
স্টাফ রিপোর্টার ॥
টাঙ্গাইলের ধনবাড়ী উপজেলার পাইস্কা ইউনিয়নের প্যারিআটা গ্রামে গৃহবধূ মুন্নী বেগমের (৩৮) ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। স্বজনদের দাবী হত্যা করে তাকে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে রাখা হয়েছে। বুধবার (৩০ জুলাই) দুপুরে নিহত গৃহবধূ নিজ বাড়ীর থাকার ঘরের বারান্দার আড়া’র সাথে ছাগলের লাইলনের রশি দিয়ে গলায় ফাঁসি দিয়ে ঝুলে আত্মহত্যা করেন। খবর পেয়ে পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসে।
নিহত গৃহবধূ মুন্নী বেগমের বড় ভাই বাবু মিয়া অভিযোগ করে জানান, বুধবার (৩০ জুলাই) সকালে আমার বোন জামাই মাসুদ রানা আমাকে মোবাইল করে জানায়, মুন্নী আত্মহত্যা করতে পারে। পরে আবার মাসুদ ফোন করে বলে আপনার বোন মুন্নী গলায় ফাঁস দিয়ে ঝুলে আত্মহত্যা করেছে। আমি ও আমার পরিবারের লোকজন দ্রুত ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখতে পাই মুন্নী গলার উপরিভাগে দাঁতের নিচের পাটির থোতা’র নিচে রশি আটকে আছে, পায়ের নিচে প্লাস্টিকের চেয়ার লেগে আছে। আমাদের সন্দেহ মুন্নীকে বালিশ চাপা দিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে মাসুদ ও তার পরিবারের লোকজন বাঁচার জন্য ফাঁসিতে ঝুলিয়ে রেখে আত্মহত্যা বলে চালিয়ে দিচ্ছে। মাঝে মধ্যেই মাসুদ মুন্নীর সাথে ঝগড়া করতো। এ ঘটনায় মামলা দায়েরের প্রস্তুতি নিচ্ছি। আমরা চাই মুন্নীর মরদেহ ময়নাতদন্ত করে হত্যাকারীদের গ্রেপ্তার করে সঠিক বিচার দাবী করছি।
নিহত গৃহবধূ মুন্নী বেগমের মেয়ে আয়েশা কান্না জড়িত কণ্ঠে জানায়, আমার মা ভালো মানুষ ছিলো, সে আত্মহত্যা করার মত মানুষ না। এ ঘটনা তদন্তু করে যদি তার মৃত্যুর পিছনে কেউ থাকে, তাহলে তাকে পুলিশ গ্রেপ্তার করে বিচারের দাবী করছি। নিহত গৃহবধূর স্বামী মাসুদ রানার সাথে কথা বলতে চাইলে প্রথমে তিনি অস্বীকৃতি জানালেও পরে তিনি জানান, মুন্নী বিগত ৬ বছর আগে বিদুতে শর্ট খাওয়ার পরে মাথায় সমস্যা হয়েছিলো। আমি বাড়ীতে ছিলাম না, খবর পেয়ে বাড়ীতে এসে দেখি ফাঁস দিয়ে মরে গেছে বলে তিনি আর কোন মন্তব্য করেনি।
নিহত গৃহবধূ মুন্নী পাশের জামালপুর জেলার সরিষাবাড়ী উপজেলার ডোয়াইল চর এলাকার মৃত আ: আজিজের মেয়ে। বিগত ২৫ বছর পূর্বে টাঙ্গাইল জেলার ধনবাড়ী উপজেলার পাইস্কা ইউনিয়নের প্যারি আটা গ্রামের মৃত আবুল হোসেন পুলিশের ছেলে আটো চালক মাসুদ রানার সাথে বিয়ে হয়। সংসার জীবনে তাদের ঘরে ৩ কন্যা সন্তান রয়েছে।
এ বিষয়ে ধনবাড়ী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) এসএম শহিদুল্লাহ জানান, খবর পাওয়া মাত্রই মরদেহ উদ্ধার করে থানায় আনা হয়েছে। নিহতের শরীরে কোন প্রকার দাগের চিহ্ন নেই। মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহ টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। নিহতের বাবার বাড়ীর লোকজন থানায় এসেছে, তারা অভিযোগ দেয়া মাত্রই দ্রুত আইনগত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।