
স্টাফ রিপোর্টার ॥
টাঙ্গাইল শহরের প্রাণকেন্দ্রে অবস্থিত মেজর জেনারেল মাহমুদুল হাসান আদর্শ কলেজের গভর্নিং বডির সভাপতি মনোনীত করা হয়েছে জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সহ-সভাপতি প্রয়াত আব্দুর রাজ্জাকের মেয়ের জামাতা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ নজরুল ইসলামকে। নজরুল ইসলামের পৈত্রিক বাড়ি কুমিল্লায়। এ নিয়ে টাঙ্গাইলের রাজনৈতিক, সামাজিক ও স্থানীয়দের মাঝে ব্যাপক আলোচনা ও সমালোচনার ঝড় বইছে। এক জেলার বাসিন্দা আরেক জেলা শহরের কলেজের সভাপতি কিভাবে হয় এ নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন সচেতন মহল।
কলেজ সূত্রে জানা যায়, গর্ভনিং বডি গঠনের জন্য অভিভাবক প্রতিনিধি, শিক্ষক প্রতিনিধি, হিতৈষী সদস্য, দাতা সদস্য ও প্রতিষ্ঠাতা সদস্য নির্বাচনের লক্ষ্যে গত (৩০ এপ্রিল) তফসীল ঘোষণা করা হয়। গত (৩০ এপ্রিল) থেকে (৫ মে) পর্যন্ত মনোনয়নপত্র বিতরণ করা হয়। গত (৬ মে) থেকে (৭ মে) পর্যন্ত মনোনয়নপত্র জমা নেয়া হয়। গত (৮ মে) মনোনয়নপত্র বাছাই করা হয়। গত (১২ মে) মনোনয়ন আপত্তি ও নিষ্পত্তি করা হয়। গত (১৩ মে) প্রার্থীতা প্রত্যাহার করা হয়। গত (১৪ মে) চুড়ান্ত প্রার্থী তালিকা ও প্রতীক বরাদ্দ দেয়া হয়। গত (১৮ মে) কলেজ প্রাঙ্গনে ভোটারদের ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়।
জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের কলেজ পরিদর্শক আব্দুল হাই সিদ্দিক সরকার গত (২৩ জুন) অধ্যাপক ড. মুহম্মদ নজরুল ইসলামকে সভাপতি ও শফিকুল ইসলামকে বিদ্যোৎসাহী সদস্য মনোনীত করে কলেজের অধ্যক্ষ বরাবর চিঠি প্রেরণ করেন।
জেলা ছাত্রদলের সদস্য সচিব এমএ বাতেন বলেন, যেহেতু কলেজটি টাঙ্গাইলের। সেই ক্ষেত্রে টাঙ্গাইলের কেউ যদি সভাপতি মনোনীত হতো তাহলে কলেজ, কলেজের শিক্ষক এবং শিক্ষার্থীদের স্বার্থে কাজ করতে পারতো।
টাঙ্গাইল জেলা বিএনপির সভাপতি ও কলেজের গর্ভনিংবডির সভাপতি প্রার্থী হাসানুজ্জামীল শাহীন বলেন, মাহমুদুল হাসান কলেজটি একটি টাঙ্গাইলের সুনামধন্য প্রতিষ্ঠান। যাকে মনোনীত করা হয়েছে, তার বাড়ি টাঙ্গাইলে না। তার শ্বশুড় বাড়ি টাঙ্গাইলে। তার শ্বশুর প্রয়াত আব্দুর রাজ্জাক ছিলেন জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সহ-সভাপতি। তিনি ভুল বুঝিয়ে, ক্ষমতার অপব্যবহার করে সভাপতি হয়েছেন। এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই। টাঙ্গাইল একটি বড় জেলা। সেই জেলা যদি ফ্যাসিস্ট সরকারের অনুসারীরা সভাপতি হয়, তাহলে বিষয়টি নিন্দনীয়।
তিনি আরও বলেন, নজরুল ইসলামকে সভাপতি বাতিল করে টাঙ্গাইলের বাসিন্দা যিনি কলেজ ও শিক্ষার্থীদের স্বার্থে কাজ করতে পারবেন, এমন ব্যক্তিকে সভাপতি করার আহ্বান জানাই। তিনি কলেজে আসলে জেলার মানুষ এ ঘটনার প্রতিবাদ জানাবে।
এ বিষয়ে মেজর জেনারেল মাহমুদুল হাসান আদর্শ কলেজের অধ্যক্ষ আমিনুল ইসলাম বলেন, অধ্যাপক নজরুল ইসলামকে আমরা চিনতাম না। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইতিপূর্বে দুই বার এডহক কমিটির সভাপতি মনোনীত করেছিলেন। এবার তিনি সভাপতি হলেও আমরা প্রতিষ্ঠান থেকে তার নাম প্রস্তাবনায় পাঠাই নাই। আমরা সভাপতি পদে তিন জন ও বিদ্যোৎসাহী সদস্য পদে তিন জনের নাম পাঠিয়েছিলাম।
জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের কলেজ পরিদর্শক মো. আব্দুল হাই সিদ্দিক সরকারের সাথে মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলে তাকে পাওয়া যায়নি।