
স্টাফ রিপোর্টার ॥
টাঙ্গাইলের মির্জাপুর পৌরসভার বিভিন্ন সড়কের গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টগুলোতে স্থাপিত ২৮টি ক্লোজড সার্কিট (সিসি) ক্যামেরার প্রতিটিই বিকল হয়ে পড়েছে। ফলে এসব এলাকায় অপরাধ সংগঠিত হওয়ার পর অপরাধী শনাক্তে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে বেগ পেতে হচ্ছে। এই সুযোগে বিভিন্ন অপরাধমূলক কাজ করে যাচ্ছে দুষ্কৃতিকারীরা। শুধু অপরাধী শনাক্ত কিংবা রহস্য উদঘাটন করার ক্ষেত্রেই নয়, অপরাধ নিয়ন্ত্রণের ক্ষেত্রেও সিসি ক্যামেরার ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ বলে জানান পুলিশ ও অপরাধ বিশ্লেষকরা।
মির্জাপুর পৌরসভা ও থানা সূত্রে জানা যায়, বিগত ২০১৮ সালের দিকে মির্জাপুর পৌরসভার উদ্যোগে পৌরসভার বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে বিশেষ করে সড়কের মোড়, ইন্টারসেকশন, প্রবেশ-বাহির পথ গুরুত্বপূর্ণ স্থানে ২৮টি সিসি ক্যামেরা স্থাপন করা হয়। এসব ক্যামেরার পর্যবেক্ষণ করা হয় মির্জাপুর থানার একটি নিয়ন্ত্রণকক্ষ থেকে। এছাড়া বিভিন্ন এলাকার বাসাবাড়ি, ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের মালিক, সমিতি কিংবা সংগঠনের পক্ষ থেকেও নিজেদের নিরাপত্তার স্বার্থে নিজ উদ্যোগে সিসি ক্যামেরা স্থাপন করা হয়।
জানা গেছে, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় শহরের বিভিন্ন এলাকার বেশ কিছু সিসি ক্যামেরা নষ্ট করে দুর্বৃত্তরা। সরেজমিনে শহরের বিভিন্ন সড়ক ঘুরে দেখা গেছে পৌরসভার পক্ষ থেকে স্থাপন করা প্রতিটি সিসি ক্যামেরা বিকল হয়ে পড়ে আছে। এরমধ্যে শহরের গুরুত্বপূর্ণ ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের মির্জাপুর বাইপাসের নতুন স্টেশন ও পুরাতন বাসস্ট্যান্ড এলাকায় স্থাপিত সিসি ক্যামেরা গত জুলাই-আগস্টে ধ্বংস করা হয়। আরও জানা গেছে, গত ফেব্রুয়ারি মাসে মহাসড়কের মির্জাপুর নতুন বাসস্ট্যান্ড এলাকায় একটি ও নভেম্বর মাসে দুটি হত্যার ঘটনা ঘটে। কিন্ত সিসি ক্যামেরা বিকল থাকায় ওইসব খুঁনের রহস্য উদঘাটনে পুলিশকে বেগ পেতে হচ্ছে বলে জানা গেছে।
পুলিশ জানায়, চুরি, ডাকাতি, ছিনতাই ও খুঁনসহ যে কোন অপরাধ সংগঠিত হওয়ার পর ওই এলাকায় সিসি ক্যামেরা থাকলে অপরাধী শনাক্তের ক্ষেত্রে প্রয়োজন হলে এসব ক্যামেরার ফুটেজ সংগ্রহ করা হয়ে থাকে। কিন্ত সিসি ক্যামেরাগুলো বিকল থাকায় তারা সেই সুবিধা পাচ্ছেন না।
মির্জাপুর বাজার বণিক সমিতির সভাপতি গোলাম ফারুক সিদ্দিকী বলেন, পৌর শহরের দুইপাশে রয়েছে ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়ক ও রেল স্টেশন। নানা কারণে জনবহুল এই শহরে অপরাধ প্রবণতা বেশি। তিনি বলেন, ডিজিটাল যুগে সিসি ক্যামেরার এমন দশার পেছনে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের সদিচ্ছাই দায়ী। গুরুত্বপূর্ণ সড়কসহ বিভিন্ন স্থাপনা ঘিরে সার্বক্ষণিক সিসি ক্যামেরার আওতায় আনা জরুরি। অন্যথায় অপরাধীরা অপরাধ করে পার পেয়ে যাবে বলে তিনি মনে করেন।
এ বিষয়ে মির্জাপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোশারফ হোসেন বলেন, ক্যামেরাগুলো সচল না থাকায় অপরাধ সংগঠিত হওয়ার পর অপরাধী শনাক্তে পুলিশকে বেগ পেতে হচ্ছে। ক্যামেরাগুলো সচল করতে পৌর প্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহী অফিসারের নিকট লিখিত আবেদন করা হয়েছে বলে তিনি জানান।
মির্জাপুর পৌর প্রশাসক উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মাসুদুর রহমান জানান, বিকল সিসি ক্যামেরার বিষয়ে ওসি সাহেব তাকে অবগত করেছেন। সিসি ক্যামেরা সচল করতে দ্রুত উদ্যোগ গ্রহণ করা হবে বলে তিনি জানিয়েছেন।