
সাদ্দাম ইমন ॥
তীব্র দাবদাহে টাঙ্গাইলে মানুষের জনজীবন অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে। একাধিক জায়গায় বয়ে যাচ্ছে মৃদু থেকে মাঝারি তাপপ্রবাহ। এতে খেটে খাওয়া মানুষ সীমাহীন কষ্ট ভোগ করছেন। তীব্র দাবদাহ উপেক্ষা করেই মাঠেঘাটে কাজ করছেন তারা, চালাচ্ছেন রিকশা, ঠেলাগাড়ি। প্রয়োজন ছাড়া অনেকেই বাইরে বের হচ্ছেন না। তীব্র গরমে মানুষের শরীরের ত্বকে যেমন নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে। তেমনি বোরো ধানের খেতে ফাটল ধরেছে। চৈত্রের শেষে টাঙ্গাইলের বিভিন্ন এলাকায় ভ্যাপসা গরমে হাঁসফাঁস অবস্থার মধ্যে তীব্র গরমের আভাস দিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। বিভিন্ন অঞ্চলে চলমান তাপপ্রবাহ আরও এক সপ্তাহ অব্যাহত থাকবে। পাশাপাশি তীব্র তাপপ্রবাহ বয়ে যেতে পারে।
আবহাওয়া অফিস সূত্রে জানা যায়, চলমান মৃদু থেকে মাঝারি তাপপ্রবাহের মধ্যে কিছু জায়গায় থার্মোমিটারের পারদ ৪০ ডিগ্রিতে উঠে যেতে পারে। এক্ষেত্রে দু-এক জায়গায় বিক্ষিপ্তভাবে তীব্র আকারে তাপপ্রবাহ বয়ে যেতে পারে। তাপমাত্রা ৩৬ থেকে ৩৮ ডিগ্রি সেলসিয়াসে উঠলে তাকে মৃদু তাপপ্রবাহ ধরা হয়। ৩৮ থেকে ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াসকে বলা হয় মাঝারি আর ৪০ থেকে ৪২ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রাকে তীব্র তাপপ্রবাহ বলা হয়। এরপর ৪২ ডিগ্রির উপরে উঠলে তাকে বলা হয় অতি তীব্র তাপপ্রবাহ। টাঙ্গাইল জেলায় শনিবার (২৬ এপ্রিল) ৩৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে।
এদিন সকাল ৯টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টার আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়, আকাশ অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা এবং আবহাওয়া শুষ্ক থাকতে পারে। জেলার উপর দিয়ে মৃদু থেকে মাঝারি ধরনের তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে এবং তা অব্যাহত থাকতে পারে। দিনের এবং রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে।
এদিকে দাবদাহের কারণে বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বাইরে মানুষের চলাফেরাও কমে আসছে। বিকাল পর্যন্ত চলাচল থাকছে খুবই সীমিত। তবে মানুষ ঘরের বাইরে না বের হলেও শুষ্কতাজনিত সমস্যা নিয়ে অস্বস্তিতে রয়েছেন। একটি ভবনে নির্মাণ কাজ করছিলেন শ্রমিকরা। তারা জানান, অন্যান্য সময় রোদে কাজ করলে প্রচুর ঘাম হয়। তবে এখন তেমন ঘাম হচ্ছে না। কিন্তু ঠোঁট ফেটে যাচ্ছে। অস্বস্তি লেগেই থাকছে। এদিকে বোরো ধানের জমিতে ফাটল দেখা দিচ্ছে। বৃষ্টিপাত না থাকায় জমিতে ঘন ঘন সেচ দিতে হচ্ছে। হুগড়া গ্রামের কৃষখ আকবর আলী জানান, তিনি এবার দেড় বিঘা জমিতে বোরো আবাদ করেছেন। ধান লাগানোর পরে বৃষ্টি হয়নি। সেচের জন্য দীর্ঘ সিরিয়ালও পড়ছে। বৃষ্টি না হলে স্বস্তি নেই।
অপরদিকে উদ্ভূত পরিস্থিতিতে বোরো ধানের জমিতে পর্যাপ্ত সেচ দেওয়ার আহ্বান জানাচ্ছে কৃষি বিভাগ। যদিও কৃষি বিভাগের দাবি, এখন পর্যন্ত কৃষিতে তেমন কোনো নেতিবাচক প্রভাব পড়েনি। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর জানান, এ আবহওয়ায় বোরো ধান চাষে কিছুটা নেতিবাচক প্রভাবের শঙ্কা থেকে জমিতে পানি ধরে রাখতে পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। এছাড়া অন্য কোনো ফসলের ক্ষতির শঙ্কা এখনো নেই। আমের গুটি থেকে এখন আম বড় হয়ে গেছে। অন্যান্য রবিশস্য এখন শেষের দিকে। এ কারণে কৃষিতে তেমন ক্ষতি হবে না।