
স্টাফ রিপোর্টার, মির্জাপুর ॥
টাঙ্গাইলের মির্জাপুরে পুলিশের এক এসআইয়ের নেতৃত্বে মাদ্রাসার দোকান ভাড়ার নাম করে তা দখলে রাখার অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় তার সঙ্গে প্রভাবশালী আরও দুইজন জড়িত বলে জানা গেছে। উপজেলার বানাইল ইউনিয়নের দেওড়া গ্রামের দক্ষিণপাড়া ফোরকানিয়া নূরানিয়া হাফিজিয়া মাদ্রাসার মার্কেটে এ ঘটনা ঘটেছে।
এলাকাবাসী জানান, মাদ্রাসাটি ১৯৬০ সালে ৮৫ শতক জমিতে প্রতিষ্ঠিত হয়। আয় বৃদ্ধির স্বার্থে মাদ্রাসার জমিতে দানকৃত অর্থ ও পজেশন জামানতের অর্থ দিয়ে দেওড়া বাজারে বিগত ২০০৫ সালে ভবন নির্মাণ করে দোকান ভাড়া দেয়া হয়। সেখানে পুলিশের বিশেষ শাখায় কর্মরত দেওড়া গ্রামের বাসিন্দা এসআই জাহাঙ্গীর আলম, লাল মিয়া, মোতালেব হোসেন, বজলুর রহমান ও রাতুল মিয়া দোকান ভাড়া নেন। তারা সবাই আগে মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষের কাছে নিয়মিত দোকান ভাড়া দিতেন।
কিন্তু বিগত ২০১৭ সাল থেকে এস আই জাহাঙ্গীর আলমের নেতৃত্বে বজলু মিয়া ও রাতুল মিয়া ভাড়া পরিশোধ না করে দোকান দখলে রেখেছেন। ভয়ে কেউ তাদের বিরুদ্ধে মুখ খুলতে পারছেন না। মাদ্রাসা কমিটির সহসভাপতি আলী হোসেন জানান, তারা জমিদাতা হয়েও মাদ্রাসার জমি বা দোকান দখল করেননি। কিন্তু যারা মাদ্রাসা নির্মাণে কোন ভূমি রাখেনি তারাই প্রভাব খাটিয়ে দোকান দখল করে রেখেছেন। ভাড়া চাইলে অবসরপ্রাপ্ত পুলিশ সদস্য বীরমুক্তিযোদ্ধা জসিম উদ্দিনসহ কয়েকজন তাদের হুমকী দেন।
কমিটির সাবেক সভাপতি লিয়াকত হোসেন জানান, ভাড়ার বিষয়ে তারা গ্রামের সবাইকে নিয়ে আলোচনায় বসেছিলেন। কিন্তু তাতে লাভ হয়নি। উল্টো তারা বলেন মাদ্রাসাইতো নাই। তাহলে ভাড়া কেন দিবেন। স্থানীয়দের কয়েকজন জানান, বীরমুক্তিযোদ্ধা জসিম উদ্দিনের মতের বিরুদ্ধে কথা বললেই মামলার হুমকি দেন। বিগত সরকারের আমলে তিনি তাঁর মতের বিরুদ্ধে থাকা লোকজনদের কখনো জেএমবি, কখনো হেফাজত আবার কখনো শিবিরের লোক বলে গ্রামে কোনঠাসা করে রাখতেন।
এ ব্যাপারে তিনি বলেন, মাদ্রাসার জমি নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে ঝামেলা চলছে। বিষয়টি তিনি মিমাংসার জন্য সবাইকে অনুরোধ করেছেন।
এসআই জাহাঙ্গীর আলম অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, আগে গ্রামের সবাই একটি সমাজে ছিলেন। এখন তিনটি সমাজ। মাদ্রাসা পরিচালনার জন্য সবাইকে নিয়ে কমিটি করতে বলেছেন। কিন্তু তা না মানায় ভাড়া দেয়া বন্ধ করেছেন।
মাদ্রাসা পরিচালনা কমিটির সভাপতি জাকির হোসেন জানান, দোকান ভাড়া পরিশোধ করতে ওই তিনজনকে নোটিশ দিলেও ভাড়া না দিয়ে ৪ লাখ টাকার বেশি আত্মসাত করেছেন। তারা মাদ্রাসার অধীনে কবরস্থানের জমিতে থাকা ১০ লাখ টাকা মূল্যের ২০০ গাছ বিক্রি করেছেন। জমি অবৈধভাবে দখলে রেখেছেন। এতে শিক্ষকদের বেতন পরিশোধ করা কষ্টকর হয়ে পড়েছে। এজন্য ইউএনওর কাছে লিখিত অভিযোগ করেছেন।
এ বিষয়ে মির্জাপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) এ বি এম আরিফুল ইসলাম বলেন, এ বিষয়ে পদক্ষেপ নিতে মির্জাপুর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তাকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে।