
স্টাফ রিপোর্টার ॥
টাঙ্গাইলের মধুপুরে লালন স্মরণোৎসব করতে শুক্রবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) রাতে বিভিন্ন পক্ষকে নিয়ে ইউএনও কার্যালয়ে সমঝোতা বৈঠকের আয়োজন করে মধুপুর উপজেলা প্রশাসন। টাঙ্গাইলের মধুপুর উপজেলার দুই সংগঠনের বাধার মুখে স্থগিত হওয়া লালন স্মরণোৎসব ২০২৫ আগামী (২৩ ফেব্রুয়ারি) অনুষ্ঠিত হবে। শনিবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে অনুষ্ঠান উদ্যাপন কমিটির আহ্বায়ক সবুজ মিয়া এ তথ্য জানান।
এর আগে গত বুধবার (১২ ফেব্রুয়ারি) অনুষ্ঠানটি মধুপুর বাসস্ট্যান্ডে হওয়ার কথা ছিল। হেফাজতে ইসলাম ও কওমি ওলামা পরিষদের মধুপুর শাখার নেতাকর্মীদের বাধার মুখে ওই অনুষ্ঠান স্থগিত হয়। এ নিয়ে সমালোচনা হয়। পরে উপজেলা প্রশাসন বিভিন্ন পক্ষের সঙ্গে বসে বিষয়টি সমাধানের উদ্যোগ নেয়। এ নিয়ে শুক্রবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) রাতে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) কার্যালয়ে এক সমঝোতা বৈঠকের আয়োজন করা হয়। বৈঠকে লালন স্মরণোৎসব আগামী (২৩ ফেব্রুয়ারি) মধুপুর মিলনায়তনে করার সিদ্ধান্ত হয়। তবে শর্ত দেওয়া হয়, অনুষ্ঠানে ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত লাগে এমন বক্তব্য বা গান গাওয়া যাবে না।
বৈঠকে মধুপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) জুবায়ের হোসেন, সেনাক্যাম্প কমান্ডার মেজর শোয়েব, উপজেলা বিএনপির সভাপতি জাকির হোসেন সরকার, মধুপুর লালন সংঘের সভাপতি ফরহাদ হোসেন তরফদার, সাধারণ সম্পাদক গৌতম চন্দ্র সাহা, অনুষ্ঠান উদ্যাপন কমিটির আহ্বায়ক সবুজ মিয়া, হেফাজতে ইসলামের উপজেলা সভাপতি মুফতি আনোয়ার হোসেন, সাধারণ সম্পাদক মাওলানা মাহমুদুল্লাহ, কারি মোদাচ্ছের হোসেন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
লালন স্মরণোৎসব উদ্যাপন কমিটির আহ্বায়ক সবুজ মিয়া বলেন, লালন সাঁইজির ১৩৪তম তিরোধান বর্ষ উপলক্ষে মধুপুর লালন সংঘ গত (১২ ফেব্রুয়ারি) লালন স্মরণোৎসব ২০২৫ আয়োজন করে। কয়েকটি ইসলামি দলের বাধায় অনুষ্ঠান স্থগিত করা হয়। এরপর বিষয়টি নিয়ে গণমাধ্যমে প্রতিবেদন প্রকাশিত হলে উপজেলা প্রশাসন ও মধুপুরের সেনাক্যাম্পের দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তিরা বিষয়টি সমাধানের উদ্যোগ নেন। উভয়পক্ষের উপস্থিতিতে সমঝোতার মাধ্যমে আগামী (২৩ ফেব্রুয়ারি) অনুষ্ঠান আয়োজনের সিদ্ধান্ত হয়েছে। এতে মধুপুর হেফাজতে ইসলাম প্রতিশ্রুতি দেয়, অনুষ্ঠান আয়োজনে তারা কোনো বাধা দেবে না। মধুপুর লালন সংঘ থেকে বিতর্কিত বক্তব্য, মতবাদ, তথ্য ও সংগীত উপস্থাপিত হবে না মর্মেও প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছে।
মধুপুর উপজেলা হেফাজত ইসলামের সাধারণ সম্পাদক মাওলানা মাহমুদুল্লাহ বলেন, ইউএনও অফিসে আয়োজকদের সঙ্গে শুক্রবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) রাতে বৈঠক হয়েছে। সেখানে আমরা জানিয়েছি, ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত লাগে এমন কোনো বক্তব্য বা গান যাতে পরিবেশন না করা হয়।
এ বিষয়ে মধুপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) জুবায়ের হোসেন বলেন, কয়েকটি সংগঠনের আপত্তির মুখে আয়োজকেরা অনুষ্ঠান স্থগিত করছিলেন। পরে শুক্রবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) উভয়পক্ষকে নিয়ে তাঁরা বৈঠক করেন। সেখানে আগামী রোববার (২৩ ফেব্রুয়ারি) লালন উৎসবের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। যারা আগে অনুষ্ঠান আয়োজনে আপত্তি জানিয়েছিলেন, তাঁরাও মেনে নিয়েছেন। তাঁরা আয়োজকদের ধর্মবিরোধী কোনো বক্তব্য যেন না দেওয়া হয়, সেটি নিশ্চিত করতে বলেছেন।