
স্টাফ রিপোর্টার ॥
ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের মির্জাপুরে মাইক্রোবাসে ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে। জর্ডান প্রবাসীর মাইক্রোবাসে যাত্রীদের অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে। এ সময় গোড়াই হাইওয়ে থানার রেকার চালক তুহিন গুলিবিদ্ধ হয়। তাকে কুমুদিনী হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। ডাকাতরা প্রবাসী ও তাদের স্বজনদের কাছ থেকে নগদ টাকা, মোবাইল ফোন ও মালামাল ছিনিয়ে নিয়ে গেছে।
শুক্রবার (৩০ মে) দিনগত রাত আড়াইটার দিকে ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের মির্জাপুর উপজেলার পুষ্টকামুরী চরপাড়া বাইপাস এলাকায় এ ঘটনা ঘটেছে। গুলিবিদ্ধ রেকার চালকের সহকারী তুহিন মির্জাপুর উপজেলার মহেড়া ইউনিয়নের স্বল্প মহেড়া গ্রামের বাসিন্দা বলে জানা গেছে।
মাইক্রোবাসের যাত্রী বিউটি বেগম জানান, তিনি গত বুধবার (২৮ মে) জর্ডান থেকে দেশে ফিরে গাজীপুরের টঙ্গীতে আত্মীয়ের বাড়িতে উঠেন। পরে শুক্রবার (৩০ মে) রাতে মাইক্রোবাসে করে তার গ্রামের বাড়ি বগুড়ার উদ্দেশে রওনা হন। এক পর্যায়ে রাত আড়াইটার দিকে মির্জাপুর উপজেলার পুষ্টকামুরী চরপাড়া বাইপাস এলাকায় পৌঁছায়। এ সময় পিছন দিক থেকে আসা অপর এক মাইক্রোবাস তাদের গাড়ির গতিরোধ করে অস্ত্রের মুখে ডাকাতি করে।
মাইক্রোবাসের অপর যাত্রী সুমাইয়া আক্তার জানান, তার ননদ বিউটি আক্তার জর্ডানে থাকেন। তিনি জর্ডান থেকে টঙ্গিতে আত্মীয় বাড়ি থাকার পর শুক্রবার (৩০ মে) রাতে টঙ্গী থেকে একটি মাইক্রোবাস ভাড়া করেন। মাইক্রোবাসে তার ননদ বিউটি, সম্পা, শ্বশুর আব্দুল হামিদ ও তাদের শিশু সন্তান ছিল। রাত আড়াইটার দিকে তাদের মাইক্রোবাসটি মহাসড়কের মির্জাপুর উপজেলার পুষ্টকামুরী চরপাড়া নামক স্থানে এলে পেছন থেকে আসা একটি হায়েস মাইক্রোবাস তাদের মাইক্রোবাসের গতিরোধ করে। পরে সাত থেকে আটজন ডাকাত নেমে অস্ত্রের মুখে সবাইকে জিম্মি করে ফেলে। তাদের কাছে পিস্তল, ওয়াকিটকি, হ্যান্ডকাপ, বন্ধুক, চাপাতি, ছুরি, লাঠি ছিল। তারা সবাইকে জিম্মি করে পাঁচ-ছয়টি মোবাইল ফোন, নগদ ৭০ হাজার টাকাসহ তাদের মালামাল লুটে নেয়।
এ সময় চাপাতি ও পিস্তল বের করে তাদের সবকিছু ডাকাতি করতে থাকে। এ সময় পিছন দিক থেকে পুলিশের একটি রেকার গাড়ি যাচ্ছিলো। পরে ডাকাতির ঘটনা রেকার গাড়ির চালকের নজরে পড়লে তিনি গাড়ি থামিয়ে ডাকাতদের বাধা দেয়। এ সময় ডাকাতের গুলিতে ওই চালকের সঙ্গে থাকা সহকারী তুহিন গুলিবিদ্ধ হয়। এ সময় পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে ডাকাতরা তাদের মাইক্রোবাস ফেলে ওই প্রবাসী নারীর মোবাইলসহ অন্যান্য মালামাল নিয়ে পালিয়ে যায়।
জর্ডান প্রবাসী বিউটির শ্বশুর আব্দুল হামিদ ও সুমাইয়া অভিযোগ করে বলেন, তারা ভাড়া নেওয়া মাইক্রোবাসের চালক মুস্তাকিন ও হেলপার জুয়েলকে সন্দেহ করছেন। শুরু থেকেই তারা মাইক্রোবাসটি বিভিন্ন এলাকা দিয়ে তাদের ঘুরিয়েছেন।
এদিকে গুলিবিদ্ধ তুহিনকে মির্জাপুর কুমুদিনী হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। চিকিৎসাধীন গুলিবিদ্ধ তুহিন বলেন, ডাকাতরা কমপক্ষে ১০-১২ জন ছিল। তারা এলোপাতারি গুলি ছুঁড়েছে। গুলি তার হাতে লেগেছে।
এ বিষয়ে মির্জাপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) রাশেদুল ইসলাম বলেন, ডাকাতির খবর পেয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে ডাকাত দলের ফেলে যাওয়া একটি হায়েস জব্দ ও প্রবাসীদের বহনকারী মাইক্রোবাসটি উদ্ধার করা হয়েছে। এ ঘটনার সময় পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে ডাকাতরা তাদের গাড়ি রেখে পালিয়ে যায়। গুলিবিদ্ধ ওই রেকার (গাড়ি) চালকের সহকারী তুহিনকে উদ্ধার করে কুমুদিনী হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য ভর্তি করা হয়েছে। মাইক্রোবাসটি জব্দ করে থানায় নিয়ে আসা হয়েছে। মামলার প্রস্তুতি চলমান আছে।