
বিভাস কৃষ্ণ চৌধুরী/ নুরুল ইসলাম, দেলদুয়ার ॥
মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আক্তার বলেছেন, সারা বছর সূলভ মূল্যে পণ্যসামগ্রী বিক্রি করা হবে। জেলা থেকে উপজেলা পর্যায়ে সাধারণ মানুষের মাঝে সূলভ মূল্যের এই পণ্যগুলো পৌঁছে দেওয়া হবে। এ সময় উপদেষ্টা ফরিদা আখতার দেশে নতুন একটি রাজনৈতিক দল জাতীয় নাগরিক পার্টিকেও শুভ কামনা জানান।
শনিবার (১ মার্চ) বিকালে পবিত্র মাহে রমজান উপলক্ষে টাঙ্গাইল জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে জনসেবা চত্বরে সাধারণ মানুষের মাঝে সূলভ মূল্যে পণ্যসামগ্রী বিক্রি কার্যক্রম উদ্বোধনকালে তিনি এসব কথা বলেন।
অনুষ্ঠানে টাঙ্গাইলের ভারপ্রাপ্ত জেলা প্রশাসক আব্দুল্যাহ আল মামুন, পুলিশ সুপার মিজানুর রহমান, জেলা প্রাণি সম্পদ কর্মকর্তা মোস্তাফিজুর রহমান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
এ সময় ৩৮ টাকা হালি ডিম, ২৫০ টাকা কেজি ব্রয়লার মুরগি, ৬৫০ টাকা কেজি দরে গরুর মাংস ও ৮০ টাকা লিটার হিসেবে দুধ বিক্রি করা হয়।
এদিন সকালে দেলদুয়ার উপজেলার এলাসিন ইউনিয়নের মুশুরিয়া গ্রামে এলাসিন দেশি মুরগি উৎপাদনকারী পিজি এর কার্যক্রম পরিদর্শন এবং মৎস্যজীবী ও মৎস্য খামারীদের সাথে মতবিনিময় সভা করেন।
এ অনুষ্ঠানে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আক্তার বলেন, কৃষি ব্যাংক যদি থাকে, মৎস্য ও প্রাণী সম্পদ ব্যাংক থাকা উচিৎ। কৃষি ব্যাংকের মতো মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ ব্যাংক তৈরির কার্যক্রম বর্তমানে শেষ পর্যায়ে। ইতোমধ্যে অর্থ মন্ত্রণালয়ে চিঠি দেওয়া হয়েছে। এতে তারা সন্তুষ্ট হয়ে সেটি বাংলাদেশ ব্যাংকে দিয়েছে। এখন বাংলাদেশ ব্যাংক স্বীকৃতি দিলে দ্রুতই মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ ব্যাংকের কার্যক্রম শুরু হবে। এই ব্যাংক চালু হলে গ্রামেগঞ্জে দাদন ব্যবসা বন্ধ হয়ে যাবে। এতে বিভিন্ন প্রজাতির মাছ, বিশেষ করে ইলিশের দাম কমে যাবে।
তিনি আরও বলেন, বিভিন্ন দেশে কৃষি এবং মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ দুইটি একত্রে থাকে। কিন্তু আমাদের দেশে কেন যে আলাদা সেটি বুঝি না! কৃষি জমিতে যে কিটনাশক দেওয়া হয় সেটি মাছ এবং গরু-ছাগলের জন্য ক্ষতিকর। যারা পশু পালন করেন তাদের খেয়াল রাখা উচিত। যেন ওই খামারের আশেপাশে কেউ জমিতে যেন কীটনাশক দিতে না পারে। এজন্য সংশ্লিষ্ট কৃষি কর্মকর্তাকে অবহিত করারও আহ্বান জানান তিনি।
তিনি আরও বলেন, গ্রামে যে খামারগুলো আছে সেগুলোও কিন্তু শিল্প, তারা খাদ্য উৎপাদনকারী তারা খাদ্য সরবরাহ করছে সুতরাং তাদেরকে উল্টো টাকা দেয়া উচিৎ। আমরা কিছু একটা করছি। এ সাইডে আপনাদের হয়ে আমি কাজ করছি। আমরা এসে শুনলাম ঋণের ব্যপারে, মাছের ক্ষেত্রে বিশেষ করে ইলিশ মাছের ক্ষেত্রে দাদন ব্যবসায়ীদের জন্য ইলিশের দাম টা উৎপাদনস্থল হতে বাজরে আসতে বিভিন্ন হাত বদল হয়ে দাম অনেক বেড়ে যায়। যারা মহাজন আছে তারা দাদন দিয়ে রাখে, দাদনের টাকা শোধ করতে দাম অনেক বেড়ে যায়। দাদন ব্যবসায়ীদের হাত থেকে খামারীদের মুক্ত করতে সরকারী একটা ব্যবস্থা লাগবে।
মতবিনিময় সভায় দেলদুয়ার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সাব্বির আহমেদের সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন, টাঙ্গাইল জেলা প্রাণীসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মোস্তাফিজুর রহমান, জেলা মৎস্য কর্মকর্তা আবুল কালাম আজাদ, উপজেলা প্রাণীসম্পদ কর্মকর্তা ডা. শফিকুল ইসলাম, উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা তারিকুল ইসলাম, উপজেলা বিএনপির সভাপতি আব্দুল আব্দুল আজিজ খান, সাধারণ সম্পাদক এস.এম ফেরদৌস আহমেদ প্রমূখ।