
স্টাফ রিপোর্টার, মির্জাপুর ॥
টাঙ্গাইলের মির্জাপুরে সরকারি রাস্তার জমি দখলমুক্ত করতে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ করেছে এলাকাবাসী। গত রবিবার (১৩ জুলাই) বিকেলে উপজেলার গোড়াই ইউনিয়নের পথহারা গ্রামের মধ্যপাড়ায় এই মানববন্ধন ও বিক্ষোভ করেন এলাকাবাসী। গোড়াই ইউপি হতে ওই রাস্তাটিতে মাটি ভরাটের জন্য এক লাখ ২০ হাজার টাকার বরাদ্ধ দেয়া হলেও পাকা ভবন থাকায় মাটি ভরাট বন্ধ রয়েছে বলে ইউপি সদস্য আলাল উদ্দিন জানিয়েছেন।
জানা গেছে, পথহারা গ্রামের মধ্যপাড়ার আক্কাছ মিয়ার বাড়ি হতে মালেকের বাড়ি পর্যন্ত প্রায় ৭০০ ফুট দৈর্ঘের একটি সরকারি রাস্তা রয়েছে। রাস্তাটি ১৫ থেকে ৪৫ ফুট প্রশস্ত। এই রাস্তা দিয়ে গ্রামের প্রায় ৩০টি পরিবার নিয়মিত চলাচল করে থাকে। এছাড়া গ্রামের লোকজন মধ্যপাড়ার কৃষি জমিতে আবাদকৃত ফসল ওই রাস্তা ব্যবহার করে বাড়িতে আনেন। গত প্রায় তিন বছর আগে গ্রামের বাসিন্দা জলিল মিয়ার ছেলে রওশন আলী আওয়ামী লীগের প্রভাব বিস্তার করে রাস্তার জমি দখল করে একতলা পাকা ভবন এবং জাহির উদ্দিন বাড়ি নির্মাণ করেন।
ভবন নির্মাণের শুরুতে গ্রামের লোকজন উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভূমি), মির্জাপুর থানা ও গোড়াই ইপি চেয়ারম্যানের কাছে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। তখন ইউপি চেয়ারম্যান হুমায়ুন কবীর সরজমিন গিয়ে ভবন নির্মাণ কাজ বন্ধ রাখার নির্দেশ দিয়েছিলেন বলে এলাকার লোকজন জানান। ইউপি চেয়ারম্যানের নির্দেশ অমান্য করেই রওশন আলী চালাচলের রাস্তা দখল করে একতলা ভবন নির্মাণ করেন। এতে পথহারা মধ্যপাড়া গ্রামের প্রায় ৩০ টি পরিবারের চলাচলে মারাত্নভাবে বিঘ্নিত হচ্ছে।
রাস্তার জমি দখলমুক্ত করতে গত রবিবার (১৩ জুলাই) বিকেলে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ করেন এলাকাবাসী। সম্প্রতি গোড়াই ইউপি হতে রাস্তাটি মাটি ভরাটের জন্য এক লাখ ২০ হাজার টাকার বরাদ্ধ দেয়া হয়। রাস্তার উপর পাকা ভবন থাকায় মাটি ভরাট বন্ধ রয়েছে বলে ইউপি সদস্য আলাল উদ্দিনসহ এলাকার লোকজন অভিযোগ করেছেন।
গত রবিবার (১৩ জুলাই) বিকেলে উপজেলার গোড়াই ইউনিয়নের পথহারা গ্রামের মধ্যপাড়ার নারী-পুরুষ ওই রাস্তার উপর দাঁড়িয়ে দখলমুক্ত করতে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ করেছেন।
গ্রামের বাসিন্দা সাদেক সিকদার জানান, আমার ভাতিজা রাস্তার কিছু জমি দখল করে পাকা ভবন নির্মাণ করেছেন সত্য কথা। মোকাদ্দেছ আলী বলেন, আবাদী জমিতে চলাচলের জন্য গ্রামের একমাত্র রাস্তা এটি। এই রাস্তার কোথাও ১৫ ফুট আবার কোথাও ৪২ ফুট পাশ রয়েছে। রাস্তার জমি দখল করে রওশন আলী পাকা ভবন এবং জাহির উদ্দিন বাড়ি নির্মাণ করায় চলাচলের অসুবিধা হচ্ছে। রাস্তাটি উদ্ধারের জন্য গ্রামের নারী-পুরুষ দলবেঁধে একাধিকবার ইউএনও, এসিল্যান্ড ও থানায় গিয়েছেন বলে তিনি জানান।
গ্রামের নাছিমা বেগম, ভানু বেগম ও আলমগীর হোসেন বলেন, গ্রামের লোকজনের অভিযোগ পেয়ে ইউপি চেয়ারম্যান হুমায়ুন কবীর ঘটনাস্থলে এসে ভবন নির্মাণ করতে নিষেধ করেন। তার নিষেধ অমান্য করেই আওয়ামী লীগের প্রভাব বিস্তার করে ভবন নিমাণ করেছেন। আমরা গ্রামবাসী সরকারি রাস্তা দখলমুক্ত চাই। অভিযুক্ত রওশন আলী বলেন, আমার ভবনটির ভেতরে রাস্তার চারফুট জমি রয়েছে। রাস্তার দক্ষিণপাশে পুকুরে আমার জমি রয়েছে। সেখান থেকে রাস্তার জন্য জমি ছেড়ে দিতে রাজি।
এ বিষয়ে মির্জাপুর উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভূমি) মাসুদুর রহমান এলাকার লোকজনের কাছ থেকে অভিযোগ পাওয়ার কথা স্বীকার করে বলেন, আইনগত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।