স্টাফ রিপোর্টার ॥
টাঙ্গাইলে এক মাছ ব্যবসায়ীকে কিলার গ্যাংয়ের প্যাডে (হত্যাকারী দল) একটি চিঠি দিয়ে ৫ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেছে। চিঠিটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হওয়ায় এলাকাজুড়ে ব্যবসায়ীদের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে। শুক্রবার (১ আগস্ট) সকালে ওই চিঠিটি হাতে পান মাছ ব্যবসায়ী আজাহারুল ইসলাম।
এর আগে বৃহস্পতিবার (৩১ জুলাই) রাতে উপজেলার পৌর এলাকার সন্তোষে মাছ ব্যবসায়ী আজাহারুল ইসলামের কর্মচারীর হাতে অচেনা একজন এ চিঠিটি দিয়ে যান। সেই চিঠি শুক্রবার (১ আগস্ট) সকালে হাতে পান আজাহারুল।
চিঠিতে লেখা রয়েছে, চিঠি পাওয়ার পর তুই যদি বিষয়টি নিয়ে কারও সঙ্গে শেয়ার করস বা আইনি প্রক্রিয়ায় যাস তাহলে তোকে কবর দেওয়ার জন্য তোর লাশ পরিবার খুঁজে না পাওয়ার ব্যবস্থা আমরা করব। চিঠিতে আরও উল্লেখ করা হয়, মনে রাখবি প্রশাসন তোর সঙ্গে সবসময় থাকবে না। আর বাঁচতে পারবি না। তোর সঠিক বুদ্ধিমত্তার সিদ্ধান্ত তুইসহ তোর পরিবার সুরক্ষিত থাকবে।
এছাড়াও চিঠিতে লেখা আছে- দীর্ঘদিন ধরে মাছ ব্যবসা করে যাচ্ছিস। এতে তোর কোনো প্রতিদ্বন্দ্বী নাই। দাবিকৃত ৫ লাখ টাকা তোর কাছে কিছু না। তাই আগামী আগস্টের ৩ তারিখ রোববার সন্ধ্যা ৭টার সময় একটি শপিং ব্যাগে করে কাগমারী মাহমুদুল হাসানের বাসার সামনে একটি গাছে ফরহাদের ছবি লাগানো আছে সেই গাছের নিচে রেখে যাবি।
সন্তোষ বাজার কমিটির আহ্বায়ক জুবায়ের হোসেন বলেন, মাছ ব্যবসায়ী আজাহার ভাই একজন সৎ মানুষ। তিনি দীর্ঘদিন ধরে মাছ ব্যবসার সঙ্গে জড়িত। হঠাৎ করে শুক্রবার (১ আগস্ট) সকালে শুনতে পেলাম তার কাছে একটি চিঠি এসেছে। সে চিঠিতে ৫ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেছে। তিনি আরও বলেন, এ ধরনের ঘটনা আমাদের সন্তোষ এলাকায় দেশ স্বাধীন হওয়ার পর এ পর্যন্ত শুনতে পাইনি। এ চিঠিতে ব্যবসায়ীমহলে এক ধরনের আতঙ্ক কাজ করছে।
আতঙ্কিত মাছ ব্যবসায়ী আজাহারুল ইসলাম বলেন, আমার কর্মচারী নিশা একজন অশিক্ষিত লোক। তিনি দীর্ঘদিন ধরে আমার কাছে থাকে। বৃহস্পতিবার (৩১ জুলাই) রাতে অচেনা এক লোক তাকে একটি চিঠি দেয়। তিনি সে চিঠি পরের দিন শুক্রবার (১ আগস্ট) সকালে আমার হাতে দেন। এ সময় কর্মচারী নিশা বলেন, একটি ক্লাব থেকে আপনাকে এই চিঠি দিয়ে গেছে।
আজাহার আরও বলেন, চিঠি খুলে দেখার পর আমার ভেতর ভয় কাজ করছে। সেই সঙ্গে আমার পরিবার আতঙ্কে রয়েছে। এ বিষয়ে সন্তোষ পুলিশ ফাঁড়িতে অফিসার ইনচার্জকে মৌখিকভাবে জানানো হয়েছে। তিনি ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলেছেন। রাতে সদর থানায় লিখিতভাবে অভিযোগ দায়ের করব।
এ বিষয়ে টাঙ্গাইলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) এইচএম মাহবুব রেজওয়ান সিদ্দিকী বলেন, বিষয়টি আমি অবগত হয়েছি। সদর থানার ওসি তানভীরের সঙ্গে কথা হয়েছে। তাকে ইনস্ট্রাকশন দেওয়া হয়েছে। আমরা দ্রুত তদন্তের কাজ শুরু করে দিয়েছি। এ ধরনের সংবাদ টাঙ্গাইলে এর আগে পাইনি। তাই বিষয়টি খুব গভীরভাবে খতিয়ে দেখা হচ্ছে।