাতকে (২০) তিনি বিনা খরচে বিএসএমএমইউ'তে পরীক্ষা-নিরীক্ষা ও চিকিৎসা করাতে চান। চিকিৎসায় সফলতা পেলে পরিবারে আক্রান্ত অন্যদেরকেও ঢাকায় নিয়ে যাবেন। তিনি আরো বলেন, এই রোগ নিয়ে আমি ইতিমধ্যে বিভিন্ন জায়গায় কথা বলেছি। রোগ নির্ণয় করা গেলে এই পরিবারকে রোগ থেকে মুক্তি দিতে পারবো। এই রোগটি আমার কাছে খুবই বিরল মনে হচ্ছে, রেয়ার ডিজিস। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ হয়তোবা এটাকে থিসিসের পার্ট হিসেবে নিয়ে নিতে পারে।
স্থানীয়রা জানায়, বংশগত অজানা বিরল রোগে আক্রান্ত হয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছেন একই পরিবারের ৬ জন সদস্য। এছাড়া এই রোগে আক্রান্ত হয়ে ওই বংশের বিভিন্ন বয়সের ৯ জন ছেলে ও মেয়ে মানুষ অকাল মৃত্যুবরণ করেছেন। রোগটির কারণে হাত-পাসহ শরীর কাঁপা, হাঁটতে না পারা, ঘাড় সোজা করতে না পারা, লালা পড়া, কথা বলতে না পারাসহ বিভিন্ন প্রতিবন্ধকতার সৃষ্টি হয় আক্রান্তদের শরীরে। টাকা না থাকায় তাদের যেমন হচ্ছে না চিকিৎসা। ঠিক তেমনি পরিবারের আর্থিক উপার্জন করার কেউ না থাকায় প্রতিবেশীদের কাছে চেয়ে নিয়ে অর্ধাহার, অনাহারে দিনাতিপাত করতে হচ্ছে।