
স্টাফ রিপোর্টার ॥
টাঙ্গাইলের ঘাটাইল উপজেলার দেউলাবাড়ী ইউনিয়নের পাঞ্জানা গ্রামের মধ্য দিয়ে বয়ে যাওয়া এক সময়ের খরস্রোতা চিতাই খাল দীর্ঘ ২০ বছর পর উদ্ধার করে জনসাধারণের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়েছে। বুধবার (৯ এপ্রিল) দুপুরে উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে ওই খাল উদ্ধার করা হয়।
স্থানীয়রা জানায়, পাঞ্জানা গ্রামের কিছু লোকজন নিজেদের সুবিধার জন্য জনগুরুত্বপূর্ণ চিতাই খালটি ভরাট করে জবরদখল করে রাখে। প্রায় দেড় কিলোমিটার দৈর্ঘের খালটি উত্তর-দক্ষিণে প্রবাহমান। দক্ষিণে পাঞ্জানা এবং উত্তরে রাম চন্দ্রপুর গ্রাম অবস্থিত। কালের বিবর্তনে কতিপয় অসাধু ব্যক্তি নিজেদের সুবিধার জন্য খালটি ভরাট করে জবরদখল করে রাখে।
এক সময় ওই খাল থেকে কৃষি জমিতে সেচ দেওয়া হতো এবং প্রচুর মাছ পাওয়া যেত। ভরাট করার ফলে বন্যায় কৃষকের ফসলের ক্ষতি হতো এবং শুষ্ক মৌসুমে পানি পাওয়া যেতো না। ফলে চিতাই খালের দুই তীরের প্রায় আটশ’ মানুষ সুবিধা বঞ্চিত ছিল। এলাকাবাসীর দাবির পরিপ্রেক্ষিতে ঘাটাইল উপজেলা প্রশাসনের সহযোগিতায় পানি প্রবাহ নিশ্চিতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করে খাল খননের ব্যবস্থা করা হয়।
ওই গ্রামের বয়োবৃদ্ধ রহিমা বেগম জানান, ওই খালটি বন্ধ হওয়ার কারণে তারা অনেক সমস্যার মধ্যে ছিলেন। বর্ষা মৌসুমেও কৃষি কাজে ওই খাল থেকে পানি ব্যবহার করা যেতো না। খালটি উদ্ধার করার ফলে স্থানীয় পর্যায়ে জনগনের পানির সমস্যা দূর হবে। একই গ্রামের আইয়ুব খানসহ অনেকেই জানান, একটা সময় চিতাই খাল থেকে প্রচুর মাছ ধরা যেত। সেচের জন্য পানি পাওয়া যেত। প্রতি বছর পাট ভেজানো ও পরিষ্কারের কাজে ওই খালের পানি ব্যবহার করা হতো। উদ্ধারের ফলে আবার মনে হয় এলাকাবাসীর সেই সুদিন ফিরে এলো।
ঘাটাইল উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) এনামুল হক জানান, ঘাটাইল উপজেলা দেউলাবাড়ী ইউনিয়নের পাঞ্জানা গ্রামে গ্রামীণ রাস্তায় উপজেলা প্রশাসন ব্রিজ নির্মাণ করে। সেজন্য রাস্তার প্রয়োজন হয়। পরে খালটি দখলমুক্ত করে এলাকাবাসীর জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়।
এ বিষয়ে ঘাটাইল উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইএনও) আবু সাঈদ জানান, জনগুরুত্বপূর্ণ কোনো জায়গা যদি কেউ জবরদখল করে রাখে। তাহলে প্রশাসনের পক্ষ থেকে তা দখলমুক্ত করে সকলের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হবে।