টাঙ্গাইলে আওয়ামী লীগ অফিস ও নেতাদের বাড়িতে ভাংচুর অগ্নিসংযোগ ও লুটপাট

টাঙ্গাইল টাঙ্গাইল সদর রাজনীতি লিড নিউজ

হাসান সিকদার ॥
টাঙ্গাইল জেলা আওয়ামী লীগের প্রয়াত সভাপতি ও জেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ফজলুর রহমান খান ফারুকের বাড়ি বুলডোজার দিয়ে সামনের অংশ গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। পরে বাড়িটিতে লুটপাট চালানো হয়। লুটপাট চালিয়ে বাড়ির ভেতরে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। এর আগে বৃহস্পতিবার (৬ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে একদল বিক্ষুব্ধ ছাত্র-জনতা টাঙ্গাইল শহরের প্রধান সড়কে অবস্থিত আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে ভাঙচুর চালায় ও বুলডোজার দিয়ে গুঁড়িয়ে দেয়। এছাড়াও জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও পৌরসভার সাবেক মেয়র জামিলুর রহমান মিরনের বাড়িতেও ভাংচুর চালিয়ে আসবাবপত্রসহ সব কিছু লুট করে নিয়ে যায়।
জানা গেছে, ঢাকার ধানমন্ডি ৩২ নম্বর বাড়ি ভাংচুরের পরেই ফেসবুক পেজে টাঙ্গাইলের ছাত্র জনতা টাঙ্গাইল জেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয় গুঁড়িয়ে দেওয়ার ঘোষনা দেয়। বৃহস্পতিবার (৬ ফেব্রুয়ারি) বেলা সাড়ে তিনটার দিকে ছাত্র জনতা শহরের মেইন রোডে অবস্থিত আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে আসার আহবান জানানো হয়। বিকাল চারটার দিকে বুলডোজার নিয়ে এসে আওয়ামী লীগ কার্যালয় গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়। বিপুল সংখ্যক ছাত্র-জনতা আওয়ামী লীগ ও শেখ হাসিনা বিরোধী বিভিন্ন স্লোগান সহকারে আওয়ামী লীগের কার্যালয়ের সামনে সমবেত হন। পরে ভেকু দিয়ে দলীয় কার্যালয়টি গুঁড়িয়ে দেন। এ সময় ছাত্র প্রতিনিধি মারিয়ান মুকাদ্দাস মিষ্টিকে ভেকুর ওপর বসে থাকতে দেখা যায়। এছাড়াও ঘটনাস্থলের পাশেই বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের টাঙ্গাইলের অন্যতম সমন্বয়কারী আল আমিনকে দেখা গেছে।

এদিকে, কার্যালয়টি ভাঙার পর সেখানে থেকে বিক্ষুব্ধরা একুশে পদকপ্রাপ্ত বীর মুক্তিযোদ্ধা জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাবেক এমপি প্রয়াত ফজলুর রহমান খান ফারুকের বাসাও ভাঙচুর করে। ফজলুর রহমান খান ফারুকের থানাপাড়ার নিজ বাড়িতে বুলডোজার দিয়ে সামনের অংশ গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়। চালানো হয় ব্যাপক ভাংচুর, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগ। এ সময় বাসার ভেতর থেকে যে যার মতো সব কিছু লুটপাট করে নিয়ে যায়। ঘণ্টাখানেক সেখানে ভাঙচুরের পর তারা সন্ধ্যায় চলে যায় জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও পৌরসভার সাবেক মেয়র জামিলুর রহমান মিরনের বাড়িতে। সেখানেও বাড়ির ভেতরে ঢুকে ব্যাপক ভাংচুর ও লুটপাট করা হয়। এ সময় তারা নারায়ে তাকবির আল্লাহ আকবার ধ্বনি দেয়। এছাড়াও শেখ হাসিনা ও আওয়ামী লীগের নেতাদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন স্লোগান দেয়।
ছাত্র প্রতিনিধি মারিয়ান মুকাদ্দাস মিষ্টি বলেন, আমরা টাঙ্গাইলে আওয়ামী লীগের কোনও অফিস রাখবো না। এখন আওয়ামী লীগ অফিস ভেঙেছি। আওয়ামী লীগের যত নেতা আছে, তাদের বাসাও ভাঙবো। অপর ছাত্র প্রতিনিধি মেহেদি হাসান রিফাত বলেন, যারা আওয়ামী ফ্যাসিবাদের দোসর ছিল। এই টাঙ্গাইলকে শাসন করে গেছে তাদের এবং আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের অফিসও ভেঙে ফেলবো। ফ্যাসিবাদের কোনও আস্তানাই বাংলায় রাখবো না।
প্রয়াত ফজলুর রহমান খান ফারুক টাঙ্গাইল-৭ (মির্জাপুর) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক খান আহমেদ শুভর পিতা। এদিকে ভাংচুর লুটপাট ও অগ্নিসংযোগ করা হলেও আইনশৃংখলা বাহিনীর কোন সদস্যকে ঘটনাস্থলে বাধা দিতে দেখা যায়নি। খবর শুনে তারা কেউ ঘটনাস্থলেও আসেনি।
এ বিষয়ে টাঙ্গাইল সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তানভীর আহমেদ বলেন, আমরা ভাঙচুরের খবর শুনেছি। কিন্তু নিজেদের নিরাপত্তাজনিত কারণে ঘটনাস্থলে যাইনি।

৭৫ Views

শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *