স্টাফ রিপোর্টার ॥
টাঙ্গাইলের বাসাইলে চতুর্থ শ্রেনীর ছাত্রীকে শ্লীলতাহানির কথা স্বীকার করে আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন ওই ছাত্রীর বিদ্যালয়ের দপ্তরি। জবানবন্দি শেষে বুধবার (১৬ এপ্রিল) সন্ধ্যার পর দপ্তরীকে কারাগারে পাঠিয়েছেন আদালত।
৪২ বছর বয়সী ওই দপ্তরীর নাম কাজী সুমন মিয়া। তিনি বাসাইল উপজেলার কাঞ্চনপুর ইউনিয়নের সৈদামপুর গ্রামের কাজী নাসির উদ্দিনের ছেলে। মঙ্গলবার (১৫ এপ্রিল) বিকেলে দপ্তরী সুমন মিয়া তার স্কুলের চতুর্থ শ্রেনীর ছাত্রীর শ্লীলতাহানী করেন বলে বাসাইল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জালাল উদ্দিন জানিয়েছেন।
পুলিশ ও স্থানীয়রা জানান, চতুর্থ শ্রেণির দুইজন ছাত্রী দপ্তরী সুমনের কাছে প্রাইভেট পড়ে। মঙ্গলবার (১৫ এপ্রিল) বিকেলে স্কুল ছুটি হওয়ার পর প্রাইভেট পড়ানোর এক পর্যায়ে এক ছাত্রীকে সুমন মিয়া চশমা আনতে তার (সুমনের) বাড়িতে পাঠায়। এ সময় অপর ছাত্রীকে একা পেয়ে তার স্পর্শকাতর স্থানে হাত দিয়ে জোড়পূর্বক স্কুলের দপ্তরী সুমন মিয়া শ্লীলতাহানি করেন। চশমা নিয়ে তার (ভিকটিমের) সহপাঠি চলে এলে সুমন মিয়া ওই স্কুল ছাত্রীকে ছেড়ে দেন। পড়া শেষ করে ওই ছাত্রী বাড়ি গেলে তার মা শরীরে জখম দেখতে পান। মা জখমের বিষয়ে জিজ্ঞাসা করেন। তখন কান্নাকাটি করে মায়ের কাছে শ্লীলতাহানির বিষয়টি জানায়। পরে ওই ছাত্রীর পরিবার বিষয়টি বাসাইল সেনা ক্যাম্পে জানান।
এ বিষয়ে বাসাইল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জালাল উদ্দিন জানান, ছাত্রীর পরিবার প্রথমে সেনা ক্যাম্পে জানায়। পরে সেনাবাহিনীর কাছ থেকে পুলিশ বিষয়টি জানতে পারে। মঙ্গলবার (১৫ এপ্রিল) রাতেই অভিযুক্ত দপ্তরিকে কাজী সুমন মিয়াকে তার বাড়ি থেকে আটক করা হয়।
বুধবার (১৬ এপ্রিল) সকালে ওই ছাত্রীর মা বাদি হয়ে সুমন মিয়ার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন। জিজ্ঞাসাবাদকালে সুমন মিয়া ওই ছাত্রীর শ্লীলতাহানি করার কথা স্বীকার করেন। আদালতে জবানবন্দী দিতে সন্মত হন। পরে তাকে বুধবার (১৬ এপ্রিল) টাঙ্গাইল চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে পাঠানো হয়।
ওই ছাত্রীর চাচা জানান, এর আগেও এই দপ্তরি সুমন মিয়া ওই ছাত্রীর সাথে খারাপ আচরণ করেছেন। ভয়ে বাড়িতে বলে নাই। মঙ্গলবার (১৫ এপ্রিল) ওর মা জখমের চিহ্ন দেখতে পেয়ে জিজ্ঞাসা করলে কান্না করে সব বলে দেয়।
এ ব্যাপারে টাঙ্গাইল আদালত পরিদর্শক লুৎফর রহমান জানান, দপ্তরী সুমন মিয়া দোষ স্বীকার করে আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন। সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মিনহাজ উদ্দিন ফরাজী তার জবানবন্দি লিপিবদ্ধ করেন। তাকে জেলহাজতে পাঠানোর আদেশও দেন আদালত। জবানবন্দি গ্রহণ শেষে বুধবার (১৬ এপ্রিল) রাতে তাকে টাঙ্গাইল কারাগারে পাঠানো হয়।