নুরুল ইসলাম, দেলদুয়ার ॥
টাঙ্গাইলের দেলদুয়ারে এক নারী প্রতারকের ফাঁদে পা দিয়ে সর্বস্বান্ত জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী শাহরিয়ার ইসলাম সাজু। অস্ট্রেলিয়া পাঠানোর লোভ দেখিয়ে সোনিয়া নামের এক প্রতারক নারী প্রথমে সখ্য গড়ে তোলে ওই শিক্ষার্থীর নিকট থেকে হাতিয়ে নেন প্রায় ১৭ লক্ষ টাকা। সহজ সরল বেকার যুবক অস্ট্রেলিয়া গিয়ে বেকারত্ব ঘোচাবে এমন আশায় বুক বেঁধেছিলেন। কিন্তু সে যে এক প্রতারকের ফাঁদে পা দিয়েছে তা ঘুনাক্ষরেও টের পায়নি। যখন টের পেলেন তখন তার সব শেষ। পাওনা টাকার জন্য চাপ দিয়ে প্রথমে ২০ লক্ষ টাকার চাঁদাবাজী মামলার আসামি হন। ওই মামলা পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) তদন্ত করেন। সম্প্রতি আবার দ্বিতীয় দফা মামলার আসামি হন। এবার তার বিরুদ্ধে শনিবার (১৫ মার্চ) রাতে ধর্ষন চেষ্টা মামলা ঠুকে দেন ওই নারী। মামলা হওয়ার ৩ ঘন্টার মাথায় গ্রেফতার হয়ে বর্তমানে তিনি কারাগাওে আছেন।
তথ্যানুসন্ধানে জানা গেছে, করটিয়া সরকারি সা’দত বিশ^বিদ্যালয় কলেজের স্নাতকোত্তর শিক্ষার্থী শাহরিয়ার ইসলাম সাজু বিগত ২০১৮ সালে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে পরিচয় হয় মির্জাপুর উপজেলার জামুর্কী গ্রামের বাচ্চু মিয়ার মেয়ে সোনিয়া আক্তারের সাথে। পরিচয় থেকেই বন্ধুত্ব। পরে এ বন্ধুত্ব আরও ঘনিষ্টতর হলে ২০১৯ সালে সোনিয়া সাজুকে অস্ট্রেলিয়া পাঠানোর প্রস্তাব দেয়। পরে বিভিন্ন সময়ে নগদ ও ব্যাংক চেকের মাধ্যমে সোনিয়া সাজুর নিকট থেকে ১৭ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নেয়। ঘটনার ৬ বছর পেড়িয়ে ৭ বছরের মাথায় সাজু অস্ট্রেলিয়া নয় গেলেন শ্রীঘরে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সোনিয়া অস্ট্রেলিয়া পাঠানোর ফাঁদে ফেলে এ পর্যন্ত অন্তত ১০ জনের নিকট থেকে মোটা অঙ্কের টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। কিন্তু কাউকেই তিনি অস্ট্রেলিয়া কিংবা অন্য কোন দেশে পাঠাতে সমর্থ হননি।
সম্প্রতি সাজুকে সায়েস্তা করার জন্য সোনিয়া দেলদুয়ার উপজেলার ডুবাইল গ্রামের তার নিজ ভাগ্নি জান্নাতকে ভিকটিম বানিয়ে ধর্ষন চেষ্টার নাটক সাজান। সোনিয়ার সাজানো ঘটনায় দেলদুয়ার থানায় ধর্ষন চেষ্টা মামলা নথিভূক্ত হয়। যার দেলদুয়ার থানা মামলা নং-০৪, তারিখ ১৪/০৩/২০২৫ ইং। ওই রাতেই সাজু তার নিজ বাসভবন টাঙ্গাইলের সন্তোষ বাগবারি থেকে গ্রেফতার হন। এসব বিষয়ে বক্তব্য নেয়ার জন্য সোনিয়ার ব্যক্তিগত মোবাইল নম্বরে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে ফোনটি বন্ধ পাওয়া যায়।
এদিকে মামলাটি দ্রুত রুজুর ব্যাপারে সাজুর পরিবারের অভিযোগ, মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা দেলদুয়ার থানার সেকেন্ড অফিসার এস.আই ফাইজুর রহমান সোনিয়ার নিকট থেকে মোটা অংকের টাকা নিয়ে সাজানো মামলাটি রুজু করতে সহায়তা করেছেন।
এ বিষয়ে এস.আই ফাইজুর রহমান বলেন, সোনিয়া মামলার বাদী নয়, তাছাড়া আমি তো ওসি না। মামলা রেকর্ড করেন থানার ওসি।