
স্টাফ রিপোর্টার ॥
যমুনা, ধলেশ্বরী, লৌহজং ও ঝিনাই নদী টাঙ্গাইল জেলার প্রধান নদ নদী। আর এসব নদ নদীর পানি ক্রমাগত বাড়ছে। বঙ্গোপসাগরে নিম্নচাপের প্রভাবে বৃষ্টিপাত এবং উজান থেকে নেমে আসা পানির প্রবাহে জেলার অভ্যন্তরীণ নদ নদীগুলোর পানি বিপৎসীমার কাছাকাছি পৌঁছেছে। ফলে জেলার বিভিন্ন নিম্নাঞ্চলে পানি ঢুকতে শুরু করেছে।
টাঙ্গাইল পানি উন্নয়ন বোর্ডের সর্বশেষ মঙ্গলবার (১৫ জুলাই) সকালে হিসাব অনুযায়ী জানা যায়, গত পাঁচদিন ধরে জেলার নদ নদীগুলোতে পানি বাড়ছে। গত ২৪ ঘন্টায় যমুনা নদীতে ১২ সে.মি., ধলেশ্বরী নদীতে ৯ সে.মি. ও ঝিনাই নদীতে ১১ সে.মি. পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। প্রতিদিন গড়ে ৭ থেকে ১০ সেন্টিমিটার হারে পানি বাড়ছে।
এছাড়া বংশাই নদীর পানি মির্জাপুরের গোড়াই (বংশাই) ঘাট পয়েন্টে ১৭ সেণ্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়ে বিপৎসীমার ২ দশমিক ৪৮ সেণ্টিমিটার, কাউলজানী বাজার পয়েন্টে ১২ সেণ্টিমিটার বেড়ে বিপৎসীমার ৩ দশমিক ৩৯ পয়েন্ট, মধুপুরের শহীদ স্মৃতি স্কুল পয়েন্টে ৪০ সেণ্টিমিটার বেড়ে বিপৎসীমার ৩ দশমিক ৬৭ সেণ্টিমিটার, ফটিকজানী নদীর পানি নলছোপা ব্রিজ পয়েন্টে ২১ সেণ্টিমিটার বেড়ে বিপৎসীমার ৪ দশমিক ১৭ সেণ্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। জেলার অভ্যন্তরীণ ঝিনাই, লৌহজং, বৈরাণ, এলেংজানী, লাংগুলিয়া নদ নদীগুলোতেও একই ধরনের পরিস্থিতি লক্ষ্য করা গেছে।
টাঙ্গাইল সদর উপজেলার কাকুয়া, হুগড়া ইউনিয়ন, গোপালপুর উপজেলার নগদা শিমলা ও হাদিরা ইউনিয়ন, ভূঞাপুর উপজেলার গাবসারা, অর্জুনা, গোবিন্দাসী ইউনিয়ন, কালিহাতী উপজেলার গোহালিয়াবাড়ী, সল্লা এবং নাগরপুর উপজেলার চরাঞ্চলের বহু নিচু এলাকায় ইতোমধ্যে পানি ঢুকতে শুরু করেছে। পানি বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে নদী ভাঙনও শুরু হয়েছে। নাগরপুর ও ভূঞাপুরের বেশ কিছু এলাকায় নদীর্তীর ভেঙে ফসলি জমি ও বসতবাড়ি হুমকির মুখে পড়েছে। স্থানীয়দের অভিযোগ, বাঁধ মেরামত বা নদীর্তীর রক্ষা প্রকল্পে নজর না থাকায় প্রতিবছর একই পরিস্থিতির মুখে পড়তে হয়।
টাঙ্গাইল পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মতিউর রহমান জানান, জেলার নদ নদীগুলোতে বর্তমানে পানি বৃদ্ধির যে ধরণ দেখা যাচ্ছে- তাতে বন্যা হওয়ার আশঙ্কা নেই। এ পানি কমে যাবে এবং দ্বিতীয় পর্যায়ে আবার বর্ষার পানি বাড়বে। তখন বন্যার আশঙ্কা সৃষ্টি হলে জনসাধারণকে সতর্কবার্তা দেওয়া হবে। তিনি আরও জানান, নদী ভাঙনরোধে জরুরি ব্যবস্থা হিসেবে সব ধরনের লজিস্টিক সাপোর্ট তাদের রয়েছে। মাঠ পর্যায়ে নদ নদীগুলোর খোঁজখবর নিয়মিত রাখাসহ পানি বৃদ্ধি মনিটরিং করা হচ্ছে।