
নুরুল ইসলাম, দেলদুয়ার ॥
টাঙ্গাইলের দেলদুয়ারে জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের যুগ্ম আহবায়ক বাবুল খানের অত্যাচার, নির্যাতনে অতিষ্ট হয়ে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছে উপজেলা সদর ইউনিয়ানের মীরকুমুল্লী গ্রামবাসী। শুক্রবার (২৮ মার্চ) বিকালে ওই গ্রামের প্রায় ৩ শতাধিক নারী পুরুষ মানববন্ধনে অংশ নেয়।
নির্যাতিত গ্রামবাসীরা বক্তব্যে বলেন, মীরকুমুল্লী গ্রামের আলাউদ্দিন খানের ছেলে বাবুল খান সদ্য ঘোষিত জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের যুগ্ম আহবায়কের পদ পেয়ে বেপরোয়া হয়ে উঠে। ফ্যাসিস্ট সরকার আওয়ামী লীগের আমলে আওয়ামী যুবলীগের নেতা সবুজ খানের মদদে গ্রামে বিভিন্ন অপকর্ম করে বেড়াত বাবুল খান। এখন জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতা হওয়ার সুবাদে পুরনো বন্ধু যুবলীগ নেতা সবুজ খানকে সাথে নিয়ে গ্রামে চাঁদাবাজী, অপহরণ করে মুক্তিপন আদায়, ভূমি দখল, সালিশ বাণিজ্য সহ নানা অপকর্ম করে বেড়াচ্ছে। বিভিন্ন ঘটনায় পুলিশি ভয়ভিতি প্রদর্শন করে উভয় পক্ষের নিকট থেকে অর্থ আদায় দুই বন্ধুর বর্তমান বাণিজ্য।
গত (১৯ মার্চ) উভয় বন্ধুর চাঁদাবাজীর অত্যাচারে অতিষ্ট সৌদি প্রবাসীর স্ত্রী রুনা খান আদালতে মামলা দায়ের করেছেন। এর আগে ওই নারীর সন্তানকে খেলার মাঠ থেকে ধরে এনে ঘরে আটকে রেখে মারধোর করে তারা। পরে ঘরে আটকে রেখে ১ লক্ষ টাকা চাঁদা দাবি করে। ২০ হাজার টাকা নগদ পরিশোধ করে বাকী ৮০ হাজার টাকা পরিশোধের প্রতিশ্রুতি দিয়ে ছেলেকে তাদের কবল থেকে ছাড়িয়ে নেন ওই নারী। বাকী ওই টাকার জন্য নিয়মিত চাপ প্রয়োগ করে মানসিক নির্যাতন চালাতে থাকে যুবলীগ নেতা সবুজ ও স্বেচ্ছাসেবক দল নেতা বাবুল খান।
সবুজ খানের বিষয়ে বিক্ষুব্ধ এলাকাবাসী জানান, সে মুক্তিযোদ্ধার সন্তান না হয়েও পরিচয় পত্র জালিয়াতি করে মৃত মুক্তিযোদ্ধা কে পিতা বানিয়ে নিয়মিত ভাতা উত্তোলন করে যাচ্ছে। উল্লেখ্য ওই গ্রামের বীর মুক্তিযোদ্ধা মৃত আফজাল খান ১৯৮৩ সনে নিঃসন্তান অবস্থায় এক স্ত্রী রেখে মারা যান। পরে ওই মুক্তিযোদ্ধার স্ত্রী দ্বিতীয় বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন একই গ্রামের আযম খানের সঙ্গে। সবুজ খান আযম খানের ঔরষজাত সন্তান। কাগজপত্র জালিয়াতি করে আওয়ামী লীগ সরকারের সময় থেকেই যুবলীগ নেতার দাপট দেখিয়ে তৎকালিন দেলদুয়ার সদর ইউনিয়ন চেয়ারম্যানের যোগসাজসে সে প্রয়াত বীর মুক্তিযোদ্ধা আফজাল খানের মুক্তিযোদ্ধা ভাতা নিয়মিত উত্তোলন করে আসছে।
এ বিষয়ে জানতে জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের আহবায়ক তরিকুল ইসলাম ঝলক খানের মোবাইল নম্বরে বার বার কল করা হলেও সে কোন রেসপন্স করেন নি।
সদস্য সচিব সালে মোহাম্মদ শাফী ইথেন বলেন, অন্যায়কারীদের স্বেচ্ছাসেবকদলে কোনও স্থান নেই। ঘটনা আমি শুনেছি তদন্ত করে যদি প্রমান পাওয়া যায় তাহলে তার বিরুদ্ধে আমরা সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়ার জন্য কেন্দ্রে সুপারিশ করবো।