মধুপুরে ক্ষুদে বিজ্ঞানীদের আবিষ্কার বিজ্ঞান মেলা ও পিঠা উৎসব

টাঙ্গাইল মির্জাপুর শিক্ষা

হাবিবুর রহমান, মধুপুর ॥
শীতের হালকা কুয়াশা। রোদের দেখা নেই এবেলায়। ঘড়ির কাটায় সময় তখন সকাল দশটা। এক পাশে রিকসা বাইকে বাহনের সাইরেন শব্দ। দুপাশে ইমরাতে গড়া।পশ্চিম দিকে হিমেল বাতাস বইছে। কয়েক দিনের চেয়ে হিম হিম ভাব জমেছে প্রকৃতিতে। এমনি সময়ে সারা দেশের ন্যায় লাল মাটির মধুপুর অঞ্চলের উপজেলা পরিষদ চত্বরে চলছে বিজ্ঞান মেলা ও পিঠা উৎসব।
বাম পাশের একটি স্টলে কয়েকজন মান্দি গারো সম্প্রদায়ের ক্ষুদে শিক্ষার্থীদের দেখা যায়। তারা জলছত্র কর্পোস খ্রীস্টি উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী। বিজ্ঞান মেলায় এসেছে স্কুলের হয়ে। টেবিলে সাজানো একটি মানচিত্রে শহর গ্রামের দৃশ্য। স্টলের সামনে গিয়ে দাঁড়ালে ক্ষুদের বিজ্ঞানীরা একটি লাইট আর তারের সাহায্যে দেখালেন তাদের আবিষ্কার। দশম শ্রেনীর বিজ্ঞানের ছাত্র পূর্ণ মৃ তার বিহীন বিদ্যুৎ পরিসেবা বিষয়ে তাদের প্রেজেন্টেশন উপস্থাপন করে দেখালেন। নিরাপদ কম ঝুঁকি সম্পন্ন পরিসেবার বিভিন্ন দিক।
এভাবে টাঙ্গাইলের মধুপুর উপজেলায় বুধবার (২২ জানুয়ারি) শহীদ স্মৃতি, ধলপুর, শোলাকুড়ি, চাপড়ী, গাংগাইর উচ্চ বিদ্যালয়সহ বিভিন্ন স্কুল-কলেজ ও মাদরাসা অংশ নিয়েছে এ মেলায়। প্রতিটি প্রতিষ্ঠানের আয়োজন আবিস্কার ছিল দারুন। ক্ষুদে বিজ্ঞানীদের এমন আবিস্কার চিন্তা উপভোগ করেছে মেলার আগত দর্শনার্থীরা।একই মাঠেই ছিল পিঠা উৎসবের আয়োজন। গ্রাম বাংলা ও আধুনিক পিঠা পুলির আয়োজনে মুগ্ধ ছোট বড় দর্শকরা। নকশীকাঁথাসহ অন্যান্য সেবা সামগ্রীর ছিল মেলার বাড়তি আর্কষণ।
টাঙ্গাইলের মধুপুর উপজেলায় চলমান তারুণ্য উৎসবে যুক্ত হওয়া ৪৬তম জাতীয় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সপ্তাহ। “জ্ঞান বিজ্ঞানে করবো জয়, সেরা হবো বিশ্বময়” প্রতিপাদ্যে উপজেলা প্রশাসন দুইদিনের বিজ্ঞান প্রযুক্তি মেলা এবং সাথে পিঠা উৎসবের আয়োজন করেছে। গ্রামবাংলার ঐতিহ্য টিকিয়ে রাখার প্রয়াসে এ যৌথ আয়োজন ছিল এমন।

 

 

বুধবার (২২ জানুয়ারি) উপজেলা পরিষদ চত্বরে মধুপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জুবায়ের হোসেন বেলুন উড়িয়ে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি এবং পিঠা উৎসবের উদ্বোধন করেন। এ সময় তিনি উপজেলার বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে গঠিত বিজ্ঞান ক্লাবের সংশ্লিষ্ট শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের পরিচয়পত্র প্রদান করন। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) রিফাত আনজুম পিয়া। উদ্বোধনী পর্বে শিশু শিক্ষার্থীরা নৃত্য পরিবেশনের পর আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করে অতিথিরা মেলায ক্ষুদে বিজ্ঞানীদের বৈজ্ঞানিক ডিসপ্লে এবং পিঠার স্টল পরিদর্শন করে। মেলার ২২টি স্টলে এসব প্রদর্শিত হচ্ছে। বৃহস্পতিবার (২৩ জানুয়ারি) শেষ হয় দুই দিনব্যাপী এই মেলা।
এর আগে মেলার অনুষ্ঠানের আলোচনা পর্বে সভাপতিত্ব করেন মধুপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জোবায়ের হোসেন। একাডেমিক সুপার ভাইজার মহিউদ্দিন আহমেদের সঞ্চালনায় সহকারী কমিশনার (ভূমি) রিফাত আনজুম পিয়া, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি ক্লাবের সভাপতি ফজলুল হক, মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা শহিদুর রহমান, শহীদ স্মৃতি উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের অধ্যক্ষ নিতাই চন্দ্র কর, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতা সবুজ মিয়া, নাঈম প্রমুখ বক্তৃতা করেন। অনুষ্ঠানে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক শিক্ষার্থী, সরকারি দপ্তরের কর্মকর্তা, সামাজিক, সাংস্কৃতিক সংগঠনের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।
নতুন বাংলাদেশ গঠনের লক্ষ্যে তরুণ সমাজকে জ্ঞানচর্চায় উদ্বুদ্ধ এবং তাদের উদ্ভাবনী ক্ষমতাকে বিকশিত করার সুযোগ সৃষ্টিতে বর্তমান অন্তর্র্বতীকালীন সরকারের নির্দেশে এ মেলার আয়োজন বলে জানিয়েছেন আয়োজকরা।

 

১৮ Views

শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *