
নুরুল ইসলাম, দেলদুয়ার ॥
টাঙ্গাইলের দেলদুয়ার উপজেলায় বেপরোয়া হয়ে উঠেছে মাটি ব্যবসায়ীরা। নদী কিংবা ক্ষেত-খামার যেখানে সুযোগ পেয়েছে সেখানে বসিয়েছে তাদের কালো থাবা। মাটি খেকোদের কালো থাবায় উপজেলার ডুবাইল ইউনিয়নের কইটোলা কালি মন্দিরও রক্ষা পায়নি। মন্দিরকে শতভাগ ঝুঁকিতে ফেলে তার দু’পাশ থেকে গভীর করে মাটি সরিয়ে নিয়েছে তারা। প্রাচীন এ মন্দিরটির অবস্থান এক সময়ের খরস্রোতা লৌহজং ও এলেংজানী নদীর মিলনস্থল বড়মৈস্টা গ্রামে। এর দক্ষিন পাশ দিয়ে এলেংজানী, পূর্ব-উত্তর পাশ দিয়ে লৌহজং নদী। মন্দির ঘেষা পূর্ব উত্তর পাশ থেকে দুই মাস ধরে অবৈধভাবে মাটি কেটে বিক্রি করে দিচ্ছে ডুবাইল ইউনিয়ন বিএনপি’র সভাপতি আলম দেওয়ান সাদেক ও সাধারণ সম্পাদক কার্তিক চন্দ্র ভৌমিকের নেতৃত্বে একটি চক্র। চক্রটি এতোই শক্তিশালী যে, তাদের বিরুদ্ধে স্থানীয় কেউই অভিযোগ করতে সাহস পায়না।
গোপন সংবাদের ভিত্তিতে স্বয়ং দেলদুয়ার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মঙ্গলবার (১১ মার্চ) সকালে ওই স্থানে অভিযান পরিচালনা করেন। প্রশাসনের উপস্থিতি টের পেয়ে মাটি কাটার সঙ্গে জড়িতরা তাদের সরঞ্জাম ফেলে পালিয়ে যায়। পরে সেখানে ফেলে যাওয়া মাটি কাটার যন্ত্র (ভেকু) অকেজো করা হয়। এ অভিযানে সেনা সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
মন্দির কমিটির কয়েকজন সদস্য বলেন, ইউএনও’র হস্তক্ষেপে ভাঙ্গনের ঝুঁকিতে থাকা কইটোলা কালিমন্দির আপাতত রক্ষা পেলো।
অভিযোগের বিষয়ে ডুবাইল ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি আলম দেওয়ান সাদেক বলেন, এর আগে প্রশাসন মাটিসহ ৩টি ট্রাক আটক করে থানায় নিয়ে আসলে তা ছাড়িয়ে নেয়ার জন্য তদবির করে ছিলাম। ওই সময় তার মধ্যস্থতায় ৬০ হাজার টাকা জরিমানা দিয়ে ট্রাক ৩টি ছাড়িয়ে নেই।
এ বিষয়ে দেলদুয়ার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সাব্বির আহমেদ বলেন, উপজেলাব্যাপি মাটি কাটার যেন ধুম পরে গেছে। অভিযান পরিচালনা করে নদী ও ফসলী জমির মাটি রক্ষায় সাধ্যমত চেষ্টা করে যাচ্ছি। দিনে বন্ধ করলেও রাতে আবার মাটি কাটা শুরু হয়। আমরা রাতেও অভিযান অব্যহত রাখবো। ডুবাইল ইউনিয়নের কইটোলা নামক স্থানে অভিযান পরিচালনাকালে জড়িতরা পালিয়ে যায়। পরে সেখানে তাদের রেখে যাওয়া একটি ভেকু অকেজো করা হয়েছে। দেওলী ও এলাসিন ইউনিয়নে ধলেশ্বরী নদীতে বসানো ২টি ড্রেজার ধ্বংস করা হয়েছে। অবৈধভাবে মাটি কাটা ও এর সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে অভিযান অব্যহত থাকবে।