মির্জাপুরে বাসে ডাকাতির ঘটনায় ৩ জন গ্রেপ্তার

টাঙ্গাইল মির্জাপুর লিড নিউজ

স্টাফ রিপোর্টার,মির্জাপুর।।
টাঙ্গাইলের মির্জাপুরে চলন্ত বাসে ডাকাতি ও নারী যাত্রীদের শ্লীলতাহানির ঘটনায় মামলা নেয়ার ২৪ ঘন্টার মধ্যে ডাকাতির সঙ্গে জড়িত ৩ ডাকাতকে গ্রেপ্তার করেছে টাঙ্গাইল গোয়েন্দা পুলিশ। শুক্রবার বিকেলে সাভার মডেল থানার গেন্ডা এলাকা থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। গুপ্তচরের তথ্য ও তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। এসময় তাদের কাছ থেকে ডাকাতি হওয়া তিনটি মোবাইল ফোন সেট, নগদ ২৯ হাজার ৩৭০ টাকা ও ডাকাতির কাজে ব্যবহৃত একটি ছুরি উদ্ধার করা হয়। গ্রেফতাকৃত ডাকাতরা আন্তঃ জেলা ডাকাত দলের সক্রিয় সদস্য।
শনিবার (২২ ফেব্রুয়ারি) সকালে পুলিশ সুাপারের কার্যালয়ে এক প্রেস ব্রিফিং-এ টাঙ্গাইলের পুলিশ সুপার মো. মিজানুর রহমান এসব তথ্য জানান।
গ্রেপ্তারকৃত তিন ডাকাত হলেন মানিকগঞ্জ জেলার দৌলতপুর উপজেলার লাউতারা গ্রামের মো.বদর উদ্দিন শেখের ছেলে মো.শহিদুল ইসলাম ওরফে মহিদুল ওরফে মুহিদ (২৯), শরীয়তপুর জেলার জাজিরা থানার রামকৃষ্ণপুর গ্রামের ইসমাইল মোল্লার ছেলে মো.সবুজ (৩০) ও ঢাকা জেলার সাভার থানার ৯নং ওয়ার্ড টান গেন্ডা গ্রামের আবুল হোসেনের ছেলে শরীফুজ্জামান ওরফে শরীফ (২৮)।
গ্রেফতারকৃত শহিদুল ইসলাম ওরফে মহিদুল ওরফে মুহিত (২৯) এর বিরুদ্ধে সিরাজগঞ্জ জেলার উল্লাপাড়া থানায় ১টি, ঢাকা জেলার সাভার মডেল থানায় ১টি বাস ডাকাতি মামলাসহ মোট ৫টি মামলা রয়েছে। ঘটনার সাথে জড়িত ডাকাত দলের অন্য সদস্যদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে। গ্রেপ্তারকৃতদের আদালতে পাঠানোর প্রক্রিয়া চলছে বলে পুলিশ সুপার জানিয়েছেন।
টাঙ্গাইল গোয়েন্দা পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) আহসান জানান, গ্রেপ্তারকৃতদের মধ্যে সবুজ ও শরীফ ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছেন। তারা আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয়ার কথা স্বীকার করেছেন। অপর আসামী শহিদুল ইসলাম ওরফে মহিদুল ওরফে মুহিদকে আরও জিঞ্জাসাবাদের প্রয়োজন থাকায় তাকে ৫ দিনের রিমান্ডের আবেদন করে আদালতে পাঠানো হবে বলে তিনি জানিয়েছেন।
গত ১৮ ফেব্রæয়ারি রাত অনুমান ০১.৪৫ মিনিট থেকে রাত অনুমান ০৪.০০ ঘটিকা পর্যন্ত ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কে ঢাকা-রাজশাহী পথের ইউনিক রোড রয়েলস্ পরিবহনের একটি বাসে ডাকাতি ও নারী যাত্রীদের শ্লীলতাহানীর ঘটনা ঘটে। ঘটনার তিন দিন পর শুক্রবার ভোরে মির্জাপুর থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে একটি মামলা হয়। ডাকাতদের কবলে পড়া ওমর আলী নামের এক যাত্রী বাদী হয়ে মির্জাপুর থানায় মামলা দায়ের করেন। মির্জাপুর থানার মামলা নং- ১৭(০২)২৫।
ওমর আলীর বর্ণনামতে, সোমবার ১৭ ফেব্রæয়ারি রাত ১১টার দিকে ঢাকার গাবতলী থেকে ইউনিক রোড রয়েলস্ পরিবহনের বাসটি ছেড়ে আসে। সাড়ে ১২টার দিকে ডাকাতেরা অস্ত্রের মুখে যাত্রীদের জিম্মি করে। পরে তারা কয়েকজনকে জখম করে ডাকাতি শুরু করে। প্রায় তিন ঘণ্টা ধরে বাসটি বিভিন্ন স্থান ঘুরিয়ে ডাকাতি ও নারী যাত্রীদের শ্লীলতাহানি শেষে বাস থামিয়ে তারা নেমে যায়। ডাকাতেরা বাস থেকে নেমে যাওয়ার পর চালক বাসটি নিয়ে গন্তব্যে যেতে অস্বীকৃতি জানান। পরে যাত্রীদের চাপের মুখে বাস নিয়ে যাত্রা শুরু করেন চালক। মঙ্গলবার বেলা ১১টার পরে যাত্রীরা বাসটি নাটোরের বড়াইগ্রাম থানায় নিয়ে যান। বেলা ১১টা থেকে সাড়ে ১১টার পরে বাসটি বড়াইগ্রাম থানায় ঢোকানো হয়। এ সময় বাসের চালক বাবলু আলী (৩০), সুপারভাইজার সুমন ইসলাম (৩৩) ও তাঁর সহকারী মাহবুব আলমকে (২৮) আটক করে ৫৪ ধারায় মামলা দিয়ে আদালতে পাঠায় বড়াইগ্রাম থানা-পুলিশ। পরে তাঁরা আদালতের মাধ্যমে জামিন ছাড়া পান। এই বিষয়ে গত বুধবার একাধিক পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশের পর প্রশাসন নড়েচড়ে বসে। অবশেষে ঘটনার তিন দিন পর মির্জাপুর থানা ডাকাতির ঘটনা নেয়ার পর তিনজন আসামীকে গ্রেপ্তার করা হয়।

 

 

 

 

১৮ Views

শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *