
স্টাফ রিপোর্টার, মির্জাপুর ॥
টাঙ্গাইলের মির্জাপুরে অবৈধভাবে ভেকু মেশিন দিয়ে মাটি কেটে নিতে বাধা দেয়ায় জমির মালিককে মারপিট ও হামলা করে আহত করার ঘটনা ঘটেছে। এ সময় হামলাকারীরা জমির মালিকের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হামলা চালিয়ে ভাংচুর ও লুটপাট করে। হামলায় ব্যবসায়ী জুবায়ের হোসেন ও তার ভাতিজা তোফাজ্জল হোসেন গুরুতর আহত হয়েছেন। আহতদের মির্জাপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।
মির্জাপুর উপজেলার গোড়াই ইউনিয়নের খামারপাড়া গ্রামে মারপিট ও হামলার ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় আহত জুবায়ের হোসেনের পিতা আলমগীর হোসেন পাখি ১১ জনকে আসামী করে মির্জাপুর থানায় মামলা করেছেন। মঙ্গলবার (৮ এপ্রিল) বিকেলে মির্জাপুর প্রেসক্লাবে এসে সাংবাদিকদের কাছে অভিযোগ করেন বাদী আলমগীর হোসেন পাখি।
মামলার আসামীরা হলেন- গোড়াই খামারপাড়ার মোস্তফা মিয়া, আবু তালেব, শফি মিয়া, রাসেল মিয়া, জুয়েল মিয়া, বুলবুল, আব্দুল হামিদ, তমাল মিয়া, জুয়েল, নুরু মিয়া, মিয়াজ উদ্দিন ও সাগর।
মামলার বিবরণে জানা গেছে, গোড়াই খামারপাড়ার বাসিন্দা ব্যবসায়ী আলমগীর হোসেন পাখির সঙ্গে কেবিএম-৩ ইটভাটার মালিকানা নিয়ে প্রতিবেশী মোস্তফা মিয়ার বিরোধ চলে আসছে। গত (৫ মার্চ) দুপুর পৌনে দুইটার দিকে পূর্ব বিরোধের জের ধরে আলমগীর হোসেন পাখির রেকর্ডীয় সম্পত্তি থেকে অবৈধভাবে ভেকু মেশিন দিয়ে মোস্তফা মিয়া জোরপূর্বক মাটিকেটে নিতে থাকেন। খবর পেয়ে আলমগীর হোসেন পাখির ছেলে জুবায়ের ও নাতি তোফাজ্জল হোসেন বাধা দেয়। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে আসামীরা তাদের উপর দা, লাঠি, চাকু, লোহার রড নিয়ে জুবায়ের ও তোফাজ্জলকে এলোপাথারী মারপিট করে। আসামীদের হামলা জুবায়ের ও তোফাজ্জল গুরুতর আহত হন। এ সময় আসামীরা আরও ক্ষিপ্ত হয়ে পাশেই আলমগীর হোসেন পাখির ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হামলা করে এবং ক্যাশ থেকে নগদ টাকা লটে নেয়। এছাড়া পাশে রাখা একটি ট্রাকও ভাংচুর করে তারা।
আলমগীর হোসেন পাখি জানান, গোড়াই মঈননগর এলাকায় রোকন মিয়ার নামে মেসার্স এন.এ.বি এন্টারপ্রাইজ নামে একটি ঝিকঝাক ইটভাটা রয়েছে। রোকন মিয়ার মৃত্যুর আগে তিনি তার ছেলে আল ইমরান আকাশ ও মেয়ে মহেলা বেগমের নামে ইটভাটার মালিকানা সমান হিস্যায় লেখে দেন। মহেলার অংশ আসামী মোস্তফা মিয়া ও আল ইমরান আকাশের অংশ আলমগীর হোসেন পাখির ছেলে মোহাম্মদ জুবায়ের হোসেন নাতি মিয়া তোফাজ্জল ও আকরাম হোসেন কিনে নেয়। কিন্তু মোস্তফা শুধুমাত্র মেয়ের অংশ কিনে নিয়ে ইটভাটা নিজের দখলে নিয়ে নেয়। আমাদের অংশ দাবি করলে তিনি প্রাণে মেরে ফেলার হুমকি ও মিথ্যা মামলার ভয় দেখায়। বিষয়ে তার বিরুদ্ধে ডায়রিও করা হয়েছে বলে আলমগীর হোসেন পাখি জানান।
এদিকে ভাটা সংলগ্ন তার রেকর্ডীয় সম্পত্তি থেকে অবৈধভাবে ভেকু মেশিন দিয়ে মাটি কেটে নিতে বাধা দেয়ায় তার ছেলে ও নাতিকে পিটিয়ে গুরুতর আহত করেছে এবং তার অফিসে হামলা চালিয়ে একটি ট্রাক ও অফিস ভাংচুর করা হয় বলে তিনি জানান।
অভিযুক্ত মোস্তফা মিয়ার সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ইটভাটায় জুবায়ের, তোফাজ্জল ও আকরামের কোন মালিকানা নেই। তারা চাঁদা দাবি করে ইটভাটার ট্রাক আটক করলে মারামারির ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় তিনিও মামলা করেছেন বলে জানান।
এ বিষয়ে মির্জাপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোশারফ হোসেন বলেন, মারামারির ঘটনায় দুইপক্ষই মামলা করেছেন। তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।