
সাদ্দাম ইমন ॥
অন্তর্র্বতী সরকারের আমলে টাঙ্গাইলের বাজারে পণ্যমূল্যের অস্বস্তি দিয়ে শুরু হয়েছে মাহে রমজান। সরকারের নির্দেশনা থাকলেও পণ্য সরবরাহে রয়েছে প্রবল ঘাটতি। যার কারণে অস্থিতিশীলতার দিকে যাচ্ছে পণ্যবাজার। রমজানে কয়েকটি পণ্যের আমদানি এবার ২০ থেকে ৬৪ শতাংশ বাড়ানো হয়েছে। তবুও রোজায় সবজিবাজার স্থিতিশীল থাকলেও বাজার থেকে ‘উধাও’ সয়াবিন তেল। দেশে গত বছরের তুলনায় তেলের সঙ্গে দাম বেড়েছে লেবু, শসা, বেগুন, মাছ ও মাংসের। যার কারণে পণ্যমূল্যের অস্বস্তি দিয়ে শুরু হয়েছে পবিত্র মাহে রমজান। তবে সংকট ঘিরে বিক্রেতারা বলেন, কোম্পানির ডিলাররা কয়েক দিন ধরেই সয়াবিন তেল সরবরাহ করছে না। ফলে তাদের দোকানে তেল নেই। সরবরাহ কমায় ভোগান্তিতে পড়ছেন গ্রাহকরা।
রমজানে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে নিত্যপণ্যের দাম কমলেও বাংলাদেশের চিত্র ভিন্ন। চাহিদা ঠিক থাকলেও এখানে প্রত্যেক পণ্যের দাম বাড়ে। এখানকার ব্যবসায়ীরা অতি লাভবান হওয়ায় সাধারণ ভোক্তাদের ভোগান্তি অনেক গুণে বাড়ে। রোজায় খেজুর, ছোলা, চিনি, মুড়ি, ডাল, বেসন ও চিনির চাহিদা কয়েক গুণ বাড়ে। তবে টাঙ্গাইলের বাজারে সরবরাহ ঠিক থাকায় এবার এসব পণ্যের দাম বাড়েনি। তবে লেবু, শসা, বেগুন ও মাছ-মাংসের দাম বেড়েছে। সবচেয়ে বেশি ভোগাচ্ছে সয়াবিন তেল। বাজারে মাসখানেক ধরে বোতলজাত তেলের সংকট চলছে। রোজার আগ মুহূর্তেও তা কাটেনি।
রবিবার (২ মার্চ) টাঙ্গাইল শহরের বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা গেছে, মৌসুমি ফসল আলু ও পেঁয়াজ উত্তোলন শুরু করেছে কৃষক। এবারে উৎপাদন ও সরবরাহ বাড়ায় এসব পণ্যের দাম অনেক কমেছে। একই সঙ্গে কাঁচা সবজি ও শাকসবজির দাম কমেছে। তবে মসলাজাতীয় পণ্য এলাচের দাম দ্বিগুণ বেড়েছে, প্রতিকেজি সর্বোচ্চ সাড়ে ৫ হাজার টাকায়। প্রতি কেজি রসুনে গুনতে হচ্ছে বাড়তি অন্তত ২০ টাকা। খাদ্যপণ্যের ভেতরে গরুর মাংসের দাম বেড়ে কেজিতে হয়েছে সর্বোচ্চ ৭৮০ টাকা। প্রতি কেজি ব্রয়লারে কমেছে অন্তত ২০ টাকা, যা এখন দুইশ’ ঘরেই। কেজিতে ৩০ টাকা কমেছে সোনালি মুরগি। ডজনে ১০ টাকা কমে ডিম বিক্রি হচ্ছে ১৩৫ টাকা পর্যন্ত। লেবুর হালি ৮০ থেকে ১০০ টাকা। আমদানি করা সাদা চিনির কেজি ১২০ টাকা এবং লাল চিনি বিক্রি হচ্ছে ১৪০ থেকে ১৪৫ টাকায়। মুড়ি বিক্রি হচ্ছে ৮০ টাকা দরে।
বাজারের মেসার্স আমজাদ ট্রেডার্সের মোহাম্মদ রাসেল বলেন, আমরা যে দামে পামু তাই বিক্রি করমু। লাল চিঁড়া ১০০ টাকা কেজিতে বিক্রি করছি। মুড়ি বা চিঁড়ার কোনোটারই দাম বাড়েনি। রেগুলার দামেই তো বিক্রি করছি। বাজারে ছোলা ও বেসন কিনতে আসা হালিমা খাতুন বলেন, ছোলার দাম দুই দিন আগে একটু বেড়েছিল। খবরে দেখলাম আমদানি বেশি, তাই কিনিনি। এখন ২০ টাকা কমে ১১০ টাকায় পেলাম। দোকানি রাজু আহমেদ বলেন, ডাবলি এখন ৭০ টাকা কেজি দাম চাই। দরদাম করলে ৬৫ টাকায় দিয়া দেই। সবাই দাম করে, তাই ৫ টাকা বাড়ায়া বলি।
সয়াবিন তেলের বাজারে সংকট চলছে। রোজা এলেও তা কাটেনি। বাজারে তেল যা পাওয়া যাচ্ছে, তার বেশির ভাগই দুই ও ৫ লিটারের বোতল। ফলে খোলা সয়াবিন তেলের বিক্রি বেড়েছে। প্রতি লিটারের দাম পড়ছে ১৬৫ থেকে ১৭০ টাকা। খোলা সয়াবিন দুই লিটার বিক্রি হচ্ছে ৩৩০ টাকায়। বোতলের সয়াবিন তেলের সরকার নির্ধারিত সর্বোচ্চ বিক্রয়মূল্য হচ্ছে প্রতিলিটার ১৭৫ ও ৫ লিটার ৮৫০ টাকা।