
হাবিবুর রহমান, মধুপুর ॥
টাঙ্গাইলের মধুপুরে একই দিনে ইউক্যালিপটাস ও আকাশমনি গাছের চারা নিধন করেছে প্রশাসন। অপরদিকে, দেশি প্রজাতি গাছের চারা রোপনও করা হয়েছে। টাঙ্গাইল-ময়মনসিংহ মহাসড়কের বৃত্তিবাড়ি থেকে কাকরাইদ ব্রীজ পর্যন্ত বিভিন্ন দেশি জাতের ফুল ফল ও শোভাবর্ধনকারি গাছের চারা রোপন করে মধুপুর উপজেলা প্রশাসন ও কৃষি বিভাগ। তবে এ কার্যক্রমে সরকারের কাছে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকরা তাদের ক্ষতিপূরণ বা প্রণোদনার দাবি জানিয়েছে। বীজ রোপনের আগে ইউক্যালিপটাস ও আকাশমনি নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হলে কৃষকরা এ প্রজাতির চারা উৎপাদন করতো বলেও জানায়।
বুধবার (১৭ জুলাই) সকালে মধুপুর পৌরসভার বৃত্তিবাড়ি এলাকায় দেশি প্রজাতির গাছের চারা রোপন কার্যক্রমের উদ্বোধন করে মধুপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার জুবায়ের হোসেন। এ সময় উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা রকিব আল রানা, কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তাএস এম খায়রুল আলম, নার্সারি উন্নয়ন সংস্থার সভাপতি আলমগীর হোসেন, সাধারণ সম্পাদক আবু হানিফ, উদ্ভিদ উদ্যানের মিজানুর রহমান, উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা আবু বাছেদ, রাজু আহমেদ, শাহীনুল ইসলামসহ নার্সারি ব্যবসায়ী, কৃষি বিভাগের কর্মকর্তা কর্মচারী, গণমাধ্যমকর্মীসহ বিভিন্ন শ্রেনী পেশার প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।
পরে একই দিনেই দুপুরে গোলাবাড়ি ইউনিয়নের হাসনই গ্রামে গিয়ে সরকার নিষিদ্ধ ইউক্যালিপটাস প্রজাতির চারা নিধন কার্যক্রম করেছে। সড়কে ভ্যানে রাখা নিষিদ্ধ জাতের চারা পেয়ে কুপিয়ে নিধন করা হয়। পরে কয়েকটি নার্সারিতে উপজেলা নির্বাহী অফিসার জুবায়ের হোসেন এ নিধন কার্যক্রমের উদ্বোধন করে। পরে কৃষি বিভাগ ও নার্সারির চারা উৎপাদনকারিরা মিলে বাগি দিয়ে কুপানোর মধ্যে দিয়ে নিধন কার্যক্রমে অংশ নেয়। এ সময় স্থানীয় লোকজন নারী-পুরুষ ও উৎসুক জনতার ভীড় জমে যায়।
মধুপুর উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, ইউক্যারিপটাস ও আকাশমনি প্রজাতির গাছ পরিবেশ বিদ্বেষী। এসব গাছে পাতা ফুল ফল পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর। এজন্য সম্প্রতি সরকার এ উভয় প্রজাতির গাছের চারা উৎপাদন ক্রয় বিপনন পরিবহন নিষিদ্ধ করেছে। এ কার্যক্রমের সারাদেশে সরকারি নির্দেশনা মোতাবেক অভিযান চলছে। এরই অংশ হিসেবে গত এক সপ্তাহ ধরে বিভিন্ন হাট-বাজার ও নার্সারিতে অভিযান ও ধ্বংস কার্যক্রম চলমান রয়েছে।
এ বিষয়ে মধুপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ রকিব আল রানা বলেন, সরকার ইউক্যালিপটাস ও আকাশমনি গাছের চারা ক্রয় বিক্রয় পরিবহন রোপন নিষিদ্ধ করেছে। সরকারের নির্দেশনা মোতাবেক তারা এ দুই জাতের চারা ধ্বংস কার্যক্রম ও অভিযান চালিয়ে যাচ্ছে।
এ কার্যক্রমে সকলের সহযোগিতা পেলে ইউক্যালিপটাস ও আকাশমনি গাছের চারা উৎপাদন ক্রয় বিক্রয় শূন্যের কোটায় নিয়ে সম্ভব বলে তিনি আশা ব্যক্ত করেন। এ কার্যক্রমে তিনি সকলের সহযোগিতা কামনা করেন।
এ ব্যাপারে মধুপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার জুবায়ের হোসেন বলেন, নিষিদ্ধ আকাশমনি ও ইউক্যালিপটাস জাতের ৮০ হাজার গাছের চারা প্রথম দিন কৃষি মেলায় ধ্বংস করা হয় । এই কার্যক্রমের অংশ হিসেবে উপজেলার বিভিন্ন হাটবাজার ও নার্সারিতে অভিযান চলমান রয়েছে।