
স্টাফ রিপোর্টার ॥
টাঙ্গাইলের মধুপুরে জোর করে এক স্কুলের প্রধান শিক্ষকের চেয়ার ছিনিয়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে ‘বিএনপি নেতার’ ভাইয়ের বিরুদ্ধে। মধুপুর রানী ভবানী মডেল সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ে মঙ্গলবার এ ঘটনা ঘটে। ঘটনার একটি ভিডিও এরই মধ্যে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে।
এ ঘটনার প্রতিবাদে বুধবার (৬ আগস্ট) স্কুলের শিক্ষার্থীরা টাঙ্গাইল-১ (মধুপুর-ধনবাড়ী) আসনে বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাশী অবসরপ্রাপ্ত কর্নেল আসাদুল ইসলাম আজাদের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ মিছিল করেছে। শিক্ষার্থীরা ২৪ ঘণ্টার মধ্যে এ ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের আইনের আওতায় আনার দাবি জানান।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, মঙ্গলবার (৫ আগস্ট) জুলাই গণঅভ্যুত্থান দিবস উপলক্ষে আসাদুল ইসলাম আজাদের সমর্থক বিএনপি নেতাকর্মীরা জড়ো হন। একপর্যায়ে আজাদের উপস্থিতিতে তার বড় ভাই আশরাফ মাসুদের নেতৃত্বে মধুপুর রাণী ভাবাণী মডেল সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের কক্ষে যান। তখন আশরাফ মাসুদ জোরপূর্বক প্রধান শিক্ষকের চেয়ার নিয়ে যান। এর প্রতিবাদ করলে প্রধান শিক্ষকের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করা হয় এবং তাকে চাকরিচ্যুত করার হুমকি দেওয়া হয়।
মধুপুর রানী ভবানী মডেল সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুল বাছেদ বলেন, জুলাই গণঅভ্যুত্থান দিবস উপলক্ষে বিএনপির নেতাকর্মীরা আমাদের স্কুলে সমবেত হয়। অবসরপ্রাপ্ত কর্নেল আজাদের জন্য তার ভাই আমার (প্রধান শিক্ষকের) চেয়ার চান। তখন আমি বলি, আমি তো আর কর্নেল আজাদকে চিনি না। তারপর আমার অজান্তে প্রধান শিক্ষকের চেয়ার নিয়ে নেয়। এবং আমার সঙ্গে দুর্ব্যবহার করে চাকরিচ্যুত করার হুমকি দেয়। পরে আমি বিষয়টি মধুপুর থানার ওসিকে অবহিত করি।
এ ব্যাপারে জানতে বৃহস্পতিবার (৭ আগস্ট) দুপুরে অবসরপ্রাপ্ত কর্নেল আজাদের ব্যবহৃত মোবাইল ফোনে একাধিবার কল দিলেও সেটি বন্ধ পাওয়া যায়।
টাঙ্গাইল জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ফরহাদ ইকবাল বলেন, ঘটনাটি আমি শুনেছি। রানী ভবানী স্কুলের প্রধান শিক্ষকের চেয়ার ছিনিয়ে নেওয়ার মতো একটি ন্যক্কারজনক ঘটনা ঘটেছে। আমরা দলীয়ভাবে এ ধরনের কর্মকাণ্ড কখনই সমর্থন করি না। জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আরও জানান, অবসরপ্রাপ্ত কর্নেল আজাদের দলীয় কোনো পদ-পদবি নেই।
এ বিষয়ে মধুপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এমরানুল কবির বলেন, প্রধান শিক্ষকের অভিযোগের পর আমি অবসরপ্রাপ্ত কর্নেল আজাদ সাহেবের সঙ্গে কথা বলি। উভয় পক্ষকে শান্ত থাকার আহ্বান জানিয়েছি। আগামী শনিবার (৯ আগস্ট) উভয় পক্ষকে নিয়ে বসার মাধ্যমে একটি সুন্দর সমাধানের আহ্বান জানাই। এতে তারা সম্মতি জানিয়েছেন।