
স্টাফ রিপোর্টার ॥
গোপন তথ্যের ভিত্তিতে এক কেজি গাঁজাসহ এক মাদক কারবারিকে আটক করে ৪২ হাজার টাকা উৎকোচ নিয়ে অভিযুক্তকে ছেড়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের বিরুদ্ধে। বিষয়টি ‘টক অব দ্যা টাউর’ এ পরিনত হয়েছে। এ নিয়ে কয়েক দিন যাবত টাঙ্গাইল জেলা শহর জুড়ে চলছে নানা আলোচনা ও সমালোচনার ঝড়। অনেকেই কথার ছলে বলে বেড়াচ্ছেন ‘গাঁজায় কট- টাকায় খালাস’।
স্থানীয় একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেছে, গত (৯ এপ্রিল) সন্ধ্যা ৭ টার দিকে টাঙ্গাইল জেলা মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের পরিদর্শক আনোয়ারুল হাবিবের নেতৃত্বে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে সদর উপজেলার বিল বাথুয়াজানী গ্রামের মাসুদ মিয়ার (৩৮) বাড়িতে অভিযান চালানো হয়। অভিযানে জেলা মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের এসআই রহমত আলী, এএসআই আরিফুল হক, এএসআই আবু সাঈদ, সিপাহী প্রদীপ, নারী সিপাহী সুমিতা, সিপাহী হাফিজ, সিপাহী আশিক ও সিপাহী রিপনসহ মোট ৯ জন অংশ নেন।
অভিযানকালে এক কেজি গাঁজাসহ মাসুদ মিয়াকে আটক করে টাঙ্গাইল জেলা মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর। পরবর্তীতে মাসুদ মিয়াকে ছাড়াতে এক লাখ টাকা উৎকোচ দাবি করা হয়। মাসুদের মা মালা বেগম তাঁর প্রতিবেশি নাসিমা বেগম, নজরুল ইসলাম, আব্দুর রহমান, হাবুল মিয়ার কাছ থেকে ধার (কর্জ) করে এবং তাদের নিজের কাছে থাকা কিছু টাকা মিলিয়ে ৪২ হাজার টাকা অভিযান পরিচালনাকারীদের ঘুষ হিসেবে দেন।
ঘুষের টাকা পাওয়ার পর অভিযান পরিচালনাকারী মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের টিম মাসুদ মিয়াকে ছেড়ে দেয় এবং অভিযানে কোন মাদকদ্রব্য উদ্ধার হয়নি মর্মে একটি ভিডিও ধারণ করে কার্যালয়ে চলে আসেন। পরে বিষয়টি জানাজানি হওয়ায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়। এক পর্যায়ে তা ‘টক অব দ্যা টাউন’ এ পরিনত হয়।
বিষয়টি নিয়ে টাঙ্গাইল জেলা শহরের হোটেল-রেস্তোরা ও চা-স্টলে নানা আলোচনা ও সমালোচনার ঝড় বইছে। অনেকে কথায় কথায় ‘গাঁজায় কট- টাকায় খালাস’ বলে মুখরোচক উক্তি আওরাচ্ছে।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত টাঙ্গাইল জেলা মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের পরিদর্শক আনোয়ারুল হাবিব জানান, তারা অভিযান করার পর মাসুদের কাছে গাঁজা বা অন্য কোন মাদক না পাওয়ায় চলে আসেন। তাদের নামে ঘুষ নেওয়ার যে বিষয়টি ছড়ানো হচ্ছে, তা সম্পূর্ণ মিথ্যা ও বানোয়াট। মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর যাতে মাদকের বিরুদ্ধে অভিযান করতে না পারে সেজন্য একটি চক্র অপতৎপরতা চালাচ্ছেন।
এ ব্যাপারে টাঙ্গাইল জেলা মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক আবুল হোসেন জানান, বিষয়টি সম্পর্কে অবগত হওয়ার পর সত্যতা যাচাইয়ের জন্য তিনি সরেজমিনে তদন্ত করছেন। তদন্ত শেষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।