
সাদ্দাম ইমন ॥
টাঙ্গাইলের যমুনার বিস্তীর্ণ চরগুলোতে কলার আবাদ করছেন চাষিরা। যেসব জমিতে কোনদিন ফসল আবাদের কল্পনাও করেনি কেউ। এখন সেইসব জমিতে হচ্ছে নানা জাতের কলার আবাদ। সামান্য পরিচর্যা করলেই বেড়ে উঠে এসব কলা গাছ। রোগ বালাই কম থাকায় কলা আবাদে ঝুঁকি কম। তবে প্রমত্মা যমুনার ভাঙ্গণে মাঝে মধ্যেই বিলীণ হয়ে যায় এসব চরাঞ্চল।
সরেজমিনে দেখা যায়, যমুনার চরাঞ্চলে কৃষকরা কলা আবাদ করছেন। অন্য ফসল আবাদ ছাড়াও কলা আবাদ করছেন চাষিরা। সারি সারি কলা গাছে ধরে আছে কাঁদি কাঁদি কলা। চরাঞ্চলের চাষিরা কলা আবাদের দিকে ঝুকচ্ছেন। অন্য ফসলের চেয়ে কলা আবাদ লাভজনক হওয়ায় কলা আবাদ করছেন তাঁরা।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, চলতি মৌসুমে টাঙ্গাইলে প্রায় চার হাজার ৯০০ হেক্টর জমিতে কলার আবাদ হয়েছে। উৎপাদন হবে এক লাখ ৩০ হাজার ২০০ মেট্রিক টন কলা। সাধারণত টাঙ্গাইলের পাহাড়িয়া এলাকায় কলার আবাদ হয়। সম্প্রতি জেলার যমুনার চরগুলোতে প্রচুর কলার আবাদ হচ্ছে। এক সময় এসব জমি অনাবাদি পড়ে থাকতো। এখানকার কলা চলে যাচ্ছে দেশের বিভিন্ন এলাকায়। লাভজনক হওয়ায় চাষিরা খুশি কলার আবাদ করে।
কলা চাষি রহিজ উদ্দিন বলেন, যমুনার চরে কলা চাষ খুবই লাভজনক। আমি দুই বিঘা জমিতে কলা আবাদ করেছি। আমার কলা বাগানে ৮০০ কলা গাছ আছে। ৮০০ কলা গাছে ৮০০ কলার কাদি আসবে। বছরে দুই লাখ টাকা কলা বিক্রি করতে পারবো। খরচ বাদে আমার দেড় লাখ টাকা লাভ থাকবে। কলা চাষি জামাল মিয়া বলেন, অন্য ফসল আবাদ করলেও সেই ফসল ঘরে তুলতে পারি না। এজন্য যমুনার চরে কলা আবাদ করেছি। আমার বাগানে চারশ’ কলা গাছ রয়েছে। প্রায় ১৫০টি গাছে কলা এসেছে। এক মাসের মধ্যে কলার কাঁদি কাটা যাবে। আমার খরচ ৫০ হাজার টাকা হলেও দেড় লাখ টাকা লাভ থাকবে। কলা চাষি নজরুল বলেন, চর এলাকায় অন্য ফসল আবাদ করে শান্তি পাই না। কলা আবাদ করলে লাভবান বেশি হয়। আমি দুই বিঘা জমিতে কলা আবাদ করেছি। প্রায় সাড়ে চারশ’ কলা গাছ আছে। ভালোই কলা এসেছে। কলা চাষ করে আমি ভালো লাভবান হয়। খরচ বাদে দেড় থেকে দুই লাখ টাকার মতো কলা বিক্রি করতে পারবো।
এ বিষয়ে টাঙ্গাইল কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক আশেক পারভেজ জানান, জেগে ওঠা চরগুলোতে কৃষকরা মিশ্র জাতের ও উন্নতজাতের কলা আবাদ করছেন। আমরা মাঠ পর্যায়ে কর্মীদের দিয়ে কৃষকদের নিয়মিত পরামর্শ দিচ্ছি। এছাড়াও সঠিক নিয়মে সার প্রয়োগের পরামর্শ দিচ্ছি। কলা গাছে যদি কোনো রোগের আক্রমণ হয়ে ক্ষতিগ্রস্থ হতে পারে। কৃষক যাতে ক্ষতিগ্রস্থ না হয় এজন্য নিয়মিত পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।