
আদালত সংবাদদাতা ॥
টাঙ্গাইলের ঘাটাইলে শিক্ষা সফরের চারটি বাস ডাকাতির ঘটনায় জড়িত থাকার সন্দেহে গ্রেপ্তারকৃত চারজনকে কারাগারে পাঠিয়েছেন আদালত। বৃহস্পতিবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে তাদের কারাগারে পাঠানো হয়। তাদের সনাক্ত করার জন্য (টিআই প্যারেট) ডাকাতির শিকার ব্যক্তিদের সামনে হাজির করার আবেদন করেছে পুলিশ।
কারাগারে পাঠানো চারজন হচ্ছেন- ঘাটাইল উপজেলার রামদেবপুর গ্রামের আব্দুল আলেকের ছেলে আয়নাল হক (৩৭), মিন্নত আলীর ছেলে ফজলুল (৪১), মৃত বছির উদ্দিনের ছেলে আয়নাল হক (৩৭) এবং একই উপজেলার মালিরচালা পাহাড়িয়া পাড়া গ্রামের আরফান আলীর ছেলে নাসির (৩৫)। পুলিশ জানিয়েছে, বুধবার (২৬ ফেব্রুয়ারি) তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। তাদের কাছ থেকে একাধিক মুঠোফোন সেট, টর্স লাইট, রামদা, হাতুড়ি, সোনার আংটি ও নগদ টাকা উদ্ধার করা হয়। গ্রেপ্তারকৃত আয়নালের বিরুদ্ধে দুইটি চুরিসহ তিনটি এবং নাসিরের বিরুদ্ধে ১টি ডাকাতিসহ তিনটি মামলা রয়েছে।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ঘাটাইল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) সজল খান জানান, বৃহস্পতিবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে গ্রেপ্তারকৃত চারজনকে ঘাটাইল আমলি আদালতে হাজির করা হয়। বিচারক সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট পশুপতি বিশ্বাস কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। সজল খান আরও জানান, ডাকাতিকালে কারও মুখ বাঁধা ছিল না। তাই গ্রেপ্তারকৃতদের সনাক্ত করার জন্য ডাকাতির শিকার শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের সামনে হাজির করা হবে। এজন্য আদালতে আবেদন করা হয়েছে।
ঘাটাইল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রকিবুল ইসলাম বলেন, ঘাটাইল থানা ও জেলা গোয়েন্দা পুলিশের একাধিক দল ডাকাতির সাথে জড়িতদের সনাক্ত ও গ্রেপ্তারের জন্য কাজ করছে।
উল্লেখ্য, ময়মনসিংহ জেলার ফুলবাড়িয়া উপজেলার সোয়াইতপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা ৪টি বাস নিয়ে মঙ্গলবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) ভোরে নাটোরের একটি পার্কে শিক্ষা সফরের উদ্দেশ্যে রওনা হয়। ভোর সাড়ে ৪টার দিকে টাঙ্গাইল জেলার ঘাটাইল-সাগরদীঘি সড়কের লক্ষণের বাধা এলাকায় পৌঁছায়। এ সময় সেখানে রাস্তায় গাছের গুড়ি ফেলে প্রতিব›দ্ধকতা সৃষ্টি করে ডাকাতরা। পরে তারা বাসে থাকা শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের মুঠোফোন, নগদ টাকাসহ বিভিন্ন জিনিসপত্র লুট করে। প্রধান শিক্ষক ৯৯৯ নম্বরে ফোন করেন। পার্শ্ববর্তী সাগরদিঘী তদন্ত কেন্দ্র থেকে পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়। এ সময় ডাকাতরা পালিয়ে যায়। পরে শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা শিক্ষা সফরে নাটোর চলে যায়।
নাটোরে শিক্ষা সফর শেষে ঘাটাইল থানায় এসে মঙ্গলবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) রাত পৌনে ১২টার দিকে মামলা দায়ের করা হয়। প্রধান শিক্ষক মোহাম্মদ খলিলুর রহমান বাদি হয়ে এই মামলা দায়ের করেন। মামলায় অজ্ঞাত ১০/১২ জনকে আসামী করা হয়েছে। ডাকাতরা ১০টি মুঠোফোন সেট এবং শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের কাছ থেকে লক্ষাধিক টাকা লুন্ঠন করেছে বলে মামলায় অভিযোগ করা হয়েছে।