
স্টাফ রিপোর্টার ॥
যৌন ও আর্থিক কেলেঙ্কারিতে জড়িত থাকার অভিযোগে টাঙ্গাইলের মির্জাপুর মহিলা কলেজের অধ্যক্ষ হারুন অর রশিদকে দ্বিতীয়বারের মতো সাময়িক বরখাস্ত করেছে পরিচালনা পরিষদ। বৃহস্পতিবার (২০ মার্চ) সাময়িক বরখাস্তের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ সাদিয়া সুলতানা।
এর আগে, গত (৮ মার্চ) কলেজ পরিচালনা পরিষদের এক সভায় ৮ নম্বর রেজুরেশন অনুসারে তাকে সাময়িক বরখাস্তের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় এবং গত (১০ মার্চ) তাকে সাময়িক বরখাস্তের চিঠি দেওয়া হয়। বিগত ২০১৯ সালে কলেজ চত্বরে খেলতে আসা দুই স্কুল ছাত্রীকে ডেকে নিয়ে যৌন হেনস্তার অভিযোগে ওই অধ্যক্ষকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছিলো। তখন বিভিন্ন জায়গায় তদবির করে রেহাই পান।
জানা যায়, অধ্যক্ষ হারুন অর রশিদের কথায় কথায় ছাত্রীদের গায়ে হাত দেওয়ার অভ্যাস। ছাত্রীরা লজ্জায় প্রতিবাদ করতে পারেনি। তাছাড়া কাগজপত্রে নয়ছয় করে অনৈতিকভাবে আর্থিক সুবিধা নিয়ে আসছিলেন। গত (৫ আগস্ট) আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর কলেজের ছাত্রীরা ফুসে উঠে অধ্যক্ষের অনৈতিক কর্মকান্ডের বিরুদ্ধে।
শিক্ষার্থীরা যৌন হয়রানির অভিযোগ এনে অধ্যক্ষের পদত্যাগের দাবিতে কলেজ ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ মিছিল করে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ের সামনে অবস্থান নেয় এবং স্মারকলিপি প্রদান করে। এসব অভিযোগ আমলে নিয়ে কলেজ পরিচালন পরিষদ অধ্যক্ষকে সতর্ক করে এবং অভিযোগের সুরাহা না হওয়া পর্যন্ত তাকে কলেজ আসা থেকে বিরত থাকতে বলে। এরই মধ্যে পরিচালনা পরিষদ কলেজর শিক্ষক সাদিয়া সুলতানাকে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের দায়িত্ব প্রদান করে। অধ্যক্ষ হারুন অর রশিদ এসবের তোয়াক্কা না করে মাঝে মাঝেই কলেজে গিয়ে কাগজপত্র এবং হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর করা অব্যাহত রাখে। এরই মধ্যে কলেজের আর্থিক বিষয়ে নয়ছয়ের প্রমাণ পায় পরিচালনা পরিষদ।
পরে কলেজ পরিচালনা পরিষদ এসব বিষয়ে একাধিকবার সভা করে অধ্যক্ষকে তিনবার চিঠি দেয় কারন দর্শানোর জন্য। অধ্যক্ষ চিঠির কোন জবাব দেননি। সর্বশেষ গত (৮ মার্চ) কলেজ পরিচালনা পরিষদের এক সভায় অধ্যক্ষে বিরুদ্ধে যৌন ও আর্থিক কেলেঙ্কারি এবং পরিচালনা পরিলনা পরিষদের সাথে ধৃষ্টতাপূর্ণ আচরনের জন্য তাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। এরপর গত (১০ মার্চ) তাকে বরখাস্তের চিঠি দেওয়া হয়।
এ বিষয়ে মির্জাপুর মহিলা কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ সাদিয়া সুলতানা বলেন, পরিচালনা পরিষদ অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে অভিযোগের সত্যতা পেয়েছে। তদন্তেও তার বিরুদ্ধে অভিযোগে সত্যতা পাওয়া গেছে। বার বার কারন দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হলেও তিনি জবাব দেননি। এজন্য পরিচালনা পরিষদ তাকে সাময়িক বরখাস্ত করেছে।
সাময়িক বরখাস্তকৃত অধ্যক্ষ হারুন অর রশিদ বলেন, বিষয়টি আপনার মাধ্যমে জানতে পেলাম। অ্যাডহক কমিটির ৫ সদস্যের মধ্যে তিনজনই অবৈধ। সেই কমিটির এখতিয়ার নেই আমাকে বরখাস্ত করার।
এ ব্যাপারে কলেজ পরিচালনা পরিষদের সভাপতি বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির শিশু বিষয়ক সম্পাদক সাবেক এমপি আবুল কালাম আজাদ সিদ্দিকীর বলেন, কলেজের পূর্ববর্তী পরিচালনা পরিষদ অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে অভিযোগের তদন্ত করে একটি রির্পোট দেয়। সেই তদন্ত রির্পোটের ভিত্তিতে অধ্যক্ষ হারুন অর রশিদকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়।