
সোহেল রানা, কালিহাতী ॥
টাঙ্গাইলের কালিহাতীতে গ্রেপ্তারী পরোয়ানাভুক্ত আসামী সাবেক সেনা সদস্যকে গ্রেপ্তারের পর থানা হেফাজতে শারীরিক নির্যাতন করার অভিযোগ উঠেছে পুলিশের বিরুদ্ধে। পুলিশ কর্তৃক শারীরিক নির্যাতনের শিকার অবসরপ্রাপ্ত সেনা সদস্য আসিফুর রহমান খান কালিহাতী উপজেলার হায়াতপুর এলাকার খলিলুর রহমান খান।
স্বজনদের অভিযোগ, বুধবার (৩০ এপ্রিল) রাতে কালিহাতী থানা হাজতে রেখে আসিফুর রহমান খানকে শারীরিক নির্যাতন করে কালিহাতী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ আবুল কালাম ভূঞা, কনস্টেবল হারুর অর রশিদ ও আব্দুর রউফ। এর আগে বুধবার (৩০ এপ্রিল) ওই সেনা সদস্যকে ঢাকার সাভার এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। পরে ওই রাতে তাকে কালিহাতী থানায় নিয়ে আসা হয়।
জানা গেছে, সাবেক সেনা সদস্য আসিফুর রহমানের স্ত্রী লাবনী আক্তার বাদি হয়ে গত বছরের মে মাসে ঢাকার চীফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (ক্যান্টনমেন্ট) আদালতে যৌতুক আইনে মামলা দায়ের করেন। ওই মামলায় তার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারী পরোয়ানা জারি করেন আদালত। পরে পুলিশ তাকে সাভারের ভাড়া বাসা থেকে গ্রেপ্তার করে রাতেই থানা হেফাজতে রাখা হয়।
ওই সেনা সদস্যের ভাই ওয়াসিম বলেন, থানা হেফাজতে রাখার পর রাতে ফ্যান ও লাইট বন্ধ রেখেছিলো পুলিশ। এ সময় পুলিশের কাছে পানি চাইলে আসিফকে গালিগালাজ করে পুলিশ। সকালে কোর্টে নেয়ার আগে পুলিশ তাকে মারধর করে। পরে গাড়িতে নেয়ার সময়ও তাকে মারধর করা হয়। রক্তাক্ত অবস্থায় তাকে টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হয়। পরে তাকে টাঙ্গাইল আদালতে নেয়া হয়। তিনি আরও বলেন, ভাই আদালতে আসার পর কান্নায় ভেঙে পড়েন এবং বলেন, থানার ওসিসহ দুই কনস্টেবল বেদম প্রহার করে রক্তাক্ত করেছে তাকে। থানার সিসি টিভি ফুটেজ দেখলেই সব পাওয়া যাবে।
টাঙ্গাইলের কোর্ট ইন্সপেক্টর লুৎফর রহমান বলেন, থানা পুলিশের সদস্যরা ওই আসামীকে আদালতে আনার আগেই টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসা দিয়ে কোর্টে নিয়ে এসেছিলো।
এদিকে অভিযোগ অস্বীকার করে কালিহাতী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ আবুল কালাম ভূঞা বলেন, থানা হেফাজতে নেয়ার আগে ও পরে ওই সেনা সদস্য পুলিশের সাথে খারাপ আচরণ করেছে। পরে সকালে তাকে সিএনজি চালিত অটোরিকশাযোগে টাঙ্গাইল আদালতে পাঠানোর সময় বাগুটিয়া এলাকায় প্রস্রাবের কথা বলে পালানোর চেষ্টা করে। এ সময় পুলিশের সাথে ধস্তাধস্তি হয়। পরে থানা থেকে আরেকটি টিম পাঠানো হয় ঘটনাস্থলে। এতে শরীরের চামড়া হয়তো ছিলে গেছে। পরে তাকে টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে।
এ বিষয়ে কালিহাতী সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আব্দুল্লাহ আল ইমরান জানান, থানায় যেহেতু সিসি ক্যামেরা রয়েছে সুতরাং এই ধরনের ঘটনা ঘটার সুযোগ নেই। তবে ওই সেনা সদস্য পালানোর চেষ্টা করলে ঘটনাস্থলে বাড়তি পুলিশ সদস্য পাঠিয়ে তাকে টাঙ্গাইল আদালতে পাঠানো হয়েছে এরকম শুনেছি।