
স্টাফ রিপোর্টার, মির্জাপুর ॥
টাঙ্গাইলের পুলিশ সুপার (এসপি) মিজানুর রহমান বলেছেন, দেনা পাওনা নিয়ে কোন শ্রমিক যাতে রাস্তায় না আসে, সে বিষয়ে কারখানার মালিক প্রতিনিধিদের সতর্ক থাকতে হবে। প্রতিটি কারখানার প্রধান ফটক ছাড়াও কারখানার ভেতর বাহিরের গুরুত্বপূর্ণ স্থানে সিসি ক্যামেরার স্থাপন করতে হবে। এছাড়া কারখানা নিরাপদে রাখতে পুলিশকে সহায়তা করতে হবে। ঈদে নগদ টাকা নিয়ে বাড়ি ফিরতে শ্রমিকদের দল বেধে সতর্কতার সঙ্গে যাওয়ার পরামর্শ দেন। ভালো থাকা ভালো রাখা সকলের দায়িত্ব।
রবিবার (১৬ মার্চ) দুপুরে টাঙ্গাইলের মির্জাপুর থানা মিলনায়তনে উপজেলার গোড়াই শিল্পাঞ্চলে অবস্থিত বিভিন্ন শিল্প-কারখানার মালিক, প্রতিনিধিদের সাথে মতবিনিময় সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
পুলিশ সুপার বলেন, মাসের কয় তারিখে বেতন-বোনাস দেয়া হবে এবং ঈদের ছুটি কত দিন হবে। এ সম্পর্কে শিল্পকারখানার শ্রমিকদের আগেই অবগত করতে হবে। এ বিষয়গুলো সম্পর্কে তাদের আগে ধারণা দিলে তার অনেকটা চাপ মুক্ত থাকতে পারেন। ফলে শ্রমিক অসন্তোষ হওয়ার ঝুকি কম থাকে। কোন ধরণের ভুল বোঝাবুঝির ফলে যাতে শ্রমিকরা অসন্তোষ হয়ে রাস্তায় বের হয়ে না আসে।
মির্জাপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোশারফ হোসেনের সভাপতিত্বে মতবিনিময় সভায় অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, মির্জাপুর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার এইচ এম রেজওয়ান মাহবুুব সিদ্দিকী, উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভূমি) ও পৌর প্রশাসক মাসুদুর রহমান, মির্জাপুর সেনা ক্যাম্পের ক্যাম্প কমান্ডার ক্যাপ্টেন ফাহিম আহমেদ খান, প্রশিক্ষণরত সহকারি পুলিশ সুপার কিশোর রায়, ফায়ার স্টেশনের স্টেশন অফিসার বেলায়েত হোসেন, দেওহাটা ফাঁড়ির ইনচার্জ পরিদর্শক গিয়াস উদ্দিন, নাহিদ কটন মিলস লি: এর ব্যবস্থাপক প্রশাসন মোস্তাকিম হোসেন, বেঙ্গল কারখানার প্রতিনিধি সাইফুল ইসলাম খান, নিউএইজ টেক্সটাইলের আরিফুল ইসলাম, কাশেম ইন্ড্রাস্ট্রিজ লি: এর হেলাল উদ্দিন প্র্রমুখ বক্তৃতা করেন।
কারখানার প্রতিনিধিরা জানান, কোন কোন কারখানা ফেব্রুয়ারি মাসের বেতনের সাথে বোনাস দিয়ে দিয়েছেন। অনেক কারখানা আগামী (২৩ থেকে ২৮ মার্চ) এর মধ্যে বোনাস ও মার্চ মাসের বেতন পরিশোধ করে ঈদের ছুটি দিবেন। এছাড়া কিছু কারখানা মার্চ মাসের ১৫ দিনের বেতন পরিশোধ করবেন। কারখানাগুলোয় ঈদে আগামী (২৮ মার্চ) থেকে ৫ থেকে ১০ দিনের ছুটি থাকবে বলে কারখানার মালিক প্রতিনিধিরা জানান।
পুলিশ সুপার মিজানুর রহমান শ্রমিক অসন্তোষ হতে পারে এমন আশঙ্কা থাকলে প্রশাসনের সাথে নিয়মিত যোগাযোগ রক্ষা করার পরামর্শ দেন। ঈদের মধ্যে কারখানার নিরাপত্তার দায়িত্ব পালনকারীদের সঙ্গে মালিক প্রতিনিধিদের যোগাযোগ রক্ষা করতে হবে। ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কে যাত্রা নির্বিঘ্ন করতে টাঙ্গাইল জেলা পুলিশ ব্যাপক প্রস্তুতি নিয়েছে। মহাসড়কে দুর্ঘটনা এড়াতে জেলা পুলিশ ইতোমধ্যে কাজ শুরু করেছেন বলে জানান।
মির্জাপুর উপজেলায় ছোট-বড় অর্ধশতাধিক কারখানা রয়েছে। এসব কারখানায় অর্ধলক্ষাধিক শ্রমিক রয়েছে। এসব শ্রমিকের প্রায় ৮০ শতাংশ দেশের উত্তর পশ্চিমাঞ্চল এলাকার। নিরাপদে বাড়ি ফিরতে ছুটির বিষয়টি সমন্বয় করতে কারখানার প্রতিনিধিদের প্রতি আহবান জানান।