টাঙ্গাইল আইনজীবী সমিতির নির্বাচনে আ.লীগ ও জাপা সমর্থিতদের মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার

টাঙ্গাইল টাঙ্গাইল সদর রাজনীতি লিড নিউজ

আদালত সংবাদদাতা ॥
টাঙ্গাইল জেলা আইনজীবী সমিতির নির্বাচনে আওয়ামী লীগ ও জাতীয় পার্টি সমর্থিত প্রার্থীরা মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেছেন। ফলে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হতে যাচ্ছে বিএনপি সমর্থিত আইনজীবীদের প্যানেল। মনোনয়ন প্রত্যাহার করা প্রার্থীরা কারণ হিসেবে উদ্ভূত পরিস্থিতি, পারিবারিক ও অসুস্থতার কথা উল্লেখ করেছেন।
আওয়ামী আইনজীবী পরিষদের নেতারা অভিযোগ করেছেন, মঙ্গলবার (২৮ জানুয়ারি) বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতারা আদালতে এসে প্রার্থীদের কাছে নির্বাচন না করার বার্তা পাঠিয়েছিলেন। তাই তাঁরা বুধবার (২৯ জানুয়ারি) মনোনয়ন প্রত্যাহারের মধ্য দিয়ে নির্বাচন থেকে সরে গেছেন। বৃহস্পতিবার (৩০ জানুয়ারি) এ নির্বাচনের মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষ দিন ছিল।
আগামী (২০ ফেব্রুয়ারি) নির্বাচনে ভোট গ্রহণের তারিখ। গত (২৩ থেকে ২৭ জানুয়ারি) পর্যন্ত সভাপতি সাধারণ সম্পাদকসহ ১৩টি পদে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার তারিখ ছিল। বিএনপি সমর্থিত আইনজীবীরা পূর্ণ প্যানেল জমা দিয়েছেন। অন্যদিকে পদ বণ্টন নিয়ে আওয়ামী লীগ ও জাতীয় পার্টি সমর্থিত আইনজীবীদের মধ্যে বিভক্তির সৃষ্টি হয়। এক পক্ষ ওয়ারেছ আলী খান নান্নুকে সভাপতি ও মীর মাহফুজুল ইসলাম শামীমকে সাধারণ সম্পাদক করে ১২টি পদে মনোনয়নপত্র জমা দেয়। অপরপক্ষ শামসুদ্দীনকে সভাপতি ও মহিউদ্দিন মিয়া মামুনকে সাধারণ সম্পাদক করে ছয়টি পদে মনোনয়নপত্র জমা দেয়। যাচাইবাছাই শেষে গত (২৮ জানুয়ারি) বৈধ প্রার্থীদের নাম নির্বাচন কমিশন ঘোষণা করে।

 

আইনজীবীদের একটি সূত্র জানায়, মঙ্গলবার (২৮ জানুয়ারি) বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কিছু নেতাকর্মী আদালত এলাকায় গিয়ে বিএনপি সমর্থিত কিছু আইনজীবী নেতার সঙ্গে কথা বলেন। তাঁদের মাধ্যমে বৈষম্যবিরোধীরা জানিয়ে দেন যে আওয়ামী লীগ সমর্থিতরা এবার নির্বাচনে অংশ নিক, তা তাঁরা চান না। এ বার্তা পাওয়ার পর আওয়ামী লীগ-জাতীয় পার্টি সমর্থিতদের প্রার্থীরা মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত নেন। বুধবার (২৯ জানুয়ারি) বিকেলের মধ্যে তাঁরা মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেন।
এ বিষয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের টাঙ্গাইলের অন্যতম সমন্বয়কারী আল আমিন বলেন, শুধু তাঁরা নন, আওয়ামী লীগ নির্বাচনে অংশ নিক, বিএনপি-জামায়াত কেউ চায় না।
প্রধান নির্বাচন কমিশনার মোনায়েম হোসেন খান আলম জানান, মনোয়নয়পত্র প্রত্যাহারকারীরা কারণ হিসেবে কেউ দেখিয়েছেন পারিবারিক, কেউ অসুস্থতা আবার কেউ কেউ উদ্ভূত পরিস্থিতির কথা উল্লেখ করেছেন। মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের ফলে বিএনপি ও জামায়াত সমর্থিত জহুর আজহার খান এবং এ কে এম রফিকুল ইসলাম রতনে নেতৃত্বাধীন প্যানেলের বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় বিজয়ের সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। এ বিষয়ে নির্বাচন কমিশনের অন্য সদস্যদের সঙ্গে সভা করে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
টাঙ্গাইল জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি ও আওয়ামী সমর্থিত জ্যেষ্ঠ আইনজীবী এ কে এম শামীমুল আক্তারের এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।
মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করা একাধিক প্রার্থীরা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, নির্বাচন থেকে সরে না গেলে তাঁদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন মামলা করাসহ নানাভাবে হয়রানি করা হবে বলে হুমকি দেওয়া হয়েছিল। তাই হয়রানি এড়াতে তাঁরা নির্বাচন না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।

Views

শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *