
স্টাফ রিপোর্টার ॥
মাভাবিপ্রবি এর ভাইস-চ্যান্সেলর অধ্যাপক ড. আনোয়ারুল আজীম আখন্দ বলেন, আজকের এই আয়োজনে উপস্থিত থাকতে পেওে আমি গর্বিত ও আবেগাপ্লুত। জুলাই গণ-অভ্যুত্থান আমাদের ইতিহাসে এক অবিস্মরণীয় অধ্যায়। যেখানে বাংলার মাটি আবারও সাক্ষী হয়েছিল তরুণ শিক্ষার্থী ও জনগণের অনমনীয় প্রতিরোধ ও আত্নত্যাগের। আমরা আজ গভীর শ্রদ্ধায় স্মরণ করছি সেই সব শহীদদের, যারা এক অন্যায়-অবিচার আর দমন-পীড়নের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে গিয়ে জীবন বিসর্জন দিয়েছেন। তাঁদের আত্মত্যাগ আজও আমাদের জাতীয় বিবেককে নাড়া দেয়। আমাদের দায়িত্বশীলতা স্মরণ করিয়ে দেয়।
জুলাই শহীদ দিবস উপলক্ষ্যে টাঙ্গাইল মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে আলোচনা সভা বুধবার (১৬ জুলাই) দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক ভবনের সেমিনার হলে অনুষ্ঠিত হয়েছে। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস-চ্যান্সেলর অধ্যাপক ড. আনোয়ারুল আজীম আখন্দ একথা বলেন।
প্রধান অতিথি আরও বলেন, শিক্ষাঙ্গন সবসময়ই ছিল প্রতিবাদ-প্রতিরোধ আর মুক্তচিন্তার উৎস ভূমি। আমাদের তরুণরাই বারবার প্রমাণ করেছে, অন্যায়ের কাছে মাথানত নয়-বরং সত্য ও ন্যায়ের পক্ষে সোচ্চার হওয়াই তাদের চেতনা। সেই আন্দোলনে আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদেরও বলিষ্ঠ ভূমিকা ছিল, যা আমাদের গৌরবময় ইতিহাসের অংশ। আমরা তাঁদের স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করছি। আজকের এই আলোচনা সভা যেন শুধু অতীত স্মরণের একটি আনুষ্ঠানিকতা না হয়। বরং তা হোক একটি আত্ম-সমালোচনার উপলক্ষ। যেখানে আমরা ভাববো, আমাদের অবস্থান কোথায়? আমরা কি সত্যিই শহীদদের আদর্শকে বুকে ধারণ করছি? আমরা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন হিসেবে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ। একটি মুক্ত ও চিন্তাশীল শিক্ষার পরিবেশ গড়ে তুলতে, যেখানে মুক্ত মত প্রকাশ ও মানবিক মূল্যবোধ চর্চার সুযোগ থাকবে।
আলোচনা সভায় মুখ্য আলোচক ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থ বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. কামরুল হাসান মামুন। বিশেষ অতিথি ছিলেন জুলাই শহীদ মারুফের মা মোর্শেদা বেগম। স্বাগত বক্তব্য রাখেন বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিসংখ্যান বিভাগের অধ্যাপক ও জুলাই গণঅভ্যুত্থান স্মরণ উদযাপন কমিটির সদস্য সচিব অধ্যাপক ড. দেলোয়ার জাহান মলয়। এতে সভাপতিত্ব করেন শিক্ষার্থী কল্যাণ ও পরামর্শদান কেন্দ্রের পরিচালক ও উদযাপন কমিটির আহবায়ক অধ্যাপক ড. ফজলুল করিম।
এছাড়া বক্তব্য রাখেন ইঞ্জিনিয়ারিং অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মতিউর রহমান, বায়োটেকনোলজি এন্ড জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. এ.কে.এম. মহিউদ্দিন, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. ইমাম হোসেন।
আন্দোলনকারী ও আহত শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে মনিরুল ইসলাম ও আশরাফুল আলম হৃদয় বক্তব্য রাখেন। আলোচনা সভা শেষে শহীদের মায়ের হাতে সম্মাননা স্মারক তুলে দেয়া হয়। আলোচনা সভায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী, শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারিবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।