
স্টাফ রিপোর্টার, মির্জাপুর ॥
টাঙ্গাইলের মির্জাপুরে প্রতারনার শিকার হয়ে ইটভাটার অংশীদারিত্ব ফিরে পেতে আদালতে মামলা করেছেন রফিকুল ইসলাম নামের এক ব্যক্তি। তদন্তকারী পুলিশ কর্মকর্তার চাহিদা মতো টাকা না দেয়ায় বাদীর মানিত স্বাক্ষীদের দেয়া বক্তব্য পরিবর্তন করে তার মনগড়া প্রতিবেদন আদালতে দাখিল করেছেন। বুধবার (২১ মে) সকালে প্রেসক্লাব মিলনায়তনে মির্জাপুর থানার উপপরিদর্শক এটিএম জহিরুল ইসলামের বিরুদ্ধে সংবাদ সম্মেলনে মামলার বাদী রফিকুল ইসলাম এ অভিযোগ করেন।
সংবাদ সম্মেলনে মির্জাপুর উপজেলা শ্রমিক দলের সভাপতি কুব্বত আলী মৃধা, আজগানা ইউনিয়নের সাবেক মেম্বার আব্দুর রাজ্জাক সিকদারসহ মামলার স্বাক্ষীগণ উপস্থিত ছিলেন।
সংবাদ সম্মেলনে মামলার বাদী রফিকুল ইসলাম লিখিত ও মৌখিক বক্তব্যে জানান, উপজেলার লতিফপুর ইউনিয়নের চাঁনপুর এলাকায় অবস্থিত মেসার্স বংশাই ব্রিকস এন্ড ম্যানুফাকচারার্স নামক একটি ইটভাটার ১৪% মালিক খোকন মিয়া ২০১৮ সালে বাদী রফিকুল ইসলামের কাছে ১০ লক্ষ ৫০ হাজার টাকায় ৭% মালিকানা বিক্রি করেন। কিন্তু প্রতারক খোকন মিয়া তার বিক্রিত ৭% মালিকানা রফিকুল ইসলামকে বুঝিয়ে না দিয়ে তার মালিকানার ১৪ শতাংশ মালিকানা অন্যের নিকট বিক্রি করে দেন। এ নিয়ে ২০২৪ সালে তিনি আদালতে রফিকুল ইসলাম প্রতারক খোকন মিয়ার নামে টাঙ্গাইল আদালতে মামলাও দায়ের করেছেন। আদালত ওই মামলা মির্জাপুর থানাকে তদন্ত করে প্রতিবেদন দেয়ার আদেশ দেয়। আদালতের দেয়া আদেশে মির্জাপুর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) এটিএম জহিরুল ইসলাম মামলাটি তদন্ত করেন। মামলায় বাদী ৭ জনকে মামলা স্বাক্ষী করেন। তদন্তকারী কর্মকর্তা এটিএম জহিরুল ইসলাম বাদীর স্বাক্ষীদের স্বাক্ষ্য গ্রহণ করলেও স্বাক্ষীদের স্বাক্ষ পরির্তন করে সাদা কাগজে স্বাক্ষর নিয়ে নিজের মনগড়াভাবে আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করেছেন। রফিকুল ইসলাম অভিযোগ করে বলেন, মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা তার নিকট মোটা অংকের টাকা দাবি করে বলেন, টাকা দিলে তার পক্ষে প্রতিবেদন দেয়া হবে। কিন্ত তিনি টাকা দিতে অস্বীকার করায় বিবাদীর কাছ থেকে টাকা নিয়ে তার মানিত স্বাক্ষীদের দেয়া স্বাক্ষ পরিবর্তন করে দেয়া হয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত মামলার ৫ স্বাক্ষীর মধ্যে আব্দুর রাজ্জাক সিকদার বলেন, দারোগার কাছে আমি যে বক্তব্য দিয়েছি সেই স্বাক্ষ্য সাথে আদালতে দাখিল করা আমার স্বাক্ষ্যর সাথে কোন মিল নেই। দারোগা তার ইচ্ছা মতো আমার স্বাক্ষ্য লিপিবদ্ধ করেছেন। অন্য ৪ স্বাক্ষীও আদালতে দাখিল করা তাদের স্বাক্ষ্যর বিষয়ে একই ধরনের মন্তব্য করেন।
এ ব্যাপারে খোকন মিয়া ৭ শতাংশ শেয়ার বিক্রির কথা স্বীকার করে বলেন, ২০২০ সালে করোনাকালীন সময়ে রফিকুল ইসলাম ইসলাম ইটভাটা থেকে ইট নিয়ে তার শেয়ারের টাকা তুলে নিয়েছেন। কিন্তু তাকে দেয়া ৭ শতাংশ শেয়ারের চুক্তিপত্র (স্ট্যাম্প) ফেরৎ না দেয়ায় তিনি থানায় অভিযোগও করেছিলেন। আইনে না পেরে সে এখন সাংবাদিকদের কাছে গিয়েছে। এ নিয়ে এলাকায় একাধিক শালিস বৈঠক হয়েছে। কিন্তু রফিক শালিসের সিদ্ধান না মেনে আদালতে মামলা করেছেন।
মামলাটির তদন্ত কর্মকর্তা মির্জাপুর থানার উপপরিদর্শক এটিএম জহিরুল ইসলাম বলেন, স্বাক্ষীদের বয়ানই স্বাক্ষ্য হিসেবে গ্রহণ করে আইনের ভাষায় সাজিয়ে লেখা হয়েছে। স্বাক্ষীরা যদি মনে করেন এটি তাদের বক্তব্য না বা এটি সঠিক নয় তাহলে বাদী আদালতে নারাজি দিতে পারেন। এই অধিকার মামলার বাদীর রয়েছে বলে তিনি জানান।