
স্টাফ রিপোর্টার, নাগরপুর ॥
টাঙ্গাইলের নাগরপুরে পরিবারের বোঝা মনে করে জয়নব ওরফে জয়না (৬৮) নামের এক অন্ধ বৃদ্ধাকে পরিবারের লোকজন মিলে শ্বাসরোধে হত্যা করেছে। শুক্রবার (৭ ফেব্রুয়ারি) রাতে উপজেলার মোকনা ইউনিয়নের পাড় গাজুটিয়া গ্রামে নৃশংস ঘটনাটি ঘটেছে। নিহত জয়না বেগম ওই গ্রামের শওকত আলীর স্ত্রী। পুলিশ এই হত্যাকান্ডে জড়িত পুত্রবধু শাহনাজ আক্তার বেবি (৪৫), ছেলে মোশারফ হোসেন মামুন (৪৭) ও স্বামী শওকত আলীকে (৭০) গ্রেফতার করেছে।
হত্যা ও গ্রেফতারের বিষয়টি নিশ্চিত করে নাগরপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) রফিকুল ইসলাম বলেন, হত্যার বিষয়ে পুত্রবধু শাহনাজ আক্তার বেবি আদালতে ফৌঃ কাঃ বিঃ ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। অপর আসামী স্বামী শওকত আলী ও ছেলে মোশারফ হোসেন মামুনকে ৫ দিনের রিমান্ড আবেদনসহ আদালতে সোপর্দ করা হয়। শুনানি শেষে আদালত তাদের ২ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন।
পুলিশ সূত্রে জানা যায়, গত (৭ ফেব্রুয়ারি) রাতে ৯৯৯ থেকে জানানো হয় মোকনা ইউনিয়নের পাড় গাজুটিয়া গ্রামে একজন অন্ধ বৃদ্ধা আত্মহত্যা করেছে। ফোন পেয়ে নাগরপুর থানার ওসি অন্যান্য সদস্য নিয়ে ঘটনাস্থলে পৌছান। লাশের সুরতহাল শেষে এটি আত্মহত্যা নয় বলে সন্দেহ হলে প্রাথমিক তদন্ত শুরু করে পুলিশ। পুত্রবধু শাহনাজ আক্তার বেবিকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হলে তার কথায় সন্দেহ জোড়াল হয়। পুলিশ আশপাশের জায়গায় তল্লাশি চালায়। এক পর্যয়ে পুত্রবধু শাহনাজ আক্তার বেবির ঘরের পিছনে পরিত্যক্ত কোয়া থেকে হত্যাকান্ডে ব্যবহৃত কালো রঙের রশি উদ্ধার করে।
নির্মম এ ঘটনায় প্রকৃত হত্যাকারীদের গ্রেফতারে শনিবার (৮ ফেব্রুয়ারি) রাতে অভিযান চালিয়ে পুত্রবধুসহ ৩ জনকে আটক করে পুলিশ। থানায় প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে শ্বাসরোধ করে হত্যার বিষয়টি স্বীকার করেন পুত্রবধু শাহনাজ আক্তার বেবি। এলাকাবাসী জানান, বৃদ্ধা জয়না চোখে দেখতেন না। এমনকি ঠিকমত চলাফেরাও করতে পারতেন না। অন্ধ জয়নবকে বোঝা মনে করত তার পরিবার।
এ বিষয়ে নাগরপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) রফিকুল ইসলাম বলেন, ৯৯৯ এর ফোন পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌছাই। লাশ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসি। হত্যাকান্ডে জড়িত সন্দেহে ৩ জনকে গ্রেফতার করে ৫ দিনের রিমান্ড চেয়ে টাঙ্গাইল আদালতে প্রেরণ করা হয়। এদের মধ্যে পুত্রবধু আদালতে হত্যার দায় স্বীকার করেছে।