ফরমান শেখ, ভূঞাপুর ॥
টাঙ্গাইলের ভূঞাপুর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) তারিকুল ইসলামের বিরুদ্ধে দাখিল পরীক্ষার কেন্দ্র সচিব অধ্যক্ষ আব্দুস ছোবহানকে শারীরিকভাবে নির্যাতন ও লাঞ্চিত করার অভিযোগে উঠেছে। এই ঘটনায় প্রতিকার চেয়ে রবিবার (২০ এপ্রিল) দুপুরে টাঙ্গাইল জেলা প্রশাসক বরাবর লিখিত অভিযোগ করেছেন অধ্যক্ষ আব্দুস ছোবহানের ছেলে আব্দুল ওয়ারেছ।
গত (১৭ এপ্রিল) ভূঞাপুর ফাযিল মাদরাসায় এসএসসি (দাখিল) গণিত পরীক্ষার দিন পরীক্ষা কেন্দ্র সচিবের দায়িত্ব অবহেলা, প্রশ্নপত্র কম থাকা ও প্রশ্ন পত্র ফাঁসের অভিযোগে কেন্দ্র সচিব অধ্যক্ষ আব্দুস ছোবহানকে শারীরিক নির্যাতন ও লাঞ্চিত করার অভিযোগ করে ভুক্তভোগীর ছেলে।
লিখিত অভিযোগে জানা গেছে, সম্প্রতি জমিয়াতুল মোদারেছিন উপজেলা শাখার সভাপতি আফছার উদ্দিন ও সাধারণ সম্পাদক মাজহারুলসহ সংগঠনের অন্যান্যরা সহায়ক পাঠ্য বইয়ের একটি কোম্পানি থেকে নেয়া অর্থ আত্মসাত করলে অধ্যক্ষ আব্দুস ছোবহান এর প্রতিবাদ করে। এই ক্ষোভে গত (১৬ মার্চ) জামিয়াতুল সংগঠনের নেতারা অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে নানা অনিয়ম ও দুর্নীতি অভিযোগ এনে চলমান এসএসসি দাখিল পরীক্ষার ভূঞাপুর ফাযিল মাদরাসার কেন্দ্র সচিব দায়িত্বের জন্য জমিয়াতুল সংগঠনের সভাপতি আফছার উদ্দিনকে মনোনয়ন করে মাদরাসা বোর্ড। গত (২৪ মার্চ) এই মনোনয়নের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে আপিল করলে পুনরায় গত (৮ এপ্রিল) কেন্দ্র সচিবের দায়িত্ব বহালের রায় পান অধ্যক্ষ আব্দুছ ছোবহান। পরে গত (৯ এপ্রিল) রায়ের কপিটা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা নিকট প্রদান করলে কেন্দ্র সচিবের দায়িত্ব বুঝিয়ে দেয়ার জন্য উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) নির্দেশ দেয়।
এদিন রাতে সহকারী কমিশনার (ভূমি) তারিকুল ইসলাম মাদরাসায় গিয়ে দায়িত্বপ্রাপ্ত কেন্দ্র সচিবকে জানায় আফছার উদ্দিন-ই কেন্দ্র সচিবের দায়িত্ব পালন করবেন এবং পরে সিদ্ধান্ত নেবেন এবং বয়স বিবেচনা না করে অধ্যক্ষের পিঠের চামড়া তুলে নেয়ার হুমকি দেয় এই এসিল্যান্ড। গত (১৭ এপ্রিল) পরীক্ষা চলাকালীন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কেন্দ্র সচিবের দায়িত্ব অবহেলা ও প্রশ্নপত্র কম থাকার অভিযোগে অধ্যক্ষসহ মোট ৬ জনকে আটক করে। পরে তাদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়।
অভিযোগ আরো বলা হয়, এ ঘটনার দিন কেন্দ্র সচিব অধ্যক্ষ আব্দুস ছোবহানের উপর দায় চাপিয়ে অশ্লীল ভাষায় গালিগালাজ ও শারীরিক নির্যাতন করেন উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) তারিকুল ইসলাম। এ নিয়ে সুষ্ঠু তদন্ত ও সহকারী কমিশনার ভূমির বিচার দাবি করা হয়।
মাদ্রাসার অধ্যক্ষ আব্দুস ছোবহানের ছেলে আব্দুল ওয়ারেছ জানান, বাবার সাথে কথা বলতেই কেঁদে ফেলেন তিনি। এসিল্যান্ড শুধু তাকে শারীরিক নির্যাতনই করেননি বরং তাকে অপমানও করেছেন। এছাড়া প্রশ্নপত্র বিতরণকারী নূরুল হুদার বিরুদ্ধে কোন ধরণের ব্যবস্থা নেয়া হয়নি।
এ বিষয়ে ভূঞাপুর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) তারিকুল ইসলাম বলেন, যেহেতু ডিসি স্যারের কাছে অভিযোগ করেছে। কতটুকু সত্য তদন্ত করে তারা দেখুক।
এ ব্যাপারে টাঙ্গাইলের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) সঞ্চয় কুমার মহন্ত বলেন, এসিল্যান্ডের বিরুদ্ধে এরকম একটা অভিযোগ পেয়েছি। এটা নিয়ে তদন্ত করা হবে। তদন্তে দোষী প্রমাণিত হলে তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।